টানা বৃষ্টিতে কমলগঞ্জে নিম্নাঞ্চলের ৮০ হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৮০ হেক্টর জমির রোপিত বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ২০ হেক্টর জমির নতুন গজানো ধান সম্পূর্ণরুপে বিনষ্ট হয়ে গেছে। কমলগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ইউনিয়নের ৯টি গ্রামসহ কেওলার হাওরের রোপিত বোরো ফসল প্লাবনের পানিতে তলিয়ে গেছে।
দুই দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ছড়া, হাওর, বিল, নদী, নালা পানিতে টইটুম্বর হয়ে উঠেছে। ঢলের পানিতে কমলগঞ্জ উপজেলার নি¤œাঞ্চলের প্রায় ৮০হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। এর মাঝে নদী, ছড়া তীরবর্তী ও হাওর এলাকায় নতুন গজানো ব্যাপক এলাকার বোরো ফসল সম্পূর্ণরুপে বিনষ্ট হয়ে গেছে। বিনষ্ট ও অধিকাংশ জমির ধান নিমজ্জিত যাওয়ায় এসব এলাকার বোরো নির্ভরশীল কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
পতনউষার ইউনিয়নের ধূপাটিলা, হালাবাদি, পতনউষার, মাইজগাঁও, চন্দ্রপুর গ্রাম, মুন্সীবাজার ইউনিয়নের রূপসপুর গ্রাম ও শমশেরনগর ইউনিয়নের সতিঝিরগাঁও, কেছুলুটি এবং ভাদাইর দেউল গ্রামের (আংশিক) এলাকার বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে। শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামের কৃষক মছদ্দর আলী, বিলাত আলীসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, গত এক সপ্তাহে তাদের জমির বোরো ফসল তিন দফা নিমজ্জিত হয়েছে। এর মাঝে দুই দিন ধরে বোরো ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। কৃষকরা বলেন, প্রায় ২০ হেক্টর জমির নতুন গজানো বোরো ধান সম্পূর্ণরুপে বিনষ্ট হয়ে গেছে।
ধূপাটিলা গ্রামের সেলিম মিয়া, রূপসপুর গ্রামের মাসুক মিয়া ও লাঘাটাছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি (পাবসস) লিমিটেড এর সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলেন, সাধারনত চৈত্র মাসে এ ধরনের বৃষ্টি হয় না। তবে এবার আকষ্মিক বৃষ্টির ফলে ও ঢলের পানিতে নি¤œাঞ্চলে বোরো নির্ভরশীল কৃষকদের আবাদি প্রায় একশ হেক্টর জমি সম্পূর্ণরুপে তলিয়ে গেছে। ফলে গরিব কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা আরও বলেন, আউশ ও আমন মৌসুমে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় এসব এলাকার কৃষকরা বোরো নির্ভরশীল হয়ে উঠেন। এখন বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় তাদের বড় ধরনের ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।
পতনঊষার ইউনিয়নের তোয়াবুর রহমান ও কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা জানান, কমলগঞ্জের পতনউষার ও রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত লাঘাটা নদী ভরাট ও ঝোপজঙ্গলে ভরপুর হয়ে যাওয়ায় নি¤œাঞ্চল দিয়ে মনু নদীতে দ্রুত পানি নিস্কাষিত হতে পারছে না। ফলে কেওলার হাওরকে কেন্দ্র করে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। তারা বলেন, পতনউষার ও কামারচাক এলাকা দিয়ে লাঘাটা নদী সংস্কার ও ঝোপজঙ্গল পরিস্কার করলে ঢলের পানি দ্রুত নিস্কাষিত হলে কৃষকদের এতো ক্ষয়ক্ষতি হবে না।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শামছুদ্দীন আহমদ বলেন, সবমিলিয়ে নি¤œাঞ্চলের প্রায় ৮০ হেক্টর তলিয়ে গেছে। এর মাঝে নতুন গজানো প্রায় ২০ হেক্টর জমির বোরো ফসল আর ভাল থাকবে না। এগুলো সম্পূর্ণরুপে বিনষ্ট হয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন