জুড়ীতে ইউএনও অফিসের সামনে বেতন-ভাতা ফিরে পেতে স্বামী-সন্তান সহ অবস্থান
হারিস মোহাম্মদ॥ জুড়ীতে নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসার আয়া তকমিনা বেগম বেতন-ভাতা ফিরে পাওয়ার দাবিতে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে স্বামী সন্তান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
মঙ্গলবার ৩০ মে সকালে এ অবস্থান কর্মসূচিতে তকমিনা বেগম, স্বামী মহীউদ্দীন দুই শিশু সন্তান রাবেয়া আক্তার (৮), জুনায়েদ আহমদ (৫) নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
খবর পেয়ে সেখানে গণমাধ্যম কর্মীরা ছুটে যান। এ সময় আয়া তকমিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, নয়াগ্রম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসার আয়া পদে কয়েকমাস আগে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
মাদ্রাসার জমি নিয়ে স্থানীয় একজনের সাথে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সুপার জিয়াউল হক ও সভাপতি মনিরুল ইসলামের দ্বন্দ্ব চলছিল। দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে সুপার ও সভাপতি তাকে বেতন সংক্রান্ত কাজ আছে বলে মৌলভীবাজার আদালতে নিয়ে যান।
সেখানে কয়েকটি কাগজে তকলিমার স্বাক্ষর নেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে একই গ্রামের মঈনুল ইসলাম মনু মাষ্টারের ছেলে জুমন মিয়ার নামে নারী নির্যাতন মামলা করান। পরে তিনি জানতে পারেন জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে দিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা করানো হয়েছে।
পরবর্তীতে সুপার ও সভাপতির সাথে তকলিমা মামলার বিরুদ্ধে কথা বলায় এবং মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করায় তার বেতন বন্ধ করে দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
তকলিমা আরও জানান, বেতন ভাতা বন্ধ হওয়ায় বিগত পবিত্র ঈদুল ফিতর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে মানবেতার জীবন-যাপনসহ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তার।
তকলিমার স্বামী মহিউদ্দিন জানান, আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। কোন আয়রোজগার করতে পারি না। স্ত্রীর বেতন ভাতা বন্ধ হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতার জীবনযাপন করছি।
অবস্থান কর্মসূচিতে তকলিমার দুই শিশু সন্তান বলেন, ঘরে ভাত নাই, মার চাকুরী নাই, কোথা থেকে খাব। মায়ের চাকুরীটা ফিরে পেলে আমরা খেয়ে পয়ে বাঁচাতে পারব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ওই নারী নির্যাতন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জুড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতি: দায়িত্ব) শাহেদা আকতার সম্প্রতি আয়াকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানোর সত্যতা পাওয়ায় মাদ্রাসার সভাপতি মনিরুল ইসলামসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
মন্তব্য করুন