নিশ্চিন্তপুরের কতকথা

March 12, 2017,

সাদেক আহমেদ॥ ভেবেছিলাম এদেশটা সুখি সমৃদ্ধশালী দেশ হবে। প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে থাকবে আন্তরিক ভালোবাসা। আমি কর্মক্ষেত্রে লেখনির তাড়নায় মনের বাসনায় অনেক জায়গায় বিচরণ করি। ভাবি কি হতে চেয়েছিল লাখো শহীদের স্বপ্নে গড়া বাংলাদেশ। অথচ আজ শহীদের স্বপ্ন আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয়ে কাঁদে আর ফিরে ফিরে যায় আল্লাহর দরবারে কী যেন ফরিয়াদ করে। কারণ মহান আল্লাহ সৃষ্টি সেরা জীব মানুষরূপে এ ধরায় শান্তির জন্য মানুষকে প্রেরণ করেছিলেন। শহীদের স্বপ্ন রাস্তাঘাটে ভেঙ্গে চুড়ে অবস্থার মতো চুড়মার। রাজপথকে অনেকে নদী ভেবে ছোট শিশুরা দেয় ঝাঁপ। বলে আহারে বাপরে বাপ, যেন মৃত্যু মুখে পতিত হওয়ার অবস্থা। রাজধানীর এই জীবন মৃত্যুর অবস্থায় শিশুদের সেই স্বপ্নে গান আমার মনে পড়ে “আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী” হয়তো হতে চেয়েছিল স্বপ্নপুরী। অথচ আজ মৃত্যুপুরী যারা দিন দুপুরে করে চুরি, রাতে বাজায় বাঁশি হুশিয়ার সাবধান। শিশুদের একটা আলেখ্য অনুষ্ঠানে বিটিভিতে প্রচারিত এইরূপ একটা কথা দুই বছর পূর্বে শুনেছিলাম। হতে চেয়েছিল শান্তিপুর, হয়ে গেল ঝগড়াপুর, বাগানে ফুল নেই যেমন অনেক বাগে অনেক স্থানের নাম আরামবাগী, কেবলাবাগী এইরকম কত উপমা দেওয়া যায়। যা বলতে চেয়েছিলাম একদিকে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি অথচ মিরপুর, মানিকনগর, রামপুরা সহ অনেক জায়গায় গ্যাসের অভাবে চুলা জ্বলে না। কে কার কাছে প্রতিকার চাইবে। জনগণের দুর্ভোগ নিয়ে কোন কথা সংসদে উঠে না। কারণ গণতন্ত্র আজ বহুদূরে? শান্তিনগর, মৌচাকে ফ্লাইওভারের কাজ ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েও শেষ হচ্ছে না। কারণ দীর্ঘসূত্রিতায় খরচের পরিমাণও বাড়িয়ে নেওয়া হয়। সবই যে উপরি মহলকে ম্যানেজ করেই করা হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
তবে জনগণের যে ভীষণ কষ্ট সময় নষ্ট, ময়লা পানির উপর দিয়ে চলতে গিয়ে মনে পড়ে ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে সে ছবির গান এর বিপরীত চিত্র জান যেন যায় যায়। পুলিশের এসবির প্রধান কার্য্যালয়ের সামনে দেখি কি ভয়ানক অবস্থা। ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে গাড়ি কবে যাবে এখন আমাদের রক্ষা করো প্রভু। এছাড়া আমরা কার কাছে চাইবো বিচার বা প্রতিকার। আজ শুনি কে ভারতের দালাল, সবাই জানে ভারতীয় দালাল কারা। এদেশটা প্রায় নিয়েই নিয়েছে। তবে এদেশে কর্মরত সমস্ত বিদেশী দূতাবাসের ডিফেন্স এডভাইজার বা এটাচিরা কিভাবে নিবে কোন একটা দেশের সাথে প্রতিরক্ষার চুক্তির বন্ধনে আবদ্ধ করার চাপ। বাংলাদেশের জানালা সারা বিশ্বের সাথে খোলা রাখা উচিত।
এই দেশের সার্বভৌমত্ব ছোট একটা দেশ সিকিমের মতো বিকিয়ে দেওয়া যায় না। কারণ এদেশের মানুষ খুবই দেশপ্রেমীক ও জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমান এবং রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে খুবই সচেতন। পরিশেষে আমি বলব আবারও নিশ্চিন্তপুরের কথা যেথায় আমরা সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ণ নিরাপত্তায় শান্তি ও কল্যাণে হিংসা বিদ্বেষের বাহিরে কঠোর পরিশ্রম করে দেশকে গড়ে তুলে নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমাতে পারি। জানিনা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ নিশ্চিন্তপুরে বাংলাদেশে কি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে? এখন শেষ রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই ভেবে যে, কখন কোন মায়ের কোল খালি হয়। প্রতিনিয়ত সংবাদপত্রের পাতা খুললে দেখা যায় সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা নাই নাই নাই, যারা রাজনীতি করে বলে খাই খাই, পেটে যদিও জায়গা নাই। আমরা সাধারণ জনগণ কোথায় গিয়ে নিশ্চিন্তে শান্তি খুঁজে পাই। এরই মধ্যে ১৪ই মার্চ স্বাধীনতার মাসে সিলেটের প্রথম মুসলমান যার আমন্ত্রণে হযরত শাহ জালাল (রহ:) বাংলাদেশে এসেছিলেন মৌলভীবাজারে হতে চলেছে শেখ বোরহান উদ্দিন (রহ:) ইসলামিক সোসাইটির মেধা যাচাই প্রতিযোগীতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। মেধা বিকাশ জ্ঞান অর্জন ও সৃজনশীল মানুষিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এরূপ মেধা প্রতিযোগীতা আরো হওয়া উচিত বলে আমাদের বিশ্বাস। তা হলে নতুন প্রজন্ম আরো জানতেও জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে মেধা বিকাশ লাভে সুযোগ পাবে। এতে প্রধান অতিথী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, এমপি, মাননীয় মন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমাকেও বিশেষ অতিথি করা হয়। তাদের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তবে দেশের সমস্ত নাগরিক ও নতুন প্রজন্ম কবে নতুনভাবে নিশ্চিন্তে বাংলাদেশে বাস করতে পারবে সেই চিন্তাই আমাকে শেষ করে দিচ্ছে। মহান আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন। পরিশেষে আবার বলবো যে, গ্যাস সরবরাহ ঠিকমতো হচ্ছে না, গ্যাসের চুলাও জ্বলে না। সোহরাওয়াদী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্বের পাশে শিখা অর্ণিবান সেই চেতনা থেকে সর্বত্র গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিন্ত করতে হবে। তারপর গ্যাসের মূল্য বাড়ান। জনগণ নিয়ে তামাশা করা বেশিদিন টিকে না।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com