ড. আব্দুস শহীদ কৃষি মন্ত্রী হয়ে কর্ম পরিকল্পনার স্বপ্নের কথা তুলে ধরায় বৃটেন থেকে মকিস মনসুরের অভিনন্দন
সালেহ আহমদ (স‘লিপক) : নতুন কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের সপ্তমবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় নিজের আগামীর কর্ম পরিকল্পনার স্বপ্নের কথা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেছেন, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় কৃষির মাধ্যমে। বাংলাদেশের মানুষ কৃষি নির্ভরশীল। কৃষকদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন চিন্তা করা যায় না। কৃষকের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগ থেকেই নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। বাংলাদেশের যেসব মানুষ বেকার তাদের কৃষিতে কাজে লাগাবো। পতিত জমি চাষের আওতায় আনবো। আমি উদ্যোগ নিয়ে কৃষি কাজে মানুষকে উৎসাহিত করবো।
তিনি বলেন, আমি নিজেই মাছ, ফল ও শাক-সবজি চাষ করি। দেশের কৃষি খাতকে ঢেলে সাজাতে আন্তরিকভাবে কাজ করবো। মন্ত্রণালয়ের চলমান কাজ এবং আগের কাজগুলো তদারকি করে দেখবো। কোথাও কোনো সংকট থাকলে সমাধানের চেষ্টা করবো। মাঠ পর্যায়ে ও বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের কার্যক্রম কেমন চলছে তা জানাবো। আমি সবার সহায়তায় কৃষিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তাদের অনেকেই মাঠে যান না অফিসে গালগল্প করে সময় কাটান। তারা যেন মাঠে যান, কৃষকদের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা আরও বাড়িয়ে সে বিষয়ে কাজ করব। মানুষকে কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করতে উঠান বৈঠক-কর্মশালা সহ নানা কর্মসূচি নেব। মানুষ যেন নিজেদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করেই সংসার চালাতে পারেন সে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো।
বৃটেন থেকে ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান মৌলভীবাজার জেলার সাবেক ছাত্রনেতা ও ইউকে ওয়েলস আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মকিস মনসুর ড. আব্দুস শহীদ এমপি কৃষি মন্ত্রী হয়ে আগামীর কর্ম পরিকল্পনার স্বপ্নের কথা তুলে ধরায় আন্তরিক অভিনন্দন ও মুজিবীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর প্রতি ২৫ লক্ষ মানুষের প্রত্যাশা মৌলভীবাজারে সরকারি মেডিকেল কলেজ, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, মৌলভীবাজার জেলায় পর্যটন খ্যাতে উন্নয়ন, শমসের নগর বিমানবন্দর চালু সহ মৌলভীবাজার জেলাকে উন্নয়নে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন।
এছাড়াও তিনি টানা চতুর্থ বারের মতো আওয়ামী লীগের বিজয় লাভের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস গড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ নির্বাচিত সকল এমপিদেরকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দেশে বিদেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
এখানে উল্লেখ্য যে, ড. আব্দুস শহীদ এমপি ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত টানা সাতবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সরকারের হুইপ, সরকার ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত এবং অনুমতি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ গণ মহাবিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন আব্দুস শহীদ। তিনি বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবং আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছাড়াও জাতীয় সংসদে প্যানেল স্পিকার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
দীর্ঘ ৫৩ বছর পর পূূর্ণ মন্ত্রী পেলো মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৪৯১টি ভোট পেয়ে টানা সাতবারের নির্বাচিত এমপি ড. মোঃ আব্দুস শহীদ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধায় কৃষিমন্ত্রী হিসেবে গণভবনে শপথ গ্রহণ করেছেন।
কৃষি মন্ত্রী হওয়ার খবরে মৌলভীবাজার-৪ আসন (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আনন্দের বন্যা বইছে। আনন্দ মিছিল মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উৎসবে মেতে ওঠেছেন। ১৯৮৪ সালে মৌলভীবাজার জেলা হিসেবে ঘোষণার পর থেকে এ আসনটিতে কেউ মন্ত্রীত্ব পাননি। অথচ স্বাধীনতার পর এ আসনটি টানা বিজয় ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মোঃ আব্দুস শহীদ।
মৌলভীবাজার-৪ আসনে মৌলভীবাজার জেলা ঘোষণার পর থেকে কখনো নৌকা প্রতীক পরাজিত হয়নি। এ আসনের পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায় জেলা ঘোষণার পর মৌলভীবাজার-৪ আসনে ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াছ দ্বিতীয়বারের মতো এবং ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস শহীদ একটানা সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
দীর্ঘ ৫৩ বছর পর আব্দুস শহীদকে পূর্ণ মন্ত্রী পেয়ে উন্নয়ন নিয়ে নতুন করে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন দুই উপজেলাবাসী। অনেকেই বলেন, এ আসন সহ মৌলভীবাজার জেলায় অতীতের চেয়ে আরও উন্নয়নের মাত্রা বাড়িয়ে দেবেন আবদুস শহীদ। এটি তার জন্য একটি বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন