চা শ্রমিক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় ম্যানেজার অবরুদ্ধ
হারিস মোহাম্মদ॥ জুড়ী উপজেলার সাগরনাল চা বাগান ম্যানেজার কর্তৃক নারী চা শ্রমিক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে শ্রমিকরা ম্যানেজারকে এক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
সরজমিনে গেলে শ্রমিকরা জানান, সাগরনাল চা বাগানের চা শ্রমিক রাজাবাড়ী লাইনের সীমা পাশি (২০) এর বসত ঘরটি জরাজীর্ণ ছিল। কয়েকদিন যাবত বৃষ্টি হওয়ায় ঘরের ভিতর বৃষ্টির পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। স্বামী সম্ভু পাশি ও এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।
ঘর মেরামত করার জন্য ম্যানেজার শান্তনু চাকমাকে বার বার অনুরোধ করার পরও ম্যানেজার ঘর নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেননি।
শুক্রবার ১৯ মে সকালে সীমা পাশি ঘরের থালা-বাসন, স্বামী ও শিশুসন্তানসহ চা বাগান ম্যানেজার শান্তনু চাকমার বাংলোর বারান্দায় অবস্থান নেন। সেখানে চা রান্না করার সময় ম্যানেজার চুলা ভেঙ্গে দেন। প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত করা হয় সীমা পাশি এবং তার স্বামীকে।
এক পর্যায়ে অনশনে বসেন সীমা পাশি। বাংলোর বারান্দা থেকে সীমা পাশিকে চলে যাওয়ার জন্য ম্যানেজার শান্তনু চাকমা ধমকাতে থাকেন। কিন্তু ঘর মেরামতের দাবিতে সীমা পাশি অনড় থাকেন। পরে ম্যানেজার সীমা পাশিকে লাঞ্চিত করেন।
ম্যানেজার কর্তৃক সীমা পাশি লাঞ্চিত হওয়ার বিযয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে চা শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে ম্যানেজারের অপসারণের দাবি করে বাংলোতে তাকে অবারুদ্ধ করেন।
খবর পেয়ে জুড়ী থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে সাগরনাল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুন নুর মাষ্টার, ৯নং ওয়ার্ড সদস্য প্রদীপ যাদব ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
ইউপি সদস্য প্রদীপ যাদব বলেন, চা শ্রমিক ও ম্যানেজারের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি শনিবার ২০ মে বিকেলে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
সাগরনাল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুন নূর মাস্টার জানান, চা শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তিনি সেখানে গিয়ে বাগান ম্যানেজার এবং চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছেন। শনিবার শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হবে।
চা বাগান ম্যানেজার শান্তনু চাকমা বলেন, ঘর মেরামতের জন্য সকল শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন। একসাথে সবার ঘর মেরামত করা সম্ভব হবে না। মেরামতের কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে সকল শ্রমিকদের ঘর মেরামত করে দেয়া হবে।
সীমা পাশিকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, সীমা পাশি অনশন করায় তাকে চলে যেতে অনুরোধ করেছি। পরে তার সাথে অন্য শ্রমিকরা যোগ দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে। সীমা পাশির ঘরটি দ্রুত মেরামত বসবাসের উপযোগী করে দেওয়া হচ্ছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, সাগরনাল চা বাগানের শ্রমিকদের ঘরের ভিতর বৃষ্টির পানি পড়ছিল। ঘর মেরামতের দাবিতে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ পাঠানোর পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ইউটিউবে দেখুন পাতাকুঁড়ির ভিডিও গ্যালারি
মৌলভীবাজারে প্রেস কাউন্সিল সেমিনার ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত
মৌলভীবাজার পৌরসভার উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে ভাড়াউড়া চা বাগানে মে দিবস পালিত
মন্তব্য করুন