দৈনিক মজুরী বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন দাবিতে রাজনগরে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালন
শংকর দুলাল দেব॥ রাজনগরে চা’বাগান শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতী পালন করা হয়েছে। ৯ আগষ্ট মঙ্গলবার রাজনগরের ১২ টি বাগানে ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে অধিকার বঞ্চিত চা’শ্রমিকরা। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে ৭টি ভ্যালি এবং এর অন্তর্গত ২৩২টি বাগান পঞ্চায়েত গুলো এ কর্মসুচি পালন করছে।
বাংলাদেশ চা’শ্রমিক ইউনিয়ন ও বিভিন্ন বাগান পঞ্চায়েত সূত্রে জানাযায়, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে অধিকার বঞ্চিত শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে ৯ আগষ্ট মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্য়ন্ত ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে। কর্মবিরতি পালনের সময় ‘রুটি রুজির আন্দোলন চলবেই চলবে’ সহ বিভিন্ন ধরনের সেøাগান সহকারে মিছিল-সমাবেশ করে চা শ্রমিকরা। শ্রমিকদের দাবি ও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চা শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন এবং চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-সংসদের মধ্যে সর্বশেষ চুক্তি সম্পাদন হয় বিগত ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর। দুই বছর মেয়াদের এ চুক্তি অনুযায়ী ওই সময় শ্রমিকদেও দৈনিক মজুরী নির্ধারণ হয় ১২০টাকা। এখনও তা বহাল রয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর দৈনিক মজুরি ৩’শ টাকা, যথা সময়ে গৃহ নির্মাণ, ছুটির দিনে মজুরী প্রদান, পর্যাপ্ত শিক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা প্রদান সহ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে। দাবি গুলো নিয়ে চা-বাগান মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা একাধিক বৈঠক করলেও আশানুরোপ কোনো ফলাফল হয়নি। এতে চা-শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোসের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশের চা-শিল্পাঞ্চলের ৭টি ভ্যালি এবং পঞ্চায়েত কমিটি গুলো চা-বাগান গুলোতে ৯ আগষ্ট মঙ্গলবার ২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত শ্রমিকেরা কাজে যোগ নাদিয়ে মিছিল সমাবেশ করেন। রাজনগরের চাঁনভাগ চা বাগানে কর্মবিরতি পালনের সময় বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মানিক লাল বাউড়ীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পঞ্চায়েত সম্পাদক আব্দুল কাদির, শ্রমিক সর্দার দয়াল ঠাকুর, শ্রমিক নেতা মোঃ খালেক, রাজেন কুর্মি, আব্দুল হামিদ প্রমুখ। ম্যাথিউড়া চা বাগানে কর্মবিরতির সময় বক্তব্য রাখেন, পঞ্চায়েত সভাপতি সুগ্রীম গৌড়, রামলাল রবিদাশ, বাবুলাল গৌড়, সমরু সালিয়া, আবুল মিয়া প্রমুখ। এ ছাড়া উপজেলার ১২টি চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ চা’শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সমাপাদক নৃপেন পাল ও কোষাধ্যক্ষ পরেশ কালিন্দী জানান, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে চা’শ্রমিকদের দৈনিক মজুরী ৩’শ টাকা বৃদ্ধি, শ্রমিকদের গৃহ নির্মাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুবিধা সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে মালিক পক্ষের সাথে কয়েক দফা কথা হলেও সন্তোষজনক কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। তারা বলেন, মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-সংসদের প্রতি আমাদের দাবিগুলো নিঃশর্ত মেনে নেয়ার জোর দাবি জানাই। অন্যতায় সম্ভাবনাময় চা শিল্পের উপর নেতিবাচক কোন প্রভাব পড়লে এর দায় মালিক পক্ষকেই নিতে হবে।
মন্তব্য করুন