(ভিডিওসহ) ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হবে, দুনিয়ার কোন শক্তি নেই নির্বাচন বাতিল করার-মোহাম্মদ নাসিম
স্টাফ রিপোর্টার॥ সাহস থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হবে। দুনিয়ার কোনো শক্তি নেই সেই নির্বাচন বাতিল করার। সাহস থাকলে মাঠে আসুন, মাঠে হবে খেলা। মাঠ ছেড়ে পালাবেন না। না হলে খালি মাঠে গোল দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার ৪ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় নতুন করে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্বোধন শেষে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এই জুড়ীতে দাঁড়িয়ে বলে গেলাম, নির্বাচন হবে শেখ হাসিনার অধীনে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। সেই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের সবাই বিজয়ী হবে ইনশা আল্লাহ।’
বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথা বলি, জ্বালাও-পোড়াওয়ের কোনো চেষ্টা করবেন না, বিএনপি-জামায়াতের বন্ধুরা। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেন। কেউ কারো গায়ে হাত দেবে না। যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, জ্বালাও-পোড়াও করেন, তাহলে মনে রাখবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে। এ ব্যাপারে কোনো খাতির করা হবে না। নির্বাচন করবেন, ভোট যাকে ইচ্ছে দেবেন, কারচুপি করার কোনো সুযোগ নাই।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এই যে ক্যামেরা দেখছেন, ক্যামেরা কথা বলে। সারা বাংলাদেশে ক্যামেরা থাকবে, সাংবাদিক থাকবে, সবাই দেখবে কীভাবে ইলেকশন হচ্ছে। ভয় পান কেন? খেলা দেখে ভয় পেলে হবে না। আমরা এমন কোনো আইন করি নাই। ইলেকশন কমিশন যেভাবে বলবে তারা সেভাবে কাজ করবে। ভয় পান কেন? ইলেকশন হবে মাঠে। খেলা হবে মাঠে, ফেয়ারলি খেলা হবে মাঠে ইনশা আল্লাহ। যে জিতবে সে জিতবে। জনগণ যাকে ভোট দিবে সে জিতবে। ভয় পান কেন? নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত করবেন না, দয়া করে। যদি চক্রান্ত করেন, বাংলার মানুষ ক্ষমা করবে না কোনো দিন। নির্বাচন হবে, সুষ্ঠু হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তাকে মেনে নেব।’
‘২০১৪ সালে খালেদা জিয়ার দল মানুষ-পুলিশ হত্যা করে নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে মার্শাল ল’ থাকতো। নির্বাচনি ট্রেন মিস করলে আম-ছালা সবই যাবে। নির্বাচন ঠেকানোর সাধ্য কারও নেই।’
এলাকার দাবির প্রেক্ষিতে নাসিম বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগে মৌলভীবাজার মেডিক্যাল কলেজের কার্যক্রম শুরু হবে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপন হবে। জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স ও পর্যাপ্ত চিকিৎসকসহ চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হবে।
জাতীয় সংসদের হুইপ মোঃ শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও যুবলীগ নেতা রিংকু রঞ্জন দাস ও শেখরুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মতিন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাবুল কুমার সাহা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ মুহিত, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান, জুড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গুলশান আরা মিলি, কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বদরুল ইসলাম, জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মহিউদ্দিন আহমদ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনতার উদ্দেশে আরো বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসায় আজ আপনারা উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন। এখন ভোটের মাধ্যমে তা ফেরত দেওয়ার পালা। গত ১০ বছর শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অনেক দিয়েছেন। শোককে বুকে ধারণ করে একাত্তরের ঘাতক দালালদের বিচার করেছেন। বিগত কোনও সরকারই তাদের বিচার করেনি। এত কিছুর পরও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন। যার ফলে দু’মুঠো ভাত খেয়ে মানুষ সুখে আছে। খাদ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। মায়ের মমতা নিয়ে শেখ হাসিনা উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে নতুন নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় আরও ৭ হাজার ডাক্তার নিয়োগ হবে।
প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরে বড়লেখা উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আরেকটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন।
মন্তব্য করুন