টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে মরক্কো কোয়াটার ফাইনালে
বিশেষ প্রতিনিধি॥ সোলেরের মতো তার শটটাও ঠেকিয়ে দেন বনো। মরক্কোর চতুর্থ শট নিতে আসা আশরাফ হাকিমি লক্ষ্যভেদ করেন ঠিকই। আফ্রিকান দলটির জয় নিশ্চিত হয়ে যায় তখন। গ্যালারির মতো মাঠের লড়াইয়েও টিকে যায় মরক্কোর ‘লাল উৎসব’। ওদিকে স্পেন ডোবে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়ার বিষাদে।
স্পেনকে পরের রাউন্ডে যেতে হলে গোলরক্ষক উনাই সিমনকে ঠেকিয়ে দিতে হতো পরের সবগুলো শট, আর গোল করতে হতো নিজেদের শটগুলোয়। সিমন সেটা করেও ছিলেন। বাদ্র বানুনের শটটা ঠিকঠাক ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। তবে তৃতীয় শট নিতে আসা সার্জিও বুসকেটস নিজের কাজটা সারতে পারেননি।
কোস্টারিকাকে সাত গোল দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল স্পেন। এরপর আর সেই স্পেনকে পাওয়া যায়নি। চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই শেষে ড্র, এরপর জাপানের বিপক্ষে বসল হেরেই। সেই স্পেন আজকের ম্যাচের শুরুতেই ৭০ শতাংশের কাছাকাছি সময় নিয়ে রেখেছিল বলের নিয়ন্ত্রণ। বল দখল মোটে ২০ ভাগের একটু বেশি হলেও মরক্কোর ফুটবলাররা বিভ্রান্ত হননি। যথেষ্ট পরিণত ফুটবলই খেলেছেন দলটি।
মেইন প্রেস সেন্টার থেকে সবচেয়ে কাছের স্টেডিয়াম এডুকেশন সিটি। কাছের স্টেডিয়াম হলেও জ্যাম পেরিয়ে যেতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে। আজও এর ব্যতিক্রম হলো না। জ্যাম ঠেলে যখন অবশেষে ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে স্টেডিয়ামের মিডিয়া ট্রিবিউনে পৌঁছানো গেল, সেখান থেকে দেখা মিলল গ্যালারির লাল উৎসবের। স্পেন আজ নীল জার্সি পড়লেও তাদের মূল জার্সি লাল। তবে এডুকেশন সিটির স্টেডিয়ামে লাল রঙটা ঠিক স্পেনের লাল নয়, মরক্কোর লালে লাল।
ম্যাচে যা হতে যাচ্ছে, সেসব যেন ছিল তারই পূর্বাভাস! গোলশূন্য ম্যাচের পর পেনাল্টি শ্যুট আউটে যে মরক্কো ৩-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে স্পেনকে! র্যাঙ্কিং, ঐতিহ্য, তারকা খেলোয়াড় সকল সূচকেই মরক্কো সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনের চেয়ে ঢের পেছনে। মানসিক শক্তি ও টিম স্পিরিটই তাদের মূল শক্তি। এই দুইয়ে বলীয়ান হয়ে লুইস এনরিকের স্পেনের বিপক্ষে খেলেছে। ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যথেষ্ট চেপে ধরেছিল আফ্রিকান দলকে। মরক্কোর দলটি যে সহজে ভেঙে পড়ার নয়, সেটা তখন প্রমাণিত হয়েছে আরও এক বার।
পুরো ম্যাচে ৮০০ পাস খেলেছে এনরিকের দল, তবে পায়নি কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা। ১০৪ মিনিটে দুর্দান্ত এক আক্রমণ রচনা করে মরক্কো। ডিফেন্স চেরা পাসে স্পেনের দুই ডিফেন্ডার পরাস্ত। মরক্কোর ফরোয়ার্ডের প্লেসিং কোনো মতো পা দিয়ে ঠেকান স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।
পেনাল্টি শ্যুটআউটেও মরক্কানদের সঙ্গ দিল সে সৌভাগ্যটা। পাবলো সারাবিয়ার শটটা গিয়ে প্রতিহত হয় ক্রসবারে। তবে এর আগে পরে মরক্কানদের দুই শট নিতে আসা আবদেলহামিদ সাবিরি আর হেকিম জিয়েখ ঠিকই বল জড়ান জালে, ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মরক্কো। এরপর কার্লোস সোলেরের শট ঠেকিয়ে দেন মরক্কান গোলরক্ষক ইয়াশিন বনো।
মন্তব্য করুন