পররাষ্ট্রমন্ত্রী- সিলেট সদরের মাননীয় সাংসদ ডক্টর এ.কে. আব্দুল মোমেন এবং সিসিক-মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মধ্যরাতে সিলেট মহানগরীর উন্নয়ন কাজে সরেজমিনে পরিদর্শনঃ জাতীয় পত্রিকায় সচিত্র সংবাদঃ কি চমৎকার দেখা গেল ॥”
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডক্টর এ.কে আব্দুল মোমেন-ইয়েমেনী বীর- পিরানে পীর সাধক শাহ্ জালালের স্মৃতি ধন্যপূন্য ভূমি সিলেট সদরের মাননীয় সাংসদ। মহান জাতীয় সংসদের বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসাবে প্রথমবারের মত অংশ গ্রহণ করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। যদিও বিগত নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণ যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ, তর্কিত। সিলেট সদর আসনের সাংসদ ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মোহিত। বার্ধক্যজনিত কারনে নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করে এই বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা কনিষ্ট ভ্রাতা পেশাদার কুটনীতিবিদ ডক্টর মোমেনের পক্ষে নিজ দাবী প্রত্যাহার করেন। আওয়ামী লীগ হাই কমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়ে ডক্টর মোমেন মার্কিন মূল্লুক থেকে সিলেট এসে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের নেতাকর্মি বাহিনী নিয়ে মাঠে নামেন। বিগত সংসদে নির্বাচনে মহাজোটের মহা বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয় এর দায়িত্ব পান ডক্টর মোমেন। রোহিঙ্গাঁ ইস্যু নিয়ে সুবেশিও সুদর্শন আব্দুল মোমেন হিমসিম খেয়ে ব্যস্ত সময় কাটালে ও তিনি সময় ও সুযোগে নিয়মিত নিজ নির্বাচনী এলাকা সফর করেন, উন্নয়ন কর্মকান্ড সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
সিলেট সিটি কপোরেশনের বিগত মেয়র নির্বাচনে ও নিজ দল বি.এন.পি.র মনোনয়ন পান জেলা বি.এন.পি-র সাবেক নেতা কেন্দ্রীয়
বি.এন.পি-র নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্ভীক জিয়ার সৈনিক আরিফুল হক চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত শক্ত প্রার্থী ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্ভীক মুজিব সৈনিক বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে পূনঃ উন্নয়ন কর্মকান্ডে মনোনিবেশ করেন কাজের মানুষ কর্মবীর আরিফুল হক চৌধুরী। বিগত দিনে সিলেট সদরের সাংসদ ছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মাল আব্দুল মোহিত। সিলেট সদরের সাংসদ হিসাবে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী পিতৃতুল্য প্রবীন ব্যক্তিত্ব এ.এম. মোহিতের সঙ্গেঁ নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন, সাক্ষাত করেছেন, সিলেট মহানগরীর উন্নয়নে সহযোগিতা চেয়েছেন, পরিকল্পনা পেশ করেছেন। মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় ও রাজনৈতিক মত পার্থক্য উপক্ষো করে ধানের শীসের সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সহযোগিতা দিয়েছেন-মন্ত্রী-মেয়র এক রিকসায় চড়ে উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরিদর্শনের ছবি পত্রিকায় উঠলে আমার কিচমৎকার দেখা গেল কলামে আবেগী কলাম লিখেছিলাম প্রশংসিত হয়েছিলাম। বিগত বাইশে আগষ্ট বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ্বত পালনের পর দু’দিন সফরে নিজ নির্বাচনী এলাকা সিলেট আসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডক্টর এ.কে আব্দুল মোমেন। তাঁর সফর সূচীতে সিলেট মহা নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিদর্শন কিংবা সিসিক কর্মকর্তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত কিংবা বৈঠকের কোন কর্মসূচী ছিল না। সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মন্ত্রীর পৈত্রিক বাড়ি হাফিজ কমপ্লেক্সে গিয়ে তাঁর সঙ্গেঁ সৌজন্য সাক্ষাত করলে মাননীয় মন্ত্রী উন্নয়ন কর্মকান্ড সরে জমিনে পরিদর্শনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাত একটায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী কোন প্রটকোল ছাড়া নিজ দলীয় নেতা-কর্মি ছাড়াই মেয়র আরিফ, কাউন্সিলার
শওকত আমীন তৌহিদ, খাদিম পাড়া ইউ/পি, চেয়ারম্যান এডভোকেট আফসর আহমদ, সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান সহযোগে দরগা এলাকা, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, এলাকায় উন্নয়ন কাজ, পরিদর্শন করেন। মন্ত্রী মেয়রের মধ্যরাতে পায়ে হেটে নগরীর উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনের সংবাদে রাতের সিলেট তোলপাড় শুরু হয়। সিলেটের সদাসর্বদা সজাগ-সতর্ক ও কর্ম তৎপর মিডিয়া ভূবনের কাছে সংবাদটি পৌছলে এমন মনমুগ্ধকর দৃশ্য ক্যেমেরা বন্দী করা হয়। রবিবারের দৈনিক মানব জমিনের এক্সক্লোসিভ পৃস্টায়-মধ্যরাতে মেয়রের সঙ্গেঁ উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে মন্ত্রী” শিরোনামে সচিত্র সংবাদ পরিবেশিত হয়। সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দৈনিক মানবজমিনকে জানান “পররাষ্ট মন্ত্রীকে নিয়ে মধ্য রাতে আমরা কয়েকটি এলাকার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেছি। তিনি আগ্রহ প্রকাশ করায় তাকে নিয়ে আমরা এ পরিদর্শনে যাই। এ সময় মন্ত্রী উন্নয়ন কাজ দেখে খুশী হয়েছেন। সিলেট নগরীর উন্নয়নে আমরা সবাই আন্তরিক। এই আন্তরিকতা থেকে আমরা একসঙ্গেঁ কাজ করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সিলেটের মানুষের উন্নয়ন। আর সেই লক্ষে আমরা কাজ করে চলেছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডক্টর এ.কে আব্দুল মোমেন যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান। তাঁর মরহুম পিতা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন আপোষহীন সৈনিক সিলেটের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীনতম আইনজীবী, একটি আইন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। মরহুম হাফিজ সাহেবের পুত্র-কন্যা-সকল সন্তানগন উচ্চ শিক্ষিত কর্মজীবনের সু-প্রতিষ্টিত। এই কঠিন সময়ে মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী পুলিশ প্রটেশন-দলীয় নিবেদিত প্রাণ নেতা কর্মি ছাড়া একজন বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গেঁ মধ্য রাতে পায়ে, হেটে পুন্য ভূমি সিলেটের রাস্তা ঘাট ঘুরে ঘুরে দেখে দেখে দায়িত্ব পালনের যেমহৎ নজির স্থাপন করলেন তা নজির বিহীন। অতুলনীয়, অনুস্মরণীয়। অনুকরণীয়। তাঁর এই সৌহার্দ্য, সম্প্রতি উন্নত নৈতিকতাবোধ এর পরিচায়ক। সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও রাজনৈতিক মত পার্থক্যের মাঝে ও সদরের সাংসদ ও মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গেঁ সিলেট মহানগরির উন্নয়ন ও জনস্বার্থে সাক্ষাত করে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। শাসক দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি সখেদে অভিজ্ঞতার আলোকে অভিমত ব্যক্ত করেছেন রাজনীতিবিদদের মধ্যে ক্রমশঃ সৌহার্দ ও সম্প্রতি হ্রাস পাচ্ছে- যা জাতির জন্য শুভ লক্ষন নয়।
দেশে একটি সাংবিধানিক সরকার বিদ্যমান। দেশীয় সংবিধান মোতাবেক বাংলাদেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার বিদ্যমান। সংসদীয় গনতন্ত্রে পরমতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সংসদীয় সংস্কৃতি। সংসদীয় রীতিনীতি। সংসদীয় গনতন্ত্রে বহু দলীয় গণতান্ত্রীক পদ্ধতি থাকে। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেতা হবেন লিডার অবদি হাউস, সরকার প্রধান, লিডার অবদি অপজিশন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা সরকার ও বিরোধী দল একে অন্যের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শত্রু বা সতীন নহেন। সিলেটে দুই বড় দলের দুই নেতা যে সৌহার্দ ও সম্প্রতি দেখালেন তা দেশের জন্য সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও সিসিক মেয়রের এমন আন্তরিক ও আবেগময় আলোক চিত্র দেখে আমরা আমজনতা আনন্দে বলতেই পারি “কি চমৎকার দেখা গেল।”
[ লেখক সিনিওর এডভোকেট হাইকোর্ট, মুক্তিযোদ্ধা। কলামিস্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব]
মন্তব্য করুন