(ভিডিওসহ) পাহাড়ী ছড়া দখল করায় পানি প্রবাহের ভেঙ্গেগেছে রাস্তা প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিকুল চক্রবর্তী॥ শ্রীমঙ্গলে এক মসজিদের খতিব তাঁর নিজ গ্রামে পাহাড়ী ছড়া দখল করে পাঞ্জেগানা মসজিদ, এতিমখানা ও মাদ্রাসা নির্মান করায় পানি প্রবাহ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে জাগছড়ার অপর পাড়ের পাকা সড়ক ভেঙ্গে দূর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে এই জাগছড়ার পানি প্রবাহের স্বাভাবিক প্রকৃয়া সচ্ছল রাখতে এবং ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা মেরামত করার দাবীতে মানববন্ধন করেছেন দুই গ্রামের কয়েকশত মানুষ।
২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের ইউছুপুর গ্রামে গ্রাম্যমুরব্বি সৈয়দ আব্দুল সোবাহান এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্যদেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: শাহাজান মিয়া, মো: ইউছুপ মিয়া, মো: আফরুজ খান, কয়ছর খান ও মো: আজমির আলী। এ সময় নোয়াগাও ও ইউছুপপুর গ্রামের শতাধিক অধিবাসী উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরজমিনে দেখা যায় উপজেলার শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের নোয়াগাও ও ইউছুপ গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পাহাড়ী নদী জাগছড়া। ইউছুপ গ্রামের কৃষ্ণ দেবনাথ বাড়ির অপর পাশে ও নোয়াগাও গ্রামের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ আয়ুব আলী খান এর বাড়িতে প্রবেশের জন্য একটি একটি কালভাট করা হয়েছে। কালভাটের ঢালে হাওর অভিমূখে ছড়াটি বিশাল আকার প্রায় ৫০/৬০ ফুট হবে। কিন্তু কালভাটের উজানে ছড়াটি একে বারে সরু হয়েগেছে যার পরিমান হবে ১০/১২ ফুট। ছড়ার অর্ধেক জুড়ে নির্মান করা হয়েছে মুসলিম রমিজা খাতুন ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও নোয়াগাও হক্কুলছুরত এতিমখানা। তবে এতিমখানাটি তালাবদ্ধ।
এ সময় গ্রামবাসী সৈয়দ আব্দুল সোবাহান জানান, আয়ুব আলী খান নিজে একজন ধার্মিক মানুষ হয়ে সমাজের ক্ষতি করছেন। সরকারী জায়গা দখল করে মসজিদ করেছেন। তাছাড়া তিনি যে এতিমখানা করেছেন এখানে কোন ছেলে মেয়ে নেই। ওই মসজিদ কেউ নামাজও পড়েন না।
গ্রামের তরুণ অধিবাসী মো: আজমির আলী জানান, মাদ্রাসা ও এতিমখানার নাম করে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান এনে সরকারের টাকা এখানে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এখন ছড়া দখল করে এতিমখানা ও মসজিদ করা হয়েছে। তিনি জানান, পাশেই উনার অনেক জায়গা খালি পড়ে আছে। ছড়া দখল না করেও তিনি তা করতে পারতেন।
আর গ্রামের অপর মুরব্বি মো: ইউছুপ আলী জানান, ব্যাক্তিস্বার্থে তিনি এই স্থাপনা করে মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে খাচ্ছেন। জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে তিনি ছড়া দখল করে পাকা স্থাপনা করেছেন। বিগত বন্যায় তার এই স্থাপনা রক্ষায় তিনি পুনরায় ফিলার ও বাঁশের গড় দিয়ে আরো ২/৩ ফুট জায়গা দখল করেছেন। এতে পানি ¯্রােতে মৌলভীবাজার সড়ক থেকে ইউছুপপুর গ্রামের ভিতর দিয়ে হাইল হাওরের প্রবেশের মুল রাস্তার প্রায় ১০০ ফুট ভেঙ্গে পড়ে গেছে। তিনি বলেন সড়কের পাশাপাশি ছড়ার পাড়ে সনাতন ধর্মালম্বীর দেবস্থলি ছিল তাও ভেঙ্গে ছড়ায় মিশে গেছে। বিষয়টি তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদেও অবগত করেছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পর্ষিদের সদস্য মো: শাহাজান খান বলেন, ছড়া দখলের বিষয়টি তারা সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন এবং তা পরিমাপ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবরে আবেদনও করেছেন।
এদিকে ছড়া দখলে অভিযুক্ত মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ আয়ুব আলী খান জানান, তিনি যখন তা নির্মান করেন তখন কেউ কিছু বলেননি। এটা খাস জায়গায় পড়েছে তা জানতেন না। তবে ছড়া দখল শুধু তিনি নন অনেকেই করেছেন। সবাই ছাড়লে তিনিও ছাড়বেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন জানান, ছড়া দখল কওে স্থাপনা করার সুযোগ কারো নেই। সরজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন