তৃনমুল থেকে কেন্দ্রীয় নেতা কমলগঞ্জের অধ্যাপক রফিকুর রহমান
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর ২০তম জাতীয় কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটিতে তৃনমুলের যে কজন নেতা স্থান পেয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আলহাজ্ব অধ্যাপক রফিকুর রহমান। খাঁটি মফস্বল থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া রফিকুর রহমান এর রয়েছে বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। তিনি ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারী কমলগঞ্জ উপজেলার সে সময়ের আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান কমলগঞ্জ পৌর এলাকার নসরতপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবার নাম মরহুম তেরা মিয়া। মায়ের নাম মৃত জমিলা খাতুন। কমলগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শেষে কমলগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, সিলেট মদনমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএ উত্তীর্ন হন। পরে চট্রগাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম,কম সম্পন্ন করেন। ছাত্রবস্থায় রফিকুর রহমান রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৭ সালে সিলেট মদনমোহন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরের বছর ১৯৬৮ সালে সিলেট সদর মহকুমা ছাত্রলীগ এর সভাপতির দায়িত্ব নেন। ছাত্রনেতা হিসেবে অংশগ্রহন করেন ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনে। বঙ্গবন্ধু উত্থাপতি ছয় দফা আন্দোলনে রফিকুর রহমান ছাত্রনেতা হিসেবে সক্রিয় ভাবে ছিলেন রাজপথে। ১৯৬৯ সালের গনআন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সিলেট সদরে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সামনে থেকে কাজ করেন। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন নিজের জীবন বাজি রেখে।
দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে সময়ের সাহসী যুবক হিসেবে সে সময়ের আওয়ামীলীগ এম.পি মরহুম মোহাম্মদ ইলিয়াস এর নেতৃত্বে কমলগঞ্জ কলেজ প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য অবদান রাখেন। ১৯৭৫ সাল থেকে কমলগঞ্জ কলেজে শুরু করেন অধ্যাপনা। ১৯৭৭ সালে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ এর প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ১ম বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। রফিকুর রহমান মৌলভীবাজার জেলা কৃষকলীগ সভাপতি, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ সদস্য, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগ কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে নির্বাচিত হন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক। স্থানীয় পর্যায় আওয়ামী রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি ধৈর্য্যরে এক মূর্ত প্রতিক। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হলেও রাজনীতির মাঠে ছিলেন সরব। দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের সাথে রাখেন সম্পর্ক। ২০১১ সালে কয়েক মাস কমলগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
একজন গুনী ব্যক্তি, প্রজ্ঞাবান রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে শেখ হাসিনা তাকে মূল্যায়িত করায় তার রাজনৈতিক ত্যাগ এখন সফল। ১/১১ এর সময় কিছু দিন তিনি মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেন। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের দমন-পীড়নের সময় রফিকুর রহমান স্থানীয় ভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি তিনি একজন সর্বজন শ্রদ্বেয় ব্যক্তি। শিক্ষাবিদ হিসেবে এলাকার সর্বত্র রয়েছে তার পরিচিতি। তিনি কমলগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির একাধিক বারের সভাপতি। কমলগঞ্জের আবাল বৃদ্ধ বনিতা তাকে প্রফেসার রফিক হিসেবেই চিনে। তিনি একজন অতিথিপরায়ন নেতা। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ত্যাগ এর মূল্যায়ন হওয়ায় উৎফুল¬ পুরো মৌলভীবাজার জেলাবাসী। কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে আওয়ামী পরিবারসহ দেশবাসী তার আদর, স্নেহ, ভালবাসায় সিক্ত হবে এটাই সবার প্রত্যাশা। তার যোগ্য নেতৃত্বে উপকৃত হবে দল, দেশ। তিনি প্রমান রাখবেন বঙ্গকন্যার বিশ্বাসের। তার রাজনৈতিক আলোয় আলোকিত হবে কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার। জাতীয় রাজনীতিতে তিনি মফস্বল কমলগঞ্জকে তুলে ধরবেন আপন মহিমায়।
মন্তব্য করুন