(ভিডিওসহ) দেশের গনতন্ত্র এখন কার্যত বন্দীদশায়-ডাঃ এ জেডএম জাহিদ হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার॥ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ এ জেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিগত চৌদ্দবছর আমাদের দলের শত শত নেতাকর্মী আওয়ামী নির্যাতনে কেউ গুম হয়েছে, কেউ নিহত হয়েছে, কেউ শহীদ হয়েছে, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। যারা গুম হয়েছেন,আমরা জানি না, তারা কেমন আছেন। আমরা তাদের পরিবারের কাছে নিঃশর্ত ফেরত চাই। যার গুম হয়েছে,তাদের আত্মর মাগফেরাতক কামনা করি। আর যারা আহত হয়ে আজকে যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের সু চিকিৎসা চাচ্ছি। অন্য দিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ লক্ষ মামলায় ৭৫ লক্ষ আসামী আমরা। আমাদের সাতশতর উপরে নেতাকর্মী গুম।
তিনি বলেন,আওয়ামীলীগ সব সময়ই নিজের দলের নেতাকর্মীদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে। আর বিএনপিযখনই ক্ষমতায় এসেছে তখন জনগনের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে। এজন্যই বিএনপি এদেশের মানুষের কাছে এতো জনপ্রিয় একটা দল।
তিনি বলেন, দেশে এখন ক্রিকেট খেলারমতো দিবা রাত্রের ভোট হয়। যার জন্য জনগন দেখে যে তাদের আর ভোট দেয়ার প্রয়োজন নাই। ইলেকশনের দিনের ভোট আগের দিন রাত্রে হয়ে যায়। জনগনের ভোট দেখা যায় প্রশাসন,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে এবং আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাই ভোট দিয়ে দেয়। যার জন্যই জনগণ আস্তে আস্তে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যায় না। এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি তাদের আর ন্যুনতম আস্থা নেই। ভোটের প্রতিও আস্থা নেই।
গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের দলকে যেমন সুসংগঠিত করা দরকার তেমনি দেশের মানুষের অবাধ ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার।
তিনি বলেন, দেশে আজকে কথা বলার বাক স্বাধীনতা নেই। বিএনপি যদি সভা সমাবেশ করতে চায় তাতে বাধা দেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামীলীগের সমাবেশে কেউ বাধা দিচ্ছে না। দেশের গনতন্ত্র এখন কার্যত বন্দীদশায়। কাজীর গরু খাতায় আছে গোয়ালে নেই। এরকম হচ্ছে এখন বাংলাদেশের গনতন্ত্রের অবস্থা। এমন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে রাজপথে অধিকার আদায়ের জন্য নামতে হবে। মাঠে নামতে হলে আগে দলকে তৃণমূলকে আগে সাংগঠনিকভাবে মজবুত করতে হবে। ওর্য়াড, ইউনিয়ন, থানা, জেলা ও কেন্দ্র পর্যন্ত সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি ও সকল অংগ সংগঠনের সকল ইউনিট কমিটি গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে দেশের জনগনের ভোটাধিকার ফেরত দেয়া যাবে। দেশের গনতন্ত ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি আরও বলেন,আওয়ামীলীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে,বিএনপির সেখানে সার্থকতা রয়েছে। আওয়ামীলীগ এই কারণেই বিএনপিকে পরশ্রী কাতরতার চোখে দেখে এবং বিএনপির সর্ম্পকে সমালোচনা করে। বিএনপি ও জিয়া পরিবার একটি অপরটির পরিপূরক। তাই বিএনপি কে ধ্বংস করতে হলে আগে জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করতে হবে। সেই জন্যই ফ্যাসিট আওয়ামীলীগ সরকার বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে,দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানে বিরুদ্ধে অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এতো এতো ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে।
তিনি বলেন, এই সরকার তাদের চলতে ফিরতে তাদের ভয় একটাই জিয়া পরিবার আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। তাই সকাল বিকেল তাদের নেতারা বিএনপি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা অবিরত বলেই যাচ্ছে। তাদেও এই মিথ্যার ফুলঝুড়ি এদেশের মানুষ আর বিশ^াস করে না। মামলা হামলা করে দেশের মানুষকে জিম্মিদশা রেখেছে। সে কারণে সত্য কথা বলতেও মানুষ ভয় পাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ২৪ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাহারমর্দানে প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের বাড়ীতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষীক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আলহাজ মোঃ বদরুল আলমের সভাপতিত্বে উক্ত সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি এম নাসের রহমান। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফখরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ফয়জুল করিম ময়ুন, সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান মিজান, সহ সভাপতি রেজিনা নাসের, সহ-সভাপতি এম এ মুকিত, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ মতিন বকস, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ¦ল, জেলা স্বেচ্ছসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুক্তাদির রাজু, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রসিক, জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা আব্দুল হেকিম, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক শামীম আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান। এছাড়াও জেলা বিএনপিসহ অংগসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কাউন্সিলে অংশ নেন।
সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা ও উপজেলা বিএনপির উপস্থিতিতে ও উপজেলা ১২টি ইউনিয়নের কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে প্রবীন বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক কে সভাপতি ফখরুল ইসলামকে সিনিয়র সভাপতি, মিজানুর রহমান নিজামকে সাধারণ সম্পাদক ও মোঃ শফিউর রহমান সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে নাম ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাছের রহমান। উক্ত কমিটি সকল ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বিগতদিনের আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহনকারী ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ১০১ সদস্য কমিটি গঠন করার জন্য জেলা সভাপতি নবাগত নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন