জুড়ী উপজেলার আদা-জামির : দেশ ও বিদেশে চাহিদা বাড়ছে
শামীম আহমদ॥ প্রতিকৃতিসমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডলিত ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ঘেরা পরিবেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলা ভূমি ও চা বাগান অধ্যসিত মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা। এই উপজেলায় রয়েছে ঐতিহ্য বাহী কমলা, জাম্বুরা, সাতকড়া, লটকন, আনারস, লেবইর এবং আদা-জামির এর যথেষ্ট সুনাম।
আদা-জামির বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে এ ফলের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় এর চাষাবাদ হলেও বিশেষ করে জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী, পূর্বজুড়ী, গোয়ালবাড়ী, সাগরনাল, ফুলতলা ও জায়ফরনগর ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় ব্যাপক ফলন হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে আদা-জামির অঞ্চলের মানুষের খাবারে তালিকার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কাতার, ফ্রান্স সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত সিলেট অঞ্চলের মানুষের খাবারের তালিকায় এটি উল্যেখ যোগ্য অংশ দখল করে নিয়েছে। মূলত স্বজনদের মাধ্যমে তাঁরা বিদেশে বসেও এ ফলের স্বাদ নিতে পারেন।
মাছ-মাংস, ডালসহ বিভিন্ন রকমের তরিতরকারিতে ব্যবহার করা যায়। আদা-জামির ফলের সুগন্ধে খাবারে আনে বার্তি স্বাদ। আদা-জামির রোদে শুকিয়ে বেশী দিন রেখে এবং আচার করে পরবর্তীতে রান্নায় ব্যবহার করা যায়। তবে খাবার প্রক্রিয়া না জানায় দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠীর নিকট আদা-জামির এখনও অনেকটাই অপরিচিত নাম।
বিশেষ করে কমলা, জাম্বরা, সাতকড়া, লটকন, আনারস, লেবইর এবং আদা-জামির এসবের ফলন সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। মৌলভীবাজার জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাহিদা মেটায় এই মৌসুমি ফল। গাঢ় সবুজ রঙের গোলাকৃতি আদা-জামির প্রকারভেদে ৪০-৮০ টাকা প্রতি হালি বিক্রি হয়ে থাকে। ভরা মৌসুমে আদা-জামির উল্লেখিত দরে বিক্রি হলেও অন্য সময়ে তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। পরিকল্পিত চাষাবাদের মাধ্যমে এর উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
বিশেষ করে টিলা কাটার ফলে এবং মাটির উব্ররতা হ্রাস পাওয়ায় চাষাবাদ ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। টিলা কাটা বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানোর সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে স্থানীয় চাষিরা এ ফলের চাষাবাদে আগ্রহ দেখাতে পারে এবং সবাই যদি এসব ফল-ফলদের চারা লাগাই তবে দেশীয় এ ফলের সু-খ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে দেশ এবং জাতি।
মন্তব্য করুন