গোলাপগঞ্জে স্বামীর পরকিয়ার বলি বড়লেখায় জনির পিত্রালয়ে শোকের মাতম
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের সজল কান্ত দাশ ও শেলি রাণী দাশ দম্পতির আদরের কন্যা জনি রাণী দাশ। বসন্তে দেখে শুনে বাবা-মা গোলাপগঞ্জে পাত্রস্থ করেন জনিকে। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই স্বামীর পরকিয়ার বলি হয়ে জনি পিত্রালয়ে ফিরলো লাশ হয়ে।
৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে জনির লাশ নিয়ে আসা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশির কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
জানা গেছে, প্রায় ১ বছর পুর্বে গোলাপগঞ্জ উপজেলার আলমপুর গ্রামের রমা কান্ত দে’র ছেলে বঙ্গেশ দে’র সাথে জনি রাণী দাশের বিয়ে হয়। চোখে মুখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে স্বামীর ঘরে গেলেও জনির সে সপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। বিয়ের পর থেকে স্বামী বঙ্গেশ পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এর জের ধরে স্বামী জনিকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। অবশেষে পাষন্ড স্বামী বঙ্গেস তাকে খুন করে অজ্ঞাত স্থানে লাশ ফেলে দেয়। গোলাপগঞ্জ থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ জনি রাণী দাশের গলিত লাশ অবশেষে নিখোঁজের ৮দিন পর বৃহস্পতিবার ফেঞ্চুগঞ্জের পশ্চিমবাজারের স্থানীয় খেয়াঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়।
২৭ জানুয়ারী শুক্রবার আকস্মিকভাবে নিখোজ হন গৃহবধু জনি রাণী দাশ। রহস্যজন নিখোজের ঘটনায় পুলিশ জনি রাণী দাশের স্বামী বঙ্গেস দে ও জ্যা শিল্পী রাণী দে’কে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে শিল্পী রাণী দেবর বঙ্গেস এ ঘটনার জন্য দায়ী বলে পুলিশকে জানায়। ঘটনার ৩দিন পর রোববার স্থানীয় কুশিয়ারা নদীতে এক নারীর মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে আর নদীতে ভাসা লাশ পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন থেকে নিখোঁজ জনি স্বামী বঙ্গেশ দাসের সাথে তার বড়ভাই কৃষ্ণ চন্দ্র দে’র স্ত্রী শিল্পী রাণী দে’র প্রণয় চলে আসছিল। এ কারণে জনি ও বঙ্গেসের মধ্যে পারিবারিক বিবাদ লেগেই থাকতো। এরমধ্যে আকস্মিক নিখোঁজ হন জনি রাণী দে। সোমবার রাতে নিখোঁজ জনি রাণী দাশের বাবা সজল কান্ত দাশ হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে থানায় মামলা (নং ১৯/২০১৭) করেন। এরপর পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিল নিখোজ জনি রাণীকে। অবশেষে বৃহস্পতিবার স্থানীয় ফেঞ্চুগঞ্জ পঞ্চিমবাজারের খেয়াঘাট থেকে স্থানীয় পুলিশ জনির লাশ উদ্ধার করে। পরে জনির অভিভাবকরা লাশটি জনির বলে সনাক্ত করেন।
গোলাপগঞ্জ থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলি জানান, ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে নিহত জনির লাশ তার বাবা সজল কান্ত দাশের নিকট হস্তান্তর করেছেন। তিনি লাশ নিয়ে বড়লেখার দিকে রওয়ানা হয়েছেন। স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী বঙ্গেশ দে’কে আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন