জুড়ীতে হোটেল শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
জুড়ী প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের জুড়ীতে হোটেল শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
সোমবার ৬ মার্চ সন্ধ্যায় জুড়ী উপজেলা চত্ত্বরের কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জুড়ী উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল করিম। আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক রমজান আলী পটু।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন কুলাউড়া উপজেলা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ হারুন মিয়া, জুড়ী উপজেলা রাইস মিল শ্রমিক সংঘের সভাপিত মোঃ জমির উদ্দিন, জুড়ী উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক রমজান আলী, উপদেষ্ঠা আলমান মিয়া, নুরজামাল মিয়া প্রমূখ।
মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫-এর সাবেক উপদেষ্ঠা, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্ট-১৯৩৩ -এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ নং বি-২০৩৭ এর সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ সিলেট জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রসৈনিক শ্রমিকনেতা আবুল কালাম আজাদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের জুড়ী উপজেলা কমিটির উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দূরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাত্র ৪৯ বছর বয়সে শ্রমিকনেতা আবুল কামাল আজাদ মৃত্যুবরণ করেন। প্রয়াত আবুল কালাম আজাদ আমৃত্যু হোটেল শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এমনি কি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরও যতদিন সচল ছিলেন ততদিন সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
মহান মে স্ববেতনে সর্বাত্মক ছুটি কার্যকর, হোটেল সেক্টরে সরকার কর্তৃক নি¤œতম মজুরি ঘোষণা, রমজান মাসে বিনা বেতনে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ঈদ উৎসব বোনাস আদায়, বেআইনী ছাঁটাই বন্ধসহ তাঁর নেতৃত্বে সিলেট বিভাগে অসংখ্য আন্দোলন সংগ্রামে হোটেল শ্রমিকরা দাবি আদায় করতে সমর্থ হয়। এছাড়াও অনেক স্থানীয় ও জাতীয় আন্দোলন সংগ্রামে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। তাঁর অসমাপ্ত সংগ্রাম অগ্রসর করে নেওয়ার দায়িত্ব তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে আমাদের পালন করতে হবে।
সভায় সাম্প্রতিক সময়ে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন চাল-ডাল, তেল-লবন-চিনি, মাছ-মাংস, ডিম-দুধ, শাক-সবজিসহ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। সরকার দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের মূল্য ও নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি করে শ্রমিক, শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষ ও ব্যাপক জনগণের জীবন ও জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। সভা থেকে বিদ্যুত-জ্বালানি ও গ্যাসের বর্ধিতমূল্য প্রত্যাহারসহ নিত্যপণ্যের মূল্য কমানো, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাতিল করা, রমজান মাসে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ঈদের আগে বেতন বোনাস প্রদান, মহান মে দিবসে স্ববেতনে ছুটি, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ নিম্নতম ঘোষণা, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস, নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্রসহ শ্রম আইন বাস্তবায়ন করার দাবি জানানো হয়।
মন্তব্য করুন