প্রস্তাবিত দ্বৈত-নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের দাবীতে বৃটেনের কার্ডিফে সমাবেশ : প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
বদরুল মনসুর॥ প্রস্তাবিত দ্বৈত-নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ এ প্রবাসীদের স্বার্থের পরিপন্থি ধারাগুলো বাতিল ও সংশোধনের দাবী জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে ওয়েলস বাংলাদেশ কমিউনিটির উদ্দোগে ওয়েলসের রাজধানী কাডিফ বাংলাদেশ সেন্টারে বিভিন্ন শহর থেকে আগত শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কার্ডিফ বাংলাদেশ সেন্টারের ট্রাষ্টি কমিউনিটি লিডার এম. মাসুদ আহমদের সভাপতিত্বে এবং মৌলভীবাজার জেলার সাবেক ছাত্রনেতা কমিউনিটি লিডার সাংবাদিক মকিস মনসুর আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকের প্রেট্টন কমিউনিটি লিডার ও সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী ও বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রবাসী সমিতি ইউকের সভাপতি কমিউনিটি লিডার এস এম আলাউদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আশরাফ হোসেন ও লন্ডন থেকে আগত শাহ্ ছুনু মিয়া।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে কমিউনিটি লিডার শেখ তাহির উল্লাহ্, আব্দুল কাদির, কাউন্সিলার আলী আহমদ, আব্দুল হান্নান শহীদুল্লাহ , আক্তারুজ্জামান কুরেসী নিপু, আনা মিয়া, শেখ মোহাম্মদ আনোয়ার, মোহাম্মদ লিয়াকত আলী, আহমেদ রহমান সালেহ, সৈয়দ আশরাফ আলী, মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া, শেখ আতিকুজ্জামান, মুজিবুর রহমান, ইউসুফ খাঁন জিমি, খলিলুর রহমান, নজরুল ইসলাম, নোমান চৌধুরী, মুহিবুর রহমান খসরু, আশরাফ হোসেন, মিনহাজ আহমদ, সেলিম আহমদ, মফিকুল ইসলাম ও আব্দুল কাদিরসহ বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, কাডিফ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, ওয়েলস গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল, ওয়েলস বাংলাদেশ ইয়ুথ সোসাইটি সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিভিন্ন শহর থেকে আগত নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
সভার শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আমিন মোহাম্মদ নুরুল। সভায় লিখিত প্রস্তাবাবলী পাঠ করে কমিউনিটি লিডার মকিস মনসুর বলেন প্রস্তাবিত আইনে ৪নং ধারায় জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব শিরোনামের ১নং উপধারায় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে যারা জন্মগ্রহন করেছিলেন, তাদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন ব্যাখা দেয়া হয়নি। ৫নং ধারায় বংশসূত্রে নাগরিকত্ব শিরোনামে ২নং উপধারায় বলা হয়েছে বাংলাদেশী নাগরিকদের সন্তানের জন্মের ২ বছরের মধ্যে হাইকমিশনের মাধ্যমে নাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে নতুবা তারা নাগরিক হতে পারবেন না। কিন্তু তাদের পরবর্তী প্রজন্ম সম্পর্কে কোন ব্যাখা দেয়া হয়নি।
৭নং ধারায় প্রবাসী নাগরিকদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা শিরোনামে ২নং উপধারায় বলা হয়েছে যে প্রবাসী নাগরিকগন জাতীয় সংসদের নির্বাচন রাস্ট্রপতি পদে নির্বাচন, সুপ্রিম কোর্টের বিষয়ক সহ প্রজাতন্ত্রের কোন কাজে নিয়োগ লাভ, স্থানীয় সরকারসহ যেকোন পদে নির্বাচন ও কোন রাজনৈতিক সংগঠন করতে পারবেন না। এ সকল প্রস্তাবিত ধারাগুলি বাতিল করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সভায় গৃহীত প্রস্তাবাবলীতে হাইকমিশনের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় নাম অন্তভূক্তিকরন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের উদ্যোগ নেওয়ারও আহবান জানান।
সভায় প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দসহ বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও কল্যাণে প্রবাসীরা নিষ্ঠা ও নিরলসভাবে কাজ করে চলছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে করছে মজবুদ। আগরতলার ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর জন্য প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন আইনজীবী, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্ত্র কেনার জন্য টাকা পাঠানোসহ বিশ্বজনমত গঠনে রেখেছেন বিরাট ভূমিকা। প্রবাসীদের অবদানের জন্য স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন প্রবাসীদের দ্বৈত- নাগরিকত্ব। আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ কে স্বাগত জানিয়ে বক্তারা বলেন আইনের কিছু বিষয়ে প্রবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ও প্রবাসীদের স্বার্থের পরিপন্থি সে সব ধারাগুলি অবিলম্বে সংশোধন করার জন্য জোর দাবী জানান।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এম আশরাফ হোসেন। পরিশেষে সভার সভাপতি মাসুদ আহমদ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
মন্তব্য করুন