জুড়ীতে এক পসলা বৃষ্টি!
আল আমিন আহমদ॥ কবিগুরুর চৈত্রের কবিতার অংশ বিশেষ “আমের বনে দোলা লাগে, মুকুল পড়ে ঝড়ে। চিরকালের চেনা গন্ধ,হাওয়ায় ওঠে ভরে। ধর্মপ্রাণদের দোয়া কিংবা উপাসনা আর আবহাওয়া বিদদের কালবৈশাখী, এই তিনে মিলে এক প্রসলা বৃষ্টি যেন এসেছে খরা খাটাতে।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ধানের গাছ, আমের মুকুল তার প্রকৃতির ঔষধ বৃষ্টি পেয়েছে, কৃষকের মনের স্বস্তিতে এসেছে আনন্দ। দিনের বেলা তীব্র গরম আর দাবদাহে মানুষের পাশাপাশি বৃষ্টির জন্য প্রহর গুনছিল গাছপালা ও পশুপাখি। অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেল।
রোববার ১৯ মার্চ সকালে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল, দিনের পরবর্তী অংশে আকাশ থেকে গুড়ি গুড়ি এই বৃষ্টিতে বৃক্ষরাজির পাতায় খরা খাটাতে যেমন কাজ করবে তেমনি গাছের মূল পাবে তার পরিমিত পুষ্টি।কয়েক মাস থেকে বৃষ্টি না হওয়ার কারনে বোরো ধানের ক্ষেতের জায়গা চৌচির হয়ে গেছে। পানির অভাবে অনেক ধানের গাছে রোগ ধরা পড়ছে,শুকিয়ে যাচ্ছে গাছের পাতাগুলো।
বৃষ্টির কারনে এসব গাছে নতুন করে গজাবে সবুজ পাতা,গাছে আসবে ফুল।পাশাপাশি আম গাছের মুকুল পাবে পরিপূর্ণতা।বৃষ্টির জন্য কয়েকদিন থেকে বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে দোয়া করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমান অপরদিকে মন্দিরে পূজো দিয়েছে হিন্দুরা। বৃষ্টির দেখা পাওয়ায় সবাই যার যার মতে খুশি। উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে ১৪ মার্চ মঙ্গলবার খোলা মাঠে সালাতুল ইস্তেগফারের নামায ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
দীর্ঘদিন এক পসলা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিলেন কৃষক রফাত আলী। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন,আমরা উজানের মানুষের বোরো চাষ কম।পাহাড়ের আশে পাশের যে জায়গা গুলো আছে সেগুলোতে আউঁশ চাষ করি।বৃষ্টি না হওয়ার কারনে( আলি বিছরা)ধান গাছের বীজ বপনের স্থান টিক করতে পারছিলাম না।অবশেষে বৃষ্টি এসেছে,স্বস্তির বার্তা নিয়ে।আমরা বীজ বপনের জন্য জমি টিক করতে পারবো। গনি মিয়া নামের এক কৃষক জানান, বৃষ্টির অভাবে তার বোরো চাষে ধান আসছে না। পর্যাপ্ত পানি ও দেওয়া যাচ্ছে না। মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এই বৃষ্টির কারনে ধান গাছে ফুল গজাবে।
জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পীতিষ দাস বলেন, অনেক দিন পর বৃষ্টি হয়েছে। এ বৃষ্টির পানির কারনে বোরো চাষে ধানের বাম্পার ফলনের আশা রয়েছে। উপজেলার হাওর অধ্যুষিত জায়ফরনগরে আউঁশের চাষ কম হয়, অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে আউশঁ সিজনের ধান চাষ করেন কৃষকরা। বোরো কৃষকদের পাশাপাশি বীজ বপনের জন্য তাদের জন্য এ বৃষ্টির পানি উপকারে আসবে।
মন্তব্য করুন