টানা বর্ষনে মৌলভীবাজারে ঈদের আনন্দ ম্লান, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
সালেহ আহমদ (স‘লিপক)॥ পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিন ভোর থেকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজার সদর সহ সাতটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।পানিবন্দি হয়ে আছেন জেলার সাতটি উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের ৫ লাখ মানুষ। অনেকেই গিয়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
সোমবার ১৭ জুন পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিন ভোর থেকেই মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে করে ডুবে যায় নিম্নাঞ্চলের রাস্তা ঘাট। ঈদের দিনে এই টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেক ঈদগাহে পানি উঠে যাওয়ায় ঈদের নামাজ আদায় করা হয় উচুঁস্থান সহ স্থানীয় মসজিদগুলোতে। অনেক রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ সহ জেলা শহরের সাথে বিভিন্ন উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
ঈদের দিন দেখা গেছে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। মনুমুখ ইউনিয়নেরও কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি বেড়ে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের দিন ঈদগাহে গিয়ে জামাত আদায় করতে পারেননি নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পশু কোরবানি দিতে গিয়ে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। চারদিকে পানি থাকায় ও টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ সমস্যায় পড়েন মানুষজন। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন অনেকে। কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেহপুর সহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর এলাকা এবং রাজনগর ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল কুশিয়ারা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় ভারি বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের হামরেকোনা গ্রামের বাসিন্দা মামুন জানান, দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে এবার পানি বেশি বেড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। যার কারণে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। পানি বাড়তেই আছে। ঈদের দিন নামাজ আদায় ও পশু কোরবানি দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে মুসল্লিদের।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার তা বেড়ে গিয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায় বন্যা কবলিতদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রতিটি উপজেলার ইউএনওদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। আমাদের সব প্রস্তুতি আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই হয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যার কারণে ওই এলাকার কিছু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
মন্তব্য করুন