জুড়ীতে মেয়ে নির্যাতনকারী ইয়াবা ব্যবসায়ী মাসুককে উত্তেজিত জনতার ধোলাই
হারিস মোহাম্মদ॥ জুড়ীতে আপন মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনকারী ইয়াবাসেবী ও ব্যবসায়ী মাসুককে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয় ৪/৫ গ্রামের লোকজন। সেই সাথে তার বাড়ীঘর ভাঙচুর করে তছনছ করে দিয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুত্বর আহত অবস্থায় মাসুককে উদ্ধার করে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনাটি রোববার ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে উপজেলার রানীমুরা গ্রামে ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের বীরগোগালী (রানীমুরা) গ্রামের বাসিন্দা মৃত তবদুল হোসেন-এর পুত্র কামিনীগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মাসুক মিয়া দীর্ঘদিন থেকে তার বাড়ীতে ইয়াবা সেবন ও ব্যবসা করে আসছিল।
সেই সাথে বাড়িটিতে অনৈতিক কাজের আখড়ায় পরিণত করেছিল। ইয়াবাসহ সে পুলিশের হাতে আটকও হয়েছিল। গত বছরের ১৩ অক্টোবর রাতে তার চাচাতো বোনকে (এসএসসি পরীক্ষার্থী) কুলাউড়া থেকে বাড়িতে এনে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় মামলা হলে মাসুক কিছু দিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসে। প্রায় ৩ মাস আগে তার মেয়েকে কুলাউড়া উপজেলায় বিয়ে দেয়। বিয়ের পর প্রায়ই গভীর রাতে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তাকে জোর পূর্বক বাড়িতে নিয়ে এসে সারারাত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুলাউড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে মাসুকের মেয়ে মাহমুদা আক্তার ফাহিমা। সে অভিযোগ করে তার বিয়ের প্রায় তিন মাস হয়েছে। সে স্বামীর সংসার করার কথা।
কিন্তু তার বাবা প্রায়ই রাতে এসে তাকে জোর করে বাড়ীতে নিয়ে সারারাত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো।
ফাহিমা ও তার স্বামীর এরকম বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে জুড়ী, কুলাউড়াসহ পুরো জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয় স্থানীয়দের মধ্যে।
এমনি এক পরিস্থিতিতে রোববার বিকেলে রানীমুরা, বীরগোগালী, কাশিনগর, মনতৈলসহ স্থানীয় ৪-৫ গ্রামের শতশত মানুষ মাসুকের ফাঁসির দাবিতে রানীমুরা বাজারে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন থেকে উত্তেজিত জনতা মাসুকের বাড়িতে হামলা চালায়।
তখন মাসুকের বাড়িতে ইয়াবা সেবনকারী কালীনগর গ্রামের লকুছ মিয়াকে গণধোলাই দেয়। পরে মাসুকের বাড়িঘর ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলে এবং মাসুককে পেটাতে পেটাতে জমিতে ফেলে রাখে।
খবর পেয়ে জুড়ী থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত করে এবং গুরুত্বর আহত অবস্থায় মাসুককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আলোচিত বিষয়ে এখনও থানায় কেউ অভিযোগ দেয় নি।
অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কেউ যেন আইন হাতে তুলে না নেয়। জান-মালের ক্ষতি হয় এমন ঘটনা থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।
মন্তব্য করুন