দাদীর ফলের বাগানে
সায়েকা আহমদ॥
পাপা বললেন, ‘ফলের দোকান থেকে ফল কিনে খাওয়া আর আত্মহত্যা করা একই কথা।’
আম্মু বললেন, ‘কিন্তু ফলের সিজন চলে গেলে তো আর ফল খাওয়া যাবে না!’
ফল খাওয়া নিয়ে আব্বু-আম্মুর অনেক তর্ক-বিতর্ক হল। অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হল, গ্রীষ্মের ছুটিতে আমরা সবাই মিলে দাদীর বাড়িতে চলে যাব। দাদীর বাড়ি শমশেরনগর। সেখানে প্রচুর ফলের গাছ আছে।
শমশেরনগর রেলস্টেশনের কাছেই দাদীর বাসা। বাসাও বলা যায়, বাড়িও বলা যায়। কারণ ব্যস্ত শহরের ঠিক মাঝখানে দাদীর বাসাটি। বাসার একটু সামনেই বিএএফ শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ। বাসাটি অনেক বড়। ভেতরে প্রচুর ফলের গাছ আছে। পুকুরও আছে। আমরা যাবার সাথে সাথেই দাদী আমাদেরকে আমের জুস এবং জামের জুস দিয়ে আপ্যায়ন করলেন। আমি আমের জুস খেয়েছি। জামের জুস খেলাম এই প্রথম। তারপর দাদী আমাদেরকে দিলেন সুস্বাদু লিচু। অসম্ভব মিষ্টি। এরপর নিয়ে এলেন কাঁঠাল। ফল খেতে খেতে আমার পেট ভরে গেল।
বিকেলে দাদীর ফলের বাগানে গিয়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বাসার পেছন দিকে শুধু গাছ আর গাছ। একটি কাঠবাদামের গাছও দেখালেন দাদী। আমি এর আগে কাঠবাদামের গাছ দেখিনি। আমার ছোট চাচা নারকেল গাছ থেকে ডাব পেড়ে আনলেন। প্রচন্ড গরমে ডাবের সুস্বাদু মিষ্টি পানি পান করে পুরো শরীরটা শীতল হয়ে গেল। শরীরের হারানো শক্তিও ফিরে পেলাম।
দাদীর বাসায় এক সপ্তাহ থেকে আমার ফল খাবার সখটা মিটে গেল। হরেক রকম ফল খেয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এবার বাসায় গিয়ে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগাবো। পাপাকে আর কখনো ফরমালিন দেয়া ফল আনতে বলব না। কারণ ফরমালিন মেশানো আম খেয়ে অসুস্থ হয়ে আমার বড় মামা এক সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন। আসুন সবাই মিলে বেশি করে ফলের গাছ লাগাই। নিজের গাছের সুস্বাদু ও ফরমালিনমুক্ত ফল খাই। দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাই।
[সায়েকা আহমদ, ৪র্থ শ্রেণি, বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।]
মন্তব্য করুন