নির্বাচনী সহিংসতার সন্ত্রাসী ধরতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম : ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

January 28, 2021,

স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী অলিউর রহমান জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
২৮ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের হল রুমে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে ভোটার ও তাদের শঙ্কার বিষয়টি তোলে ধরেন। সরকার দলের নেতাকর্মীদের অবাধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্গন,ধানের শীষের সমর্থক, ভোটার, বিএনপির নেতাকর্মীদের মারধর ও হুমকিসহ ভয়ভীত প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সার্বিক বিষয় গণমাধ্যমকর্মীদের অবগত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তাদের চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠার কথা বলেন। লিখিত বক্তব্যে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মোঃ অলিউর রহমান বলেন বুধবার বিকেল ৪ টার দিকে ৭নং ওয়ার্ডে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি এম.নাসের রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ চলাকালীন সময় আওয়ামী ছাত্র লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী শিমুল, সাইফুর রহমান রনি, মাহবুব ও আমিনের নেতৃত্বে তিনটি মোটর সাইকেলে ৬ জন উস্কানিমূলক ভাবে আমাদের গণসংযোগের ভেতর অতির্কিত বিকট শব্দে মোটর সাইকেল চালিয়ে ঢোকার চেষ্ঠা করে। পরবর্তিতে গণসংযোগ শেষে জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ শাহ মোস্তাফা রোডস্ত ইসমাইল রেস্টুরেন্টে চা চক্র চলাকালিন সময় আবার তাদেরই নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা মোটর সাইকেল যোগে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতৃবৃন্দের উপর অতর্কিত হামলা করে বেশ কয়েকজনকে আহত করে।
আহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, শামীম আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্র, গুরুতর আহত সহ-সাংগঠনিক মাহমুদুর রহমান, যুবদল নেতা সিরাজুল ইসলাম জুবেল, হোসেন আহমদ প্রমুখ।
তাদের অর্তকিত এ হামলায় আমাদের নেতাকর্মীরা কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে পড়ে প্রাণ ভয়ে রেস্টেুরেন্টের পিছনের দরজা দিয়ে সরে যেতে সক্ষম হন। মৌলভীবাজার জেলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এই ধরণের ঘটনা এই প্রথম। তারা পরে আমাদের জেলার বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ নেত্রী সাবেক এমপি বেগম খালেদা রব্বানির বাসাসহ জেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসার সামনে ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং শহরে প্রায় তিন শতাধিক মোটর সাইকেল বহর যোগে অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে আতংক তৈরী করতে থাকে। তাছাড়া আওয়ামীলীগ সিলেট ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা সমূহ থেকে শত শত বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে মৌলভীবাজার শহরে জড়ো করেছে। যারা প্রকাশ্যে শহরে মোটর সাইকেলের বিশাল বহর নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এরুপ পরিস্থিতিতে মৌলভীবাজার পৌরসভায় মেয়র নির্বাচনের আর কোন পরিবেশ নাই বলে আমি মনে করি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের শোচনীয় পরাজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামীলীগ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ও ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনের ন্যায় সন্ত্রাসী কায়দায় জোর জবরদস্তী ও কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে জিতার জন্য বদ্ধ পরিকর বলে আমি ও জেলা বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ মনে করি। মৌলভীবাজার একটি শান্তির শহর এ শহরের শান্তি কারা নষ্ট করছে তা আপনারা জানেন। বুধবার আমরা নির্বাচনী প্রচারণা কিছুটা বাড়িয়ে ছিলাম। আর তা দেখেই তাদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। তারা জানে তাদের সাথে জনগণ নেই। তাই সন্ত্রাসীদের দিয়ে তারা নির্বাচনে বিজয়ী হতে চায়। মানুষের রায়ের প্রতি তাদের কোন আস্থা নেই। এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার পৌরসভায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিন্দুমাত্র কোনো পরিবেশ নাই বলে আমি মনে করি। তাই আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপরোক্ত উল্লেখিত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করার জন্য আমি আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়টি আমরা রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার ও মৌলভীবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েছি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানান তারা নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত আছেন। নির্বাচনে জনগণের রায়ে বিজয়ী হতেও তারা প্রার্থী দিয়েছেন। কিন্তু অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেরকম যতাযত উদ্যোগ বা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই বলে তারা অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ধানের শীষের প্রার্থী অলিউর রহমানের সাথে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূন,সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান মিজান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, বদরুল আলম, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্বল, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, শামীম আহমদ, আব্দুর রহিম রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্স, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাবেক পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী। সদর উপজেলা বিএনরি সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান মজনু, শফিউল আলম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ফয়ছল আহমদ প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com