জুড়ীতে মাদ্রাসার জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্ব : আয়াকে দিয়ে মামলা

April 25, 2023,

জুড়ী প্রতিনিধি॥ জুড়ীতে নয়াগ্রাম শিমুল তলা দাখিল মাদ্রাসার জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্বে অন্যকে ফাঁসানোর জন্য  মাদ্রাসার সুপার জিয়াউল হক ও সভাপতি মনিরুল ইসলাম আয়াকে দিয়ে  মামলা করানোর অভিযোগ উঠেছে। মামলা করানোর পর মাদ্রাসার আয়া তকমিনা বেগম সুপার ও সভাপতির কাছে প্রতিবাদ করে আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করায় বেতন বন্ধ করে দিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

বেতন বন্ধের প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন ভোক্তভোগী তকমিনা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তকলিমা বেগম ঐ মাদ্রাসায় কর্মরত আছেন। মাদ্রাসার কিছু জমি নিয়ে স্থানীয় একজনের সাথে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ সুপার ও সভাপতির দ্বন্দ চলছিল। দ্বন্দের এক পর্যায়ে সুপার ও সভাপতি তকমিনাকে  বেতন সংক্রান্ত  কাজ আছে বলে  মৌলভীবাজার আদালতে নিয়ে যান। সেখানে কয়েকটি কাগজে তকলিমার স্বাক্ষর নেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে একই

গ্রামের মঈনুল ইসলাম মনু মাষ্টারের ছেলে জুমন মিয়ার নামে নারী নির্যাতন মামলা করান। পরে তিনি জানতে পারেন জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে দিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা করানো হয়েছে। পরবর্তীতে  সুপার ও সভাপতির সাথে এই মামলার বিরুদ্ধে কথা বলায় এবং মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করায় তার বেতন বন্ধ করে দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, বেতন ভাতা বন্ধ হওয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরে শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করেছেন।

আলাপকালে  তকমিনা আক্তার আরো অভিযোগ করে বলেন, আমাকে মাদ্রাসায় নিয়োগ দিতে আমার কাছ থেকে সুপার জিয়াউল হক, সভাপতি মনিরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান আসকর আমার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা নিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান আসকর বলেন, মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে আমি একটি রিট করি। রিট পিটিশন নং ১৮৫৩/১৭। এমতাবস্থায় মাদ্রাসার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততার প্রশ্নই আসে না। আয়াকে দিয়ে মামলা করানো এবং চাকুরীতে নিয়োগের বিষয়ে টাকা লেনদেনে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

অভিযোগের বিষয়ে নয়াগ্রাম শিমুল তলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার জিয়াউল হক বলেন, মামলা করানোর বিষয়ে আমি জড়িত নই। আদালতে মামলা করায় মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ায় মূলত আয়ার বেতন ভাতা সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। আদালতে মামলা করলে কারো বেতন ভাতা বন্ধ করা যাবে এমন কোন আইন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এর সদোত্তর  দিতে পারেননি।

আদালতে মামলা করানোর বিষয়টি অস্বীকার করে মাদ্রাসার সভাপতি মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, আয়া কর্তৃক আদালতে নারী নির্যাতন মামলা করা এবং পরে এ মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে মাদ্রাসার মান সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ায় সাময়িকভাবে আয়ার বেতন ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। আয়ার চাকুরীতে যোগদানে টাকা দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

জুড়ী উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, আয়ার বেতন ভাতা বন্ধের বিষয়ে  একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com