ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির

July 2, 2018,

চৌধুরী ভাস্কর হোম॥ ছোট সীমান্ত রাজ্য ভারতের ত্রিপুরা। উদয়পুর দক্ষিণ ত্রিপুরার অন্যতম প্রধান শহর। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে এর দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। আর উদয়পুর শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরটি অবস্থিত। মহারাজা ধন্যমাণিক্য ১৫০১ সালে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। মাতা ত্রিপুরেশ্বরীকে (মা কালী) এই মন্দিরে পূজা দেওয়া হয়। এখানে সতীর ডান পা পড়েছিলো। কষ্টিপাথরের তৈরি এখানকার দেবীমূর্তি খুবই জাগ্রত। হিন্দুদের পবিত্র ৫১টি পীঠের একটি মনে করা হয় এই মন্দিরটিকে। মন্দিরের পাশে বিশাল কল্যাণ সাগর নামে একটি পুকুর রয়েছে। তবে প্রাচীন এই মন্দিরটিকে ত্রিপুরা সুন্দরী কিংবা ত্রিপুরেশ্বরী হিসেবেই বলে থাকেন অনেকে। আর এই মন্দিরে বাংলাদেশের পূণ্যার্থীদের পদচারণা থাকে প্রতিটা মুহুর্তে।

কথিত আছে, সতীদেহ কাঁধে নিয়ে মহাদেব যখন ত্রিলোকে তান্ডব নৃত্য শুরু করেন তখন দেবাবিদেবকে শান্ত করার জন্য সব দেবতার স্তবকের মাধ্যমে সতীদেহ ছেদ করা হয়। ওই অংশগুলো যে স্থানে পড়ে সেসব স্থানকে কেদ্র করে এক একটি মহাতীর্থ গড়ে উঠে। আর সতীর মনবাঞ্ছা পূরণের জন্য শিবও বিভিন্ন নামে প্রতিটি তীর্থে বিভিন্ন রূপে আর্বিভাব হয়েছেন। ত্রিপুরায় তিনি (শিব) ভৈরত ত্রিপুরেশ নামে অবতীর্ণ আছেন। ত্রিপুরায় অন্যতম এ মন্দির দিন-রাত দেশ-বিদেশের পূণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে।

বিশাল কল্যাণ সাগর পুকুর:  প্রাচীন এই পুকুর ঘাটে মাছ ও বিশাল আকৃতির কচ্ছপের দারুণ প্রেম। তাদের দেখতে ভক্তদের ভিড়। যতœ করে খাবার দিচ্ছে কেউ। কেউবা ভক্তি ভরে একটু খানি ছুঁয়ে কচ্ছপের পিঠে করছেন প্রণাম। নরম খোলের এই কচ্ছপ প্রজাতিটির নাম বোষ্টমী। মাতাবাড়ির এই পুকুর ছাড়া আর কোথাও নাকি এখন আর দেখা মেলে না বোষ্টমী কচ্ছপের।  ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরের এই পুকুরেই কেবল টিকে আছে বোষ্টমী কচ্ছপের গুটিকয় প্রতিনিধি।

কিভাবে যাবেন: উদয়পুর এবং ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ে-৪৪-এ সংযুক্ত। রাজধানী আগরতলা থেকে সরাসরি বাসে উদয়পুর যাওয়া যায় কিংবা গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যায।

ছোট সীমান্ত রাজ্য ত্রিপুরা। ত্রিপুরা রাজ্যের শতকরা ৬০ ভাগ এলাকাজুড়ে রয়েছে সবুজ অরণ্য পাহাড়। বাকি অংশ পাহাড়ি সমতল। আগরতলা এক আপদমস্তক বাঙালি শহর। এখানে আছে কুঞ্জবন প্রাসাদ, মহারাজা বীরবিক্রম কলেজ, স্টেক মিউজিয়াম, গেদু মিয়ার মসজিদ, জগন্নাথ মন্দির, আনন্দময়ী মায়ের আশ্রম আর বেনুবন বৌদ্ধবিহারে। দর্শণীয় এসব এলাকা ঘুরতে ঘুরতেই শেষ হয়ে যাবে কয়েকটি দিন।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com