ঠিকাদার ও মৎস্য অফিসারের যোগসাজস হাকালুকি হাওরে পোনা মাছ অবমুক্তের টাকা ফেরত গেল
আব্দুর রব॥ বড়লেখায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও মৎস্য অফিসারের ব্যর্থতায় হাকালুকি হাওরে পোনামাছ অবমুক্ত করণের পৌনে দুই লাখ টাকা ফেরৎ গেল। আপ্তার আলী মৎস্য খামার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার পোনামাছ অবমুক্ত করণে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠে। ৬৬৭ কেজি পোনা অবমুক্ত করার কথা থাকলেও জনৈক ছাত্রলীগ নেতা ও মৎস্য অফিসার মাত্র ১৩৩ কেজি (প্রত্যক্ষদর্শীর দাবী মাত্র ২০ কেজি) অবমুক্ত করে বরাদ্দের সম্পুর্ণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করেছিলেন।
মৎস্য অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য অধিদপ্তরের উন্নয়ন বাজেটের আওতাধীন পোনা অবমুক্তির টেন্ডার আহবানের আলোকে ২৮ আগস্ট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন ৩৫ ঠিকাদার। ২৯ আগস্ট লটারির মাধ্যমে পোনা সরবরাহের দায়িত্ব পায় আপ্তার আলী মৎস্য খামার। এর প্রেক্ষিতে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ টাকা মূল্যের রুই, কাতলা, মৃগেলের ৬৬৭ কেজি পোনা দেয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার পোনা অবমুক্তের পুর্ব নির্ধারিত দিন হুইপ শাহাব উদ্দিন এমপি অবমুক্তের উদ্বোধন করতে যান। সময় অতিবাহিত হওয়ার অনেক পর পোনা নিয়ে হাজির হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আপ্তার আলী। প্রতীকি উদ্বোধন হিসেবে সামান্য পোনা অবমুক্ত করে হুইপ ফিরে যাওয়ার পর মাত্র ২০ কেজি মাছ অবমুক্ত করে সম্পুর্ণ মাছ অবমুক্ত করার ঘোষনা দেয় ঠিকাদারের লোকজন। প্রত্যক্ষদর্শীরা টের পেয়ে বিষয়টি বিভিন্ন মহলে ফাঁস করায় মৎস্য অফিসার ও ঠিকাদারের লোকজন বেকায়দায় পড়ে যায়।
মৎস্য কর্মকর্তার দাবি ঠিকাদার ১৩৩.১০ গ্রাম পোনা মাছ অবমুক্ত করেছে। পরে ঠিকাদারের ব্যর্থতায় সিলেট বিভাগীয় মৎস্য অফিসের উপ-পরিচালক মোশারফ হোসেন অবশিষ্ট ৫৩৩.৯০ কেজি পোনার মূল্যের বরাদ্দ ফেরত প্রদানের সুপারিশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবি বলেন, ‘সরকার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে হাওরে পোনা অবমুক্তের বরাদ্দ দিয়েছে তা অসাধু ঠিকাদার ও মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা গিলে খাওয়ার চেষ্টা চালায়। অবশেষে ধরা পড়ায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা কোষাগারে ফেরত গেল।
এ ব্যাপারে জানতে ঠিকাদার আপ্তার আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান ছাত্রলীগ নেতা জুনেদের সাথে শেয়ারে তিনি টেন্ডার পেয়েছেন। পোনামাছ অবমুক্তের বিষয় সে দেখভাল করেছে। জুনেদ ও মৎস্য কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু ইউসুফ ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস ও বরাদ্দ লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে রাত আটটায় জানান, ঠিকাদারের ব্যর্থতায় ৫৩৩.৯০ কেজি পোনার বরাদ্দ মূল্য ফেরত গিয়েছে। ‘এ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকা ভূক্ত করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন