ফলোআপ : কমলগঞ্জে চা শ্রমিক নিহত রাতে ঘাতক স্বামীর থানায় আত্মসমর্পন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে স্বামীর কুড়ালের কুপে চার সন্তানের জননী এক নারী চা শ্রমিক নিহত ঘটনায় রোববার রাতেই নিহতের ভাই বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানায় মামলা দায়েরের পর একমাত্র আসামী ঘাতক স্বামী হরিকিশোর তাঁতি নিজে রোববার ২৪ জুলাই রাত ১১টায় কমলগঞ্জ থানায় এসে আত্মসমর্পন করে। রোববার বেলা দেড়টায় রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানের মাদ্রাজী টিলার শ্রমিক বস্তিতে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, মির্ত্তিঙ্গা চা বাগানের মাদ্রাজী টিলার হরিকিশোন তাঁতীর সাথে স্ত্রী রমনী তাঁতীর বিভিন্ন সময় পারিবারিক কলহ ছিল। ঘটনার দিন রোববার দুপুরে অতিরিক্ত মদ্যপান করে স্ত্রী সাথে ঝগড়া হলে ঘরে থাকা লাকড়ী করার দেশীয় কুড়াল দিয়ে স্ত্রী রমনী তাঁতীকে কানের উপরে মাথায় কূপ দিয়ে আঘাত করলে সাথে সাথে মাটিতে লুটে পড়ে নিহত হন। এসময় স্বামী ঘরের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। হরিকিশোষন ও রমনী দম্পতির ২ ছেলে, ২ মেয়ে রয়েছে। ঘটনার সময় বাড়ীতে কেউ ছিলেন না। বড় ছেলে বাগানের ষ্টাফ, ছোট ছেলে কলেজে পড়ে, ১ মেয়ে হাইস্কুলে পড়ে এবং ১ মেয়েকে বিয়ে হয়ে যায়। দুপুরে ছেলে সুদীপ তাঁতী কলেজ থেকে এসে ঘর বদ্ধ দরজা খুলে মায়ের রক্তমাখা লাশ দেখে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই কৃষ্ণ মোহন দেবনাথ লাশের সুরতাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ধর্না বাউরী বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় নিহত নারী চা শ্রমিক রমনী তাঁতির বড় ভাই শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন কালিঘাট চা বাগানের শ্রমিক রাজ কুমার তাঁতি বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং ২১, তারিখ ২৪/০৭/২০১৬)। মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানের স্থানীয় ইউপি সদস্য ধনা বাউরী বলেন, রোববার রাতেই ঘাতক স্বামী নিজে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পন করে।
মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন ঘাতক স্বামীর থানায় আত্মসমর্পনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ২৫ জুলাই সোমবার মৌলভীবাজার আদালতে ঘাতক স্বামীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধী গ্রহন করা হয়। তিনি আরও বলেন যেহেতু আসামী নিজেই এসে ধরা দিল তাতে মামলাটি সহজ হয়ে গেল। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই রাজকুমার তাঁতী কমলগঞ্জ থানায় মামলা করলে পুলিশ আসামী নিহতের স্বামী হরিকিশোষন তাঁতী কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পন করে।
মন্তব্য করুন