চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম চা শিল্পের সম্ভাবনা ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল
সাইফুল ইসলাম॥ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন,চা শিল্পের সম্ভাবনা ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। কিন্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অনেক চেলেঞ্জও আছে। আমরা কখনও আশা করি নাই ২০১৬ সালে আমাদের ৮৫.০৫ মিলিয়ন চা উৎপাদন হবে। ২০১৬ সালের মতো যে ২০১৭ সাল হবে এটার কোর নিশ্চিয়তা নেই ?। আর ২০১৭ সালে চা উৎপাদনে আমরা কি পাবো তার উপর নির্ভর করবে এটি একটি সাইটেইনেবল গ্রোথ আমরা যেটা পেয়েছি, নাকি এটা স্লোথ। নাকি হঠাৎ করে স্বর্গীয় ভাবে আল্লাহর অশেষ রহমতে আবহাওয়াও বিভিন্ন কারণে চা উৎপাদন ভাল হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে আমাদের উৎপাদন কি হবে এটা অত্যন্ত গুরুতপূর্ণ। আমি আশা করি আমার চা বৈজ্ঞানিরা যারা আছেন,পিডিইউ এর যারা পরিদর্শনকারী আছেন,উত্তরবঙ্গের প্রজেক্টের সাথে যারা নিয়োজিত আছেন তারা এবিষয়টা খেয়াল করবেন। উত্তরবঙ্গে ৭টি চা কারখানা আছে,এবছর আরোও ৮টা চা কারখানা চালু হবে।
১১ ফেব্রুয়ারী শনিবার শ্রীমঙ্গলস্থ বিটিআরআই ৫২তম বার্ষিক কোর্স ২০১৭ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো.সাফিনুল ইসলাম,এনডিসি পিএসসি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিটিআরআই পরিচালক এস এম আলতাফ হোসেন, বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান জি এম শিবলী। সারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন চা বাগান থেকে বার্ষিক কোর্সে ৩৮জন বাগান ব্যবস্থাপক অংশ নেন।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে ১৬২ বছরের চা-শিল্পের ইতিহাসে এবার উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। আগামী দু-তিন বছর যদি এই উৎপাদন ধরে রাখা যায়, তাহলে আশাবাদী হওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে আমদানিরও দরকার হবে না। চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা যাবে।
মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, এবছর চা চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূল থাকে সঠিক সময়ে বৃষ্টি এবং সঠিক তাপমাত্রা ও বাগানমালিকদের বাগান পরিচর্যা থাকে উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান জি এম শিবলী বলেন বলেন, কয়েক বছরে চা-বাগানে সংস্কার করা হয়নি। ৫০-৬০ বছরের পুরোনো চারা উঠিয়ে নতুন চারা লাগানো হলে চা চাষের আওতাও বাড়বে। চায়ের গুণগতমান ভাল হবে। তিনি আরও বলেন,আবহাওয়া অনুকূল হওয়ার পাশাপাশি এসব পদক্ষেপের কারণে এর সুফল মিলেছে এবার। এখন উৎপাদনের তুলনায় চায়ের চাহিদায় ফারাক নেই। এভাবে উৎপাদন অব্যাহত থাকলে সামনে চা আমদানিও কমবে।
প্রসঙ্গত: চা বোর্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আমদানি ও উৎপাদন মিলে এই মৌসুমে বাজারে চায়ের সরবরাহ ৯ কোটি ২৭ লাখ কেজি। অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রপ্তানিসহ মোট চায়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ২১ লাখ কেজি। চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এই মৌসুমে বাজারে চায়ের উদ্বত্ত রয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ কেজি। আবার চা ব্যবসায়ীদের হিসাবে, চা বোর্ডের হিসাবের চেয়ে চায়ের চাহিদা বেশি।
চা বিপণনে জড়িত ব্রোকারেজ হাউসগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে ২ কোটি ৪০ লাখ কেজির বেশি চা রপ্তানি হয়। এরপর ২০০৭ সালে চা রপ্তানি এক কোটি কেজির বেশি বাড়লেও ধারাবাহিকভাবে কমছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ চা রপ্তানি হয় ১৯৮২ সালে, ৩ কোটি ৪৪ লাখ। সবচেয়ে কম রপ্তানি হয় গত বছর ৪ লাখ ৭০ হাজার কেজি।
মন্তব্য করুন