জুড়ীতে স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
আব্দুর রব॥ জুড়ীতে এমি আক্তার (২১) নামক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। স্বামী জাবেদ উদ্দিনের দাবী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে নিহত গৃহবধুর মা রুলি বেগমের অভিযোগ স্বামীসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজন শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। পরে বিষপানে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। পুলিশ ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে পিতৃপক্ষের কাছে নিহত গৃহবধুর লাশ হস্তান্তর করেছে।
জানা গেছে, জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের মৃত মির্জান আলীর মেয়ে এমি আক্তারের সাথে বড়ধামাই গ্রামের জাবেদ আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল গৃহবধু এমি। এরই মাঝে তাদের দুইটি শিশু সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু এরপরও নির্যাতনের মাত্রা কমেনি। এর জেরে মা-ভাইয়েরা কয়েকবার এমিকে বাবার বাড়ি নিয়ে যান। বিচার শালিসে আর কোনো নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে না মর্মে অঙ্গীকার দিয়ে জাবেদ আলী স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যায়। কিন্তু বাড়িতে নিয়ে সে আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে বলে নিহত এমি আক্তারের পিতৃপক্ষের লোকজনের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাত সোয়া নয়টার দিকে স্বামী জাবেদ আলী স্ত্রী এমি আক্তারকে বিষপান করেছে বলে জুড়ী উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তাকে সেখানে রেখে পালিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করেছে।
নিহত গৃহবধুর মা ডলি বেগম অভিযোগ করেন, বিষপানে নয়, স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। পরে বিষপানে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। মেয়ের শরীরে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসকও বলেছেন বিষপানে মৃত্যুর আলামত তারা পাননি। আমি অত্যন্ত হতদরিদ্র। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আমার মেয়ের জামাইর পক্ষ নিয়েছে। আইনের দ্বারস্থ না হতে তারা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুবিচার চাই।
সুরতহাল প্রস্তুতকারী জুড়ী থানার এসআই মোস্তফা কামাল জানান, বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পরদিন ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করে। লাশের পিটের সকল স্থানে লালচে দাগ পাওয়া গেছে। ময়না তদন্ত শেষে রাতেই স্বজনদের নিকট নিহতের লাশ হস্তান্তর করেছেন। থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। পোষ্টমোর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন