ঢাকাবাসির কান্না-শাহজাহান খানের হাসি : দেশবাসির দাবী একটাই ঘাতকদের ফাঁসি

August 7, 2018,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ বাংলাদেশ-দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার একটি প্রাচীন সমৃদ্ধ ও সভ্য জনপদ। একটি রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের একটি লিখিত সংবিধান আছে। বাহাত্তোরের এই সংবিধান পৃথিবীর লিখিত সংবিধান সমূহের মধ্যে একটি উৎকৃষ্ট ও শ্রেষ্টতম মানবিক দলিল। একটি সংবিধান দেশের সকল আইনের আধার ও উৎস। বিগত সংসদটি বিতর্কিত, ভোটার বিহীন এবং অগ্রহনযোগ্য হলেও দেশে একটি সাংবিধানিক সরকার বিদ্যমান। সংবিধান মোতাবেক দেশে প্রচলিত আইন আদালত বিধি বিধান থাকলেও সুশাসন অনুপস্থিত। ন্যায় বিচার, আইনের শাসন এবং দেশে প্রচলিত আইন ও বিধি বিধানের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় ছাত্র, যুব ও গন অসন্তুষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে প্রচলিত আইন না মানা বেআইনী হলেও এই বেআইন ই এখন আইন হয়ে গেছে। ফলত জনজীবনে নেমে এসেছে সীমাহীন বিপর্য্যয় ও বিশৃঙ্খলা। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারনে আধুনিক অপরাধীগন লাই পেয়ে যাচ্ছেন। মাল্টি লেভেল মার্কেটিং এম.এল.এম এর নামে হলমার্ক, ইউনিপেইড টু, ডেস্টিনি ২০০০, বিসমিল্লা-গ্রুপ-বিনা বিসমিল্লাতে দেশ ও জাতির শত শত কোটি টাকা আত্বসাত করে কারও দন্ড হয়নি। ফরাছত আলীর এন.আর.বি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ম.খা. আলমগীরের ফার্মার্স ব্যাংক এবং রাষ্ট্রায়ত্ব বানিজ্যিক ব্যাংক গুলি ঋণ বন্টনের নামে লুন্ঠন করে ব্যাংক সমূহ এখন তারল্য সংকট ও গ্রাহকদের আস্থাহীনতায় আছে। ব্যাংক এর টাকা ও খনির কয়লা গায়েব হওয়ার-গায়েবী-সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিদ্ধস্থ, লন্ডভন্ড। খুন ও ধর্ষনেও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। দিল্লী ষ্টাইলে বাসে গনধর্ষন এর সংখ্যাও মাত্রা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাষান ও পাষন্ড ধর্ষকদের হাতে অসহায় নিষ্পাপ মানব শিশু ও রেহাই পাচ্ছেনা।
দেশ ও জাতির এই অসীম অনিয়ম, বিতিকিচ্চিরি বিশৃঙ্খলা, বেঙ্গাঁ এবং বেরাচেরার মাঝে দেশের পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য গন ভোগান্তি চুড়ান্ত আকার ধারন করেছে। দীর্ঘদিন যাবত দেশের পরিবহন সেক্টারে এই অনিয়ম ও নৈরাজ্য বিরাজ করছে। পরিবহন সেক্টারের গড ফাদার, আমলা, চামচা, চাঁদাবাজ, লুচ্চা ও লুটেরার দল মনে করেছেন দেশের সর্বত্রই যখন চলছে লুটতরাজ-লুটক্রেসী তখন তারা বাদ যাবেন কেন।Ī তাই তাদের ভাবখানা এই -“এসো ভাই-ডান বাম সকলে মিলে লুটে পুটে খাই”-। দেশের চিন্তাশীল সুশীল সমাজ, অনুসন্ধানী মিডিয়া, টিভির টক শো সমূহের বিজ্ঞ আলোচক-পর্য্যবেক্ষক-গবেষক-বিশেষজ্ঞ বৃন্দের অভিমত দেশের পরিবহন সেক্টার একাধিক গডফাদার-মাফিয়া চক্রের কাছে জিম্মি। গনপরিবহনের তদারকি ও এতদসংক্রান্ত সংস্থা- বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি- বি.আর.টি.