জমে উঠেছে ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, প্রার্থীদের কারো চোখে ঘুম নেই

December 20, 2022,

হারিস মোহাম্মদ॥ জুড়ী উপজেলার ৭নং ফুলতলা ইউনিয়নের নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে দিনরাত প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন। দিচ্ছেন মিটিংগুলোতে নানারকম প্রতিশ্রুতি। আগামী ২৯ ডিসেম্বর সীমান্তবর্তী এই ইউনিয়নটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএম এ চলবে ভোট।

সোমবার ১৯ ডিসেম্বর সরজমিনে ফুলতলায় গেলে প্রার্থীদের গণসংযোগের চিত্র দেখা যায়। প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারের নানা দিক তুলে ধরেন। ভোটারগণও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ, ইভিএম এ ফলাফল নিয়ে শংঙ্কিত অবস্থায়। এর মাঝেই নানারকম গুজব ছড়িয়ে তাদের আতঙ্কিত করে রাখা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে নৌকা প্রর্তীক নিয়ে লড়ছেন হেভীওয়েট প্রার্থী ফুলতলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমেদ। ইতিমধ্যেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর আইনশৃংঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ যাবতীয় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তিনি বিগত ৫ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন দুজন প্রার্থী। এর ১ জন হলেন ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ফয়াজ আলীর ২য় পুত্র আব্দুল আলিম সেলিম। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তিনি। তার পক্ষে রয়েছেন বিএনপির সমর্থক ভোটাররা। ফলে তিনি বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে। চেয়ারম্যান র্প্রার্থী সেলিম বিগত ২৩ বৎসর যাবৎ সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন।

সেখানে তিনি ভালো বেতনে চাকুরী করতেন। একমাত্র মানুষের ভালোবাসার টানে এবং পিতার হারানো মসনদটি ফিরে পেতেই এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এক আলাপ চারিতায় ফুলতলা ইউনিয়নের অনেক দূরদর্শার চিত্র তুলে ধরলেন এই তরুণ প্রার্থী। তিনি বলেন, ফুলতলা ইউনিয়নবাসী সরকারী পরিসেবা নিতে এসে নানারকম হয়রানীর শিকার হন। তিনি নির্বাচিত হলে এসব হয়রানী বন্ধসহ স্বল্প সময়ে জন্ম-নিবন্ধন সনদ প্রদান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, শিক্ষা স্বাস্থ্য খাতে বরাবরি অবহেলিত এই ইউনিয়নটির বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসকল সমস্যার সমাধান করবেন।

এছাড়া রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, চা শ্রমিকদের গবাদিপশু চুরি ইত্যাদি বন্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেন তিনি। তাছাড়া নির্বাচিত হলে সপ্তাহে দুই দিন ছুটির দিনে তিনি সমগ্র ইউনিয়নবাসীর ঘরে ঘরে গিয়ে দেখবেন কার কি সমস্যা রয়েছে। আব্দুল আলিম সেলু আরো জানান, তিনি তার পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো করবেন। তিনি ইউনিয়নবাসীর সেবায় তার পিতার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি সচল করে নিয়েছেন। রাজকী ফাঁড়ির সাড়ে ৩ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করবেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।

এছাড়া প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত ফুলতলা প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা আব্দুল আলিম সেলিম বলেন, প্রবাসীদের অর্থায়নে ইতিমধ্যেই অনেক কাজ করেছি আমরা। নির্বাচিত হলে আরো বেশি পরিসরে কাজ করবেন বলে জানান। তিনি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। বিজয়ী হলে নির্বাচিত ইউপি সদস্যদের নিয়ে ফুলতলা ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করতে চান। এজন্য তিনি ফুলতলা ইউনিয়নবাসীর সমর্থন প্রত্যাশী। ফুলতলা ইউনিয়নে আরেক প্রার্থী ধনকুবের মোস্তফা মিয়া লড়ছেন আনারস প্রর্তীক নিয়ে।

তিনি পরিষদের সাবেক ২ বারের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন ফুলতলা ইউনিয়নের বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। নির্বাচিত হলে তিনি সব এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে সামাজিক বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। তাছাড়া রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সরকারের বরাদ্দকৃত অনুদান জনগণের মাঝে শতভাগ বন্টণ করবেন। তাছাড়া চা শ্রমিকদের গবাদিপশু চুরি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন।

এছাড়া তার মাসিক বেতন ভাতার অর্থ তিনি দু’ভাগে বিভক্ত করে এর ১ ভাগ চা শ্রমিকদের কল্যাণে আর ১ ভাগ বস্তির অসহায় মানুষদের কল্যাণে ব্যয় করবেন। তার প্রবাসী ছেলেদের অর্থায়নে তিনি একটি দারিদ্র বিমোচনে ত্রাণ তহবিল গঠন করে ফুলতলা ইউনিয়নের গরিব-দুঃখী অসহায় মানুষের সেবা করতে চান এই প্রবীণ জননেতা। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com