(ভিডিওসহ) জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : মনু নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে

July 15, 2019,

স্টাফ রিপোর্টার॥ টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ীঢলে মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলায় মনু নদী, কুশিয়ারা নদী এবং ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের মাতারকাপন গ্রামে পানি বন্দী রয়েছেন ৫০টি পরিবার। মাতারকাপন গ্রামের লিপি দাস জানান রবিবার থেকে পানি বন্ধী রয়েছি চিড়া মুড়ি খেয়ে দিনযাপন করছি । চুলায় পানি উঠায় রান্না করতে পারছিন ানা । প্রতিবন্ধী সিতু দাস জানান দুপুর থেকে পানি ঘরে উঠেছে, খাবার নেই এর জন্য কিছু খেতে পারিনি ।পরে আমার স¦ামী কোন রকমে চিড়া ভিজিয়ে দিয়েছেন তা খেয়েছি, আামি বৃদ্ধ মানুষ। মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান ১৫ জুলাই সোমবার জানান, সদর উপজেলার বন্যা কবলিত তিনটি ইউনিয়নের মাঝে ১হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ৯ মেট্রিক টন চাউল দেওয়া হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হলো শেরপুর আজাদ বখত উচ্চ বিদ্যালয় ,হামোরকোনা মাদ্রাসা ও ব্রাম্মনগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ।৩টি আশ্রয় কেন্দ্র ২২০ টি পরিবার রয়েছে । মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম খাাঁন (ভারপ্রাপ্ত) জানান, মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। মৌলভীবাজারসদরউপজেলার ৩ টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাজনগর উপজেলার ২ টি ইউনিয়নের ২৩ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলার ৩ টিইউনিয়নের ২২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলার ২ টি ইউনিয়নের ০৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মোট ১০ টি ইউনিয়নের ৭০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং পানি বন্দি ৪৫০০ জন। আমরা বন্যা মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন রকমের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য আমাদের কাছে ৭০ হাজার প্যাকেট পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট মজুদ আছে। রাজনগর উপজেলায় ৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এবং কমলগঞ্জ উপজেলায় ২ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মোট ৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে শতাধিক পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। মৌলভীবাজার জেলায় আমাদের খাদ্য শস্য মজুদ আছে ৪ শত ২৯ মেট্রিক টন। জি আর চাল এবং শুকনা খাবার মজুদ আছে ১ হাজার প্যাকেট। রয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জি আর ক্যাশ। কমলগঞ্জ উপজেলায় ৭ মেট্রিক টন চাল এবং ২ শত প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করেছি। কুলাউড়া উপজেলায় ৫ মেট্রিক টন চাল এবং ১০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করেছি। এবং রাজনগর উপজেলায় ৫ মেট্রিক টন চালএবং ১০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ত্রাণ সহায়তা হিসেবে প্রদান করেছি। এই পর্যন্ত মোট ২১ মেট্রিক টন চাল এবং ১০০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ত্রাণ সহায়তা হিসেবে প্রদান করেছি। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ আছে এবং প্রয়োজনে বরাদ্দ বৃদ্ধি করব। ক্ষয় ক্ষতির মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল ২৫ টি প্রাইমারী স্কুলে বন্যার পানি উঠেছে এবং এই গুলা পানি বন্দি অবস্থায় আছে। এছাড়া ২৩ টি পুকুর বন্যার পানিতে ওয়াস আউট হয়েছে। ৯৭ হেক্টও আউশ ফসল এবং ৩৮ টি বীজ তলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। মৌলভীবাজারে ৭৪ টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে এবং টিমগুলা কাজ করছে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্ত্তী জানান মৌলভীবাজার জেলায় মনু নদীর পানি মনু রেল ব্রিজ এলাকায় বিপদ সীমার ২৮ সেন্টি মিটার উপরে,চাঁদনীঘাট ব্রিজ এলাকায় মনু নদীর পানি বিপদ সীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর,কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার ৫৩ সেন্টি মিটার উপর এবং ধলাই নদীরপানি বিপদ সীমার ২৪ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com