এ এর দূর্নীতি, দালালদের দৌরাত্বে যাত্রী সাধারন গন মানুষ অসহায়। ফিটনেস বিহীন যানবাহন লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ চালকের বাহাদুরি দৌরাত্ব ও আনাড়িপনায় ইতিপূর্বে সড়ক দূর্ঘটনা এবং প্রাণহানির সংখ্যা মারাত্মক আকারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইতিপূর্বে সড় দূর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছেন মরহুম অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী, ভাষা সৈনিক এম. সাইফুর রহমান, সুনামগঞ্জ পৌরসভার নন্দিত মেয়র প্রেম ও প্রকৃতির কবি মুমিনুল মউজদীন ও তার পতিœ তাহেরা চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক জগলুল আহমদ চৌধুরী, সৃজনশীল চলচ্চিত্র নির্ম্মাতা তারেক মাসুদ ও মিশুক মনির এবং মীরের সরাইর একদল কিশোর বিদার্থী। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্টাতা ও প্রাণ পুরুষ চিত্রশিল্পি ইলিয়াস কাঞ্চন সহ সুশীল সমাজ-মিডিয়া মহল প্রতিবাদের ঝড় তুলেন- সড়ক দূর্ঘটনার নামে গনহত্যা বন্দের দাবী জানান। দেশব্যাপী আওয়াজ উঠে ফিটনেস বিহীণ লক্কর ঝক্কর মার্কা যানবাহন এবং লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ চালকদের দৌরাত্ব বন্ধ করতে হবে- ঘাতকদের ফাসি দিতে হবে।
সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যো জনিত বর্তমানে দেশে প্রচলিত আইনের ধারাটি হালকা, জামিন যোগ্য। সড়ক দূর্ঘটনায় সাধারনতঃ দুইটি ধারায় মামলা হয়। শুধুমাত্র বেপরোওয়া গাড়ী চালালে বাঃ দঃ বিঃ আইনের ২৭৯ ধারা এবং দূর্ঘটনাজনিত কারনে মৃত্যো হলে ৩০৪-বি- ধারায়। আইন মোতাবেক দঃ বিঃ ২৭৯ এবং ৩০৪ -বি- এর ব্যাখ্যা হল: ধারা ২৭৯: Driving or riding on a public way so roughly or negligently as to endanger human life etc bail able, imprisonment of either description for 1-(3) year fine which way subject to the minimum 1,000 taka extended to 5,000 or both. any magistrate.

304-B- causing death by rush driving or riding on a public way bail able, imprisonment of either description for 11 (3) years or fine, or both metropolitan magistrate or magistrate 1st class.এই দুই ধারায় মামলা হওয়র পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আই.অ মামলাটি তদন্ত করেন, ঘটনাস্থলের স্ক্যেচ ম্যাপ অংকন করেন, মৃতের সুরত হাল তৈরী করেন, পোস্ট মর্টেম করান, ফৌজদারী কার্য্যবিধি আইনের ১৬১ ধারার বিধান মোতাবেক সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহন করেন, মামলার প্রাথমিক সত্যতা প্রামনিত হলে ফৌজদারী কার্য্যবিধি আইনের ১৭৩ ধারার বিধান মোতাবেক পুলিশ রিপোর্ট-চার্জশীট দাখিল করেন। এখানেই তার দায়িত্ব শেষ। এই জাতীয় মামলা যেহেতু অপরাধ জামিন যোগ্য সেহেতু আসামী ফৌজদারী কার্য্যবিধি আইনের ৪৯৬ ধারার বিধান মোতাবেক অধিকার হিসাবে জামিন যোগ্য ধারায় জামিন প্রাপ্ত হন। জামিন নিয়েই সেই যে যান আর দেখা মেলেনা। সড়ক দূর্ঘটনাটি রাস্থায় বিধায় চলন্ত বাসের যাত্রী কেহই স্বাক্ষী দিতে আসেন না, কেউ তদবির তালাবিও করেন না, একদিন বিবাদী বেকসুর খালাস। ইতিপূর্বে যখন দেশব্যাপী দাবী উঠল দঃ বিঃ ৩০৪ -বি- সংশোধন অত্যাবশ্যক। আমি একজন পেশাদার আইনজীবী এবং কলামিষ্ট হিসাবে পত্র পত্রিকায় কলাম লিখলাম। আমার জেলা বারের বার্ষিক নৈশ ভোজ সভায় ভোজ সভার প্রধান অতিথি বাংলাদেশের তৎকালীন মান্যবর প্রধান বিচারপতি মিঃ জাষ্টিস সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কাছে বারের পক্ষ থেকে বক্তব্য প্রদান কালে আইনের কতেক ধারা সংস্কার ও সংশোধনীর দাবী জনিয়েছিলাম। মান্যবর প্রধান বিচারপতি মিঃ জাষ্টিস সিনহা আমার দাবী সঙ্গেঁ নীতিগত ভাবে ঐক্যমত পোষন করে বলেছিলেন “মিঃ মুজিব আই ওয়ান্ট টু চেইঞ্জ দি হউল সি.আর.পি.সি বাট আই এ্যম আনডান।” তখন আইন পরিবর্তনের একটি আইনী প্রক্রিয়া শুরু হলেও নৌমন্ত্রী- শ্রমিক নেতা শাহজাহান খানের বাগড়া, এক গুয়েমী এবং শ্রমিকদের পক্ষাবলম্বনের কারনে আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক আর এগুতে পারেন নি। অদক্ষ চালকদের পক্ষাবলম্বন করে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান তখন গরু ছাগলদের মার্কা ও চিহ্ন দেখেও গাড়ী চালানো যায় বলে আইন ও যুক্তিহীন বক্তব্য প্রদান করেছিলেন।
নৌমন্ত্রী-শ্রমিক নেতা শাহজাহান খান সাহেবের আস্কারা পেয়ে অদক্ষ ও লাইসেন্স বিহীন গাড়ীর চালক দেশ জাতি ও যাত্রী সাধারনের সঙ্গেঁ মস্করা করছেন, দূর্ঘটনার নামে মানুষ হত্যা করে- কুচ পরোওয়া নেই- ভাব প্রদর্শন করতঃ মউজে বগল বাজাচ্ছেন আর বেহায়া, বেশরম ও বেলেহাজের মত মনের সুখে হাসছেন।
সড়ক দূর্ঘটনা জনিত মৃত্যোর মিছিলের জোড়ালাশ- বিমানবন্দর সড়কের শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের ছাত্রী মিম এবং ছাত্র আব্দুল করিম জাবালে নূর পরিবহনের শিকার। উভয় শিক্ষার্থীকে জাবালে নুর পরিবহনের একটি বাস তাদেরকে চাপা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই দুই শিক্ষার্থী হত্যায় তাদের সহপাঠি-স্বজনগন ফুসে উঠে প্রতিবাদে রাস্থায় নামেন। সাম্প্রতিক কালে নির্দলীয় ছাত্র আন্দোলন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। অতি সম্প্রতি কোটা সংস্কারের দাবীতে ছাত্র সমাজের অদলীয় আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারন করেছিল। নির্দলীয় আন্দোলনের ব্যাপকতা ও সাফল্য সাধারন ছাত্র সমাজকে অফুরান প্রেরনা যোগায়। সাম্প্রতিক এই জোড়া খুনে ঢাকাবাসি দেশ ও জাতিকে আন্দোলিত করে। স্বজন-সহপাঠীর অকাল ও আকস্মিক মৃত্যোতে রাস্তায় নামেন কোমলমতি কিশোর-কিশোরীগন। আবার আপত্তিকর হাসি হেসে নেতিবাচক মন্তব্য করেন পরিবহন শ্রমিক নেতা নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান। তার এই হাসি অশ্লীল না হলেও অশালীন ছিল। আপত্তিকর অনাকাঙ্খিত ও অনাভিপ্রেত ছিল। দূর্ঘটনা তার মন্ত্রনালয়াধীন বিষয় নয়। বিষয়টি সড়ক ও যোগাযোগ এবং শ্রম জনশক্তি মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত ব্যাপার। শাসকদলের খোদ মহাসচিব স্বয়ং সড়ক মন্ত্রী। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্য্যকরি সভাপতি শাহজাহান খান সরকারের মন্ত্রী। পদটি সাংবিধানিক। শফথ নেয়া। সরকার তথা জনগনের ট্যেক্সের টাকার বেতন ভাতা নিচ্ছেন সার্বক্ষনিক সরকারি পুলিশ প্রহরা ভোগ করছেন, সরকারি বাড়িতে আছেন, একজন চব্বিশ ঘন্টার পূর্ন মন্ত্রী তার শ্রমিক সংঘটন এবং শ্রমিক সমাজের পক্ষে কথা বলতে, ওকালতি করতে পারেন না, রাগ অনুরাগ থেকে বিরত থেকে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। তা না করে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান তার মন্ত্রনালয় ও দায়িত্ব বহির্ভূত ভাবে জনস্বার্থের পরিপন্থী কাজ করছেন কথা বলছেন, মনের সুখে হেসে হেনে বাস চালক-ঘাতকদের হাতে নিহত হতভাগ্যদের রুহের সঙ্গেঁ পরিহাস করছেন-বিদেহী আত্বাকে অপমান করছেন। শ্রমিক নেতা শাহজাহান খান ইদানিং- মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এর নামে ও জাতিকে নসিহত করছেন। মালিক-শ্রমিক ঐক্যের পক্ষে অভিনব ফতোয়া দিচ্ছেন। একদার বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী ও মার্কসবাদ লেনিন বাদী তাত্বিক শাহজাহান খান জানলেও হয়ত এখন মানেন না যে মালিক আর শ্রমিক এর স্বার্থ এক নয়, দ্বিমুখী। বর্ত্তমান প্রজন্ম হয়ত জানেন না যে একাত্তোরের বীর যোদ্ধা শাহজাহান খান বাহাত্তোরে বাংলাদেশে শ্রেনী সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে সামাজিক বিপ্লবের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্টার লক্ষে গঠিত জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল -জাসদের- প্রতিষ্টাকালীন প্রভাবশালী নেতা এবং তার জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
সম্প্রতি মন্ত্রী শাহজাহানখানের অশ্লীল হাসি নিয়ে সর্বত্র তুমুল বিরুপ সমালোচনা হচ্ছে। ঘরে-বাইরে তিনি বিতর্কিত। খোদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে সংযত হয়ে কথা বলার কথা বলেছেন। তাহলে তিনি এইদিন অসংযতভাবে অসংলগ্ন কথাবর্তাই বলেছেন। ১৪ দলে তার বক্তব্য ও হাসি সমালোচিত হয়েছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিষ্ট পীর হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনের উপসম্পাদকীয় কলামে যুৎসহ জবাব দিয়েছেন। বি.এন.পি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সি.পি.বি তার পদত্যাগ দাবী করেছেন। অপরদিকে শাহজাহান খানের নির্বাচনী এলাকায় শ্রমিক-ছাত্র-যুবক সশস্ত্র শোডাউন করে শ্লোগান দিয়েছে- শাহ জাহান খনের কিছু হলে জ¦লবে আগুন ঘরে ঘরে। জাতীয় দৈনিক ইনকিলাব এই নিয়ে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করেছেন। দেশে প্রচলিত আইন মোতাবেক অস্ত্রধারী মিছিলকারীর বিরুদ্ধে ১৯-এ অস্ত্র আইনের মামলা ও আসামী গ্রেপ্তার হওয়ার কথা। কিন্তু অস্ত্রবাজ যেহেতু শাহজাহান খান পন্থী সেহেতু পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করবেন। আইন সকলের জন্য সমান-এটাত কথার কথা- বাস্তবের বিষয় নয়। সাংবাদিকদের অস্ত্র মিছিল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
পক্ষান্তরে ঢাকায় কোমলমতি ছাত্র সমাজের রাজপথে অবস্থান এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রনের দায়িত্বভার নিলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে এক নজির বিহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্র সমাজ নয় দফা কর্ম্মসুচী ঘোষনা করে ঢাকা শহরের রাজপথ নিয়ন্ত্রন এবং যানবাহন চেকিং এর দায়িত্বভার গ্রহন করেন- যা থেকে মন্ত্রী পুলিশ ও আমলারাও বাদ যান নি। -“রাষ্ট্র যন্ত্রের মেরামতের কাজ চলছে বলে ব্যেনার লাগিয়েছেন বিক্ষব্ধ ছাত্র সমাজ।-” অবস্থা বেগতিক ও চুড়ান্ত আকার ধারন করলে মন্ত্রী শাহজাহান খান দুঃখ প্রকাশ, ক্ষমা প্রার্থনা করতঃ বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। সরকারের প্রধান মন্ত্রী স্বয়ং ছাত্র সমাজের দাবী মেনে নেন। নিহত দুই বিদ্যার্থীর পরিবারকে বিশ লক্ষ টাকা করে সঞ্চয়পত্র অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহত দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক দ্বয় ছাত্র সমাজকে রাজ পথ ছেড়ে গৃহে ফেরার দাবী জানালে সরকারের অসচ্চতা ও অস্পষ্টতা এবং মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীগনকে রাজাকারের বাচ্চা গালিগালাজে বর্ত্তমান আন্দোলন কারিদের মনে সন্দেহ আছে বলেই প্রতীয়মান হয়। একদিকে সরকার আর্থীক অনুদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্টনকে বাস প্রদান করলেও শ্রমিক নেতা নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের অদৃশ্য ইঙ্গিঁতে সমগ্র বাংলাদেশ অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট নূতন সমস্যা এবং গন দূর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাত্রদের নদফা দাবীর মধ্যে শুধুমাত্র দুই দফা দুটি ধারা আইন সংশোধন সংক্রান্ত বাকি সাত দফা কোন সমস্যা নয়। দঃ বিঃ ২৭৯ সংশোধন করে দশবছরের কারাদন্ড ও জরিমানা এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য্য এবং ৩০৪-বি- সংশোধনী এনে মৃত্যোদন্ড ও জেলা জজ কর্তৃক বিচার্য্য এবং উভয় ধারাই অজামিনযোগ্য করলে বিদ্যমান সমস্যান্ত সংকটের সমাধান সম্ভব। এক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতা একান্ত অপরিহার্য্য।
৪ আগষ্ট জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো প্রথম পৃষ্টায় লিড নিউজঃ প্রতিবেদক সামছুর রহমান একটি তথ্য ও তত্তবহুল চিত্র তুলে ধরেছেন। সংবাদের শিরোনাম সাড়ে তিন বছরে পচিশ হাজার প্রাণহানি, প্রতিবেদক আরো বলেছেন সড়ক দূর্ঘটনায় বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমান চল্লিশ হাজার কোটি টাকা দেশ বছরে জি.ডি.পি র ২-৩% অর্থ হারাচ্ছে। যাত্রী কল্যান সমিতি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় সড়ক দূর্ঘটনা গবেষনা ইনস্টিটিউট এর তথ্য মতে দেশে সড়ক দূর্ঘটনার প্রধান কারন চালকের বেপরোওয়া মনোভাব ৩৭%, অতিরিক্ত গতি ৫৩% এবং মাত্র ১০% অন্যান্য কারন। দূঃখ ও দূর্ভাগ্যজনকভাবে রাজধানীর নিহতদের ৭২% ই নিরীহ পথচারি।
এই ভয়াবহ চিত্র থেকে পরিত্রান এবং জনজীবনে স্বস্থি ও গনপরিবহনে স্বাভাবিক অবস্থা জনজরুরী। কোমলমতি কিশোর কিশোরীরর নয় দফা নিয়ে নয়-ছয় করা জাতির জন্য কল্যানকর ও মঙ্গলজনক হবেনা।
[লেখক: ষাটের দশকের সাংবাদিক। মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাই কোর্ট। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ও জেলা আইনজীবী সমিতি।]

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com