ফলোআপ- কুলাউড়ায় মাদরাসা থেকে নিখোঁজ রাজনগরের হাফেজ জুনাইদ বালাগঞ্জ থেকে উদ্ধার
কুলাউড়া অফিস॥ কুলাউড়ার একটি মাদরাসা থেকে নিখোঁজ রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের শারমপুর গ্রামের হাফেজ মোঃ জুনাইদ ইসলামকে পাওয়া গেছে। ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার খাইপুর গ্রামে তার খালার বাড়ি গেলে জুনাইদের খোঁজ পাওয়া যায়। অসুস্থ হওয়ার কারণে সে কীভাবে বা কোথায় গিয়েছিল তা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পরে তার আত্মীয় স্বজন তাকে রাজনগর থানায় নিয়ে আসেন। জুনাইদ ইসলামের নিখোঁজের বিষয় নিয়ে থানায় জিডি করেছিলেন তার মা নজিরুন বেগম।
পুলিশ, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের শারমপুর গ্রামের জবান মিয়ার ছেলে মোঃ জুনাইদ (১৯) নিখোঁজের পর গ্রামের একজনকে ফোন করে বলেছে সে এখন ঢাকায়। এছাড়া বাড়ি থেকে মাদরাসায় যাওয়ার সময় বাড়ির সবাইকে বলেছে দোয়া করতে। এমনও বলেছে, আর দেখা নাও হতে পারে। এই কথায় বিচলিত হয়ে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে থানায় জিডি করেছেন জুনাইদের মা নজিরুন বেগম। পুলিশ, অভিভাবক ও মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের শারমপুর গ্রামের জবান মিয়ার ছেলে মোঃ জুনাইদ (১৯) ২৬ জুলাই মঙ্গলবার কুলাউড়া জামেয়া মোহাম্মদিয়া দারুছ ছুন্নাহ মাদরাসায় জুনাইদ দুপুর বেলা পেটের ব্যথায় আক্রান্ত হলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরে বেলা ৩টার দিকে সে কাউকে কিছু না বলে নিখোঁজ হয়। জুনাইদের বড় ভাই আবদুল জলিল জানান (২২) তার ভাই চলতি বছর রাজনগর উপজেলার বড়দল হাফিজিয়া মাদরাসা থেকে কুরআনে হাফেজ হয়েছে। সম্প্রতি সে দারুল কেরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের মাধ্যমে কারিয়ানা পাস করেছে। তাকে দাওরা ক্লাসে ভর্তি করানোর জন্য ২৩ জুলাই জেলার কুলাউড়া উপজেলার জামেয়া মোহাম্মদিয়া দারুছ ছুন্নাহ মাদরাসায় নিয়ে যান। ওই দিন তাকে ভর্তি করে বাড়ি ফিরে আসেন। ২৫ জুলাই সকালে জুনাইদ প্রয়োজনীয় বইপত্রসহ ভর্তি হওয়া মাদরাসায় চলে যায়। ২৬ জুলাই মাদরাসার প্রধান মাহমুদুর রহমান ইমরান রাত ১০টার দিকে তাদের বাড়িতে মোবাইল ফোনে জানান যে, বেলা সাড়ে ৩টায় ক্লাস শেষ হওয়ার পর কাউকে কিছু না বলেই মাদরাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরেনি। খবর পেয়ে তার অভিভাবকরা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে খুজেছেন কিন্তু তার কোনো সন্ধান পাননি। মাদরাসার প্রধান ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, রাতে হাজিরা ডাকার সময় তার উপস্থিতি না পেয়ে মূলত বিষয়টি নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকে অবহিত করা হয়। জুনাইদের মা নজিরুন বেগম ও চাচী নয়নতারা জানান, সে মাদরাসায় পড়তে যাওয়ার সময় সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেছে। এ সময় এমনও বলে গিয়েছে দোয়া করতে তার সঙ্গে হয়তো আর দেখা নাও হতে পারে। এদিকে তার ভাই জলিল জানান, ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সে একটা মোবাইল ফোন (০১৭২৩-৯৫৮৮৬০) থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় ফোন করে চাচাতো ভাই রুবেলকে বলেছে সে ঢাকায় চলে গেছে। আর কিছু বলেনি। এর পর থেকে এই ফোন বন্ধ রয়েছে। বিচলিত মা নজিরুন বেগম বৃহস্পতিবার রাতে রাজনগর থানায় এসে জিডি করেছেন (জিডি নং-১১৭৮ তা. ২৮/০৭/১৬ইং)।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে জুনাইদ ইসলাম অসুস্থাবস্থায় তার খালার বাড়ি বালাগঞ্জ উপজেলার খাইপুর গ্রামে যায়। সেখান থেকে বাড়িতে ফোন করে তার অবস্থান জানায়। এরপর রাতেই তার ভাই আব্দুল জালিল তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজনগর থানার উপ-পরিদর্শক আজিজুর রহমান বলেন, সে অসুস্থ ছিল। তার খালার বাড়িতে এসে বাড়িতে ফোন করে বলেছে সে ওখানে আছে। সেখান থেকে রাতেই তাকে উদ্ধার করা হয়। কীভাবে বা কেন পালিয়ে গেছে তা এখনো জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন