পাড়া মহল্লায় মাইকিং ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি জঙ্গী দমনে মৌলভীবাজারে বিশেষ নিরাপত্তা
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার জেলায় আইনশৃংখলা উন্নয়ন,নাগরিক নিরপত্তা নিশ্চিত করন ও জঙ্গী তৎপরতা বন্ধে বিশেষ নিরাপত্তা ও বিশেষ গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, রাজনগর, কমলগঞ্জ, জুড়ী, বড়লেখা উপজেলা গুলোতে বিশেষ ভাবে এ নিরাপত্তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
সূত্র জানায়, পুলিশের পাশাপাশি, র্যাব, গোয়েন্দা কার্যক্রমে পারদর্শী, ডিএসবি কাজে অভিজ্ঞ ও মেধাবী অফিসারদের নিযুক্ত করে গোপনভাবে জঙ্গী সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অফিসার বা ফোর্স বদলির ক্ষেত্রেও এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস ও মেসগুলোতে বহিরাগত কোন ব্যক্তি পাওয়া গেলে তাদের পরিচয় যাচাই বাছাই (পিসিপিআর) করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জামায়াতে ইসলামীর নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংগঠগুলোর ওপরও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রত্যেক রিক্সা চালক, সিএনজি চালক, ভাড়াটিয়া, স্কুল কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক, প্রভাষক, অধ্যাপক, অধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন এলাকায় ওয়ার্ডে বাসা বা বস্তির মালিক তাদের ভাড়াটিয়াদের আইডি কার্ড,মোবাইল নম্বর, ছবিসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য,পৌরকাউন্সিলরের মাধ্যমে থানায় জমা দেয়ার জন্য। মোটর সাইকেল চালকদের হেলমেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোটর সাইকেলের মূল কাগজপত্র চালকের সঙ্গে চালকের সংঙ্গে রাখতে হবে।
স্থানীয় এলাকায় মোটর সাইকেলসহ যে কোন গাড়ীতে অপরিচিত লোকের গতিবিধি তাৎক্ষনিক পুলিশকে খবর দেয়ার জন্য। স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছেলে মেয়েদের মার্কেট, রেল স্টেশন, বাসষ্টেশন, অলিগলিতে অযথা ঘোরাঘুরি এবং মূল্যবান সামগ্রী, মোবাইল, সামজিক গণমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করতে দেয়া যাবেনা সে বিষয়ে অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, খেলাধুলায় মনোযোগী, তাদের সামাজিক অবক্ষয় রোধকল্পে সন্তানের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য করতে অভিভাাবকদের পরামর্শ দেয়া হয়। অপ্রাপ্ত বা স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের হাতে মূল্যবান সামগ্রীসহ মোবাইল পাওয়া গেলে পুলিশ ঐ সব সামগ্রী জব্দ করে থানায় নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রতিবন্ধকতা হয় এমন বিষয়গুলোতে সামাজিক প্রতিরোধের লক্ষ্যে এলাকার সকল শ্রেণীপেশার লোকদের এগিয়ে আসার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহব্বান জানানো হয়েছে। এদিকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাড়ায় মহল্লায় মাইকিং করে গণসচেনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জেলার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের অবস্থান সম্পর্কে তাদের নিকটতম আত্মীয়দের সহায়তা পাওয়া না গেলে মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে তথ্য উদ্ধার ও সামাজিক গণমাধ্যমে তাদের ছবি দিয়ে তথ্য প্রচার করতে হবে। একই সাথে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিতভাবে সর্বস্তরের জনসাধারণের সাথে মতবিনিময়, ইতোপূর্বে জঙ্গী কার্যকলাপের কারণে যে সমস্ত মামলা রুজু হয়েছে তা নিবিড়ভাবে তদন্তে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়োজিত করা হবে। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপারের সাথে জেলার উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা ও সকল থানার অফিসার ইনচার্জের মতবিনিময় হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, জঙ্গী দমনে পুলিশ তৎপর রয়েছে। বিশেষ করে কমিউনিটি পুলিশকে আরও জাগ্রত করে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের পাড়া মহল্লায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) জুনাইদ আলম সরকার বলেন, জঙ্গী দমনের জন্য কুলাউড়ার আউটার পয়েন্ট, স্কুল চৌমহুনা, ব্রাহ্মনবাজার এলাকায়সহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিশেষ চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকা গুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, জঙ্গী দমনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং জেলার সকল উপজেলায় গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ভাবে সর্বস্তরের জনসাধারণের সাথে মতবিনিময় করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন