গরিবের হাসপাতালে সহস্রতম শিশুর জন্ম এক হাজার প্রসবের দৃষ্টান্ত
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ‘গরিবের হাসপাতাল’ হিসেবে পরিচিত ভোগতেরা কমিউনিটি ক্লিনিক সহস্রতম স্বাভাবিক প্রসবের রেকর্ড গড়েছে। আর এখানে জন্ম নেয়া সহস্রতম শিশুর নাম রাখা হয়েছে সহস্র। কমিউনিটি ক্লিনিকটিতে এক হাজার জন নারীর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন নারী যমজ সন্তান প্রসব করেছেন। গ্রামের ভেতরের ছোট্ট এই কমিউনিটি ক্লিনিকে ৯ বছর ধরে বিনা খরচে স্বাভাবিক প্রসব কার্যক্রম চলছে। স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, স্বাভাবিক প্রসবে সিলেট বিভাগে ক্লিনিকটি প্রথম স্থানে রয়েছে।
কুমিল্লা জেলার চৌদ্দ গ্রামের কুলিয়ারা গ্রামের গৃহবধ খাদিজা আক্তার। বাবার বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিন শাহবাজপুর ইউনিয়নের চান্দেগোল গ্রামে। স্বামী থাকেন মধ্য প্রাচ্যে। তিনি সন্তান সম্ভবা হওয়ার পর জানতে পারেন ভোগতেরা কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনা খরচে ভালো ডেলিভারী ( সন্তান প্রসব) হয়। পরিবার ও স্বজনের সাথে আলোচনা করে চলে আসেন বাবার বাড়ি। কিøনিকে প্রথম দফায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ২য় দফায় সেখানে জন্ম নেয় তার একটি পুত্র সন্তান। আর তার সন্তানটি ছিলো ওই ক্লিনিকের সহস্ররতম, তাই তার নাম রাখা হয় সহস্র। খাদিজার মতো অনান্য মায়েরাও এখানে সন্তান প্রসব করিয়ে খুশি।
৯বছর আগে ছোট এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি প্রতিষ্টার কিছুদিন পর স্থানীয় একজন প্রসবকর্মী জুলেখা বেগম শুরু করেন স্বেচ্ছাশ্রমে ডেলিভারীর কাজ। ২৫২টি ডেলিভারী সম্পন্ন করে তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে চলে যান। এর পর এর দায়িত্ব নিয়ে বেসরকারী প্রসবকমীর্ লিপা খানম এখন পর্যন্ত ৭৫১ টি সহ এক হাজার ৩টি স্বাভাবিক প্রসব করিয়েছেন। যারমধ্যে ছেলে ৪৬৯ ও মেয়ে ৫৪১ জন। এরমধ্যে জমজ হয়েছে ৭টি। এখানে শুধু বিনামুল্যে ডেলিভারী নিয়ন্ত্রনাধিন কোনজটিল ডেলিভারী রোগী হলে মৌলভীবাজার সদরে যাওয়ার জন্য সাপোর্ট গ্রুপের মাধ্যমে আর্থিক সহাতাও করা হয়।
এটি পরিচালনায় থাকা সাপোর্ট গ্রুপের সভাপতি ও স্থানীয়রা জানান, এখানে দিন রাত পরিশ্রম লিপা খানমের জন্য সরকারী ভাবে কিছু সম্মানীর ব্যবস্থা সহ ডেলিভারী রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ঔষধ মজুদ রাখার।
আর জুড়ি উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের এ অধি কর্তা জানালেন এ ক্লিনিক সরকারের এমডিজি বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখেছে এবং ২০৩০ সালে এসডিজির লক্ষ মাত্রায়ও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এই ক্লিনিকটিকে মডেল হিসবে নিয়ে সারা দেশের সকল ক্লিনিক গুলোকেও সরকার কাজে লাগাতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
মন্তব্য করুন