জুড়ীতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা

December 13, 2022,

হারিস মোহাম্মদ॥ জুড়ী উপজেলার  ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে বেশ কয়েকমাস আগে। কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন নিয়ে দেখা দিয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। ফলে অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটার পর পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে হয়। ওই স্টেশনগুলো থেকে অগ্নি নির্বাপক গাড়ি আসতে বিলম্ব হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।

জুড়ী উপজেলার জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও উদ্বোধন না হওয়ায় উপজেলার কোথাও আগুন লাগলে পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে আসতে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

জানা যায়, এই উপজেলায় এতদিন ধরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশ্ববর্তী কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার সাহায্য নিতে হত। ফলে আগুন লাগার স্থানে উদ্ধারকারী দল আসার আগেই আগুনে পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রতিবছর শীতে উপজেলায় আগুন লাগার ঘটনা বেড়ে যায়।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও উদ্বোধন না হওয়ায় মানুষের মনে অজানা আতংঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসলেও যথাসময়ে উদ্বোধন না হওয়ায় উপজেলাবাসী নতুন ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনের জন্য প্রহর গুনছেন।

নতুন ফায়ার স্টেশন হওয়ায় খুশি সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন, আগে আগুন লাগলে নিজেরাই নির্বাপণ করতেন। ফায়ার স্টেশন পাশের উপজেলায় হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে অনেকটা সময় লেগে যেতো। আর এতে আগুনে প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হতো। নতুন ফায়ার স্টেশন হওয়ায় এই আশঙ্কা মন থেকে দূর হয়েছে উপজেলা বাসীর। তাদের মনে এখন একটাই ভরসা, শুধু অগ্নিকান্ডে নয়; প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোন দুর্ঘটনায় অল্প সময়ে ও খুব সহজে সেবা মিলবে ফায়ার সার্ভিসের। উপজেলার সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করছেন অতি দ্রুত উদ্বোধন করা হোক এ ফায়ার স্টেশনটির।

নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার স্টেশনটি সুসজ্জিত করে রাখা হয়েছে। নতুন এ স্টেশনের  রং দূর থেকেই দৃষ্টি কাড়ে। গতি, সেবা ও ত্যাগ নিয়ে এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় এ ফায়ার স্টেশনটি। জুড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিংকু রঞ্জন দাস বলেন, জুড়ীতে প্রায়ই অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে।

কিন্তু ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশের উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আসতে আসতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এখন আমাদের উপজেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন নির্মিত হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। শীগ্রই উদ্বোধনের ব্যাপারে মাননীয় পরিবেশমন্ত্রীর সাথে কথা বলব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, এ উপজেলায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটলে পাশ্ববর্তী দুই উপজেলার সাহায্য নিতে হয়। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে আসার আগেই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি  ফায়ার সার্ভিস স্টেশন যা বাস্তবে রূপ দিয়েছে সরকার। শীগ্ররই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি উদ্বোধনের বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে।

মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো: নিয়াজ উদ্দিনে সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,  জুড়ী ফায়ার সার্বিস ও  সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি গণপূর্ত বিভাগ মৌলভীবাজার বাস্তবায়ন করেছে। ভবনটি এখনো আমরা বুঝে পাইনি। তাছাড়া কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। এ  স্টেশনটি উদ্বোধনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাজ শেষ হলেই দ্রুত উদ্বোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com