ফ্রান্সে চলছে উৎসবের রব রব

July 17, 2018,

মোহাম্মদ আব্দুল মুহিব॥  প্যারিস সময় বিকালে ফ্রান্সের বিমান বন্দরে জাতীয় বীরদের লাল গালিচা সমর্বদনা দেয় হয় এরপর ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমুনিয়াল ম্যাক্রন বিশ্বকাপ বিজয়ী ফুটবলারদের সমর্বধনা জানান।খোলা বাসে করে ফুটবলারা কাপ নিয়ে প্যারিস প্রদক্ষিন করেন।

একমাস যাবত ফ্রান্সে চলছে উৎসব। শনিবার গেল ফ্রান্সের জাতীয় বাস্তিল দিবস।

প্যারসিরে গার্দ নডে  সোমবার ফ্রান্সের প্যারিস বাংলা প্রেস ক্লাব প্রিয় ফ্রান্সে ফুটবল দলের অফিসিয়াল জার্সি উৎসব করেন।মোহাম্মদ আব্দুল মুহিব এর সৌজন্য জার্সি প্রদান করা হয়।এতে ফ্রান্সের কমিউনিটি নেতা এটি এম রেজা, হাবিব খান  ইসমাইল সহ কমিউনিটি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।প্যারিস বাংলা প্রেস ক্লাব শুধু একটি সাংবাদিক সংগঠন নয় এটি একটি কমিউনিটি সংগঠন।

মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে যখন আঁতোয়া গ্রিজমান-পল পগবারা একের পর এক গোল উদযাপন করছিলেন, তখন উৎসব চলছিল সুদূর প্যারিসে। বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফ্রান্স বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করার পর শিল্প-সংস্কৃতির তীর্থভূমি প্যারিস যেন উঠলো উৎসবের নগরী।

ফ্রান্সের মেট্রো রেলগুলোতে ছিল মানুষের উল্লাস। প্যারিসের গার্দনড এলাকায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিজয় মিছিল করেন।

আইফেল টাওয়ার থেকে শুরু করে প্যারিসের রাজপথ, অলি-গলিতে নেমে এসেছে ফরাসিরা এবং প্রবাসী বাংলদেশেরা। যেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ নাওয়া-খাওয়া ভুলে মিলে গেছে আনন্দ উদযাপনের জনস্রোতে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে রঙ মেখে গলাগলি করে উৎসব করেছে তারা।

রাশিয়া ২০১৮ বিশ্বকাপ  ৯০ মিনিটেই মধ্যেই ৬ গোল।  পেলেকে আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন  এমবাপ্পে। ৬০ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনাল আরেকজন কিশোর গোলদাতা পেল। ১৯ বছর ৬ মাস বয়সী এমবাপ্পে রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেকে আবিষ্কার করেন।ফাইনালে লুকাস হার্নান্দেজের বানিয়ে দেওয়া চমৎকার এক বলে আরও এক চমৎকার শট নিয়ে সেটা রেকর্ড নিলেন (৪-১)। পেলের পর দ্বিতীয় কনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোলের রেকর্ড এখন এমবাপ্পেরই।

৪ মিনিট পরেই ইতিহাসে  হুগো লরিসের হাস্যকর এক ভুলে বল জালে পাঠালেন মারিও মানজুকিচ।

আঁতোয়ান গ্রিজমানের ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বলে ফ্রান্সের কোনো খেলোয়াড় বল ছুঁতে পারেননি। সে বল আগেই যে মাথা ছুঁয়ে গেছে মানজুকিচের। সুবাসিচকে ধাঁধায় ফেলে দিয়ে বল জালে গেল (১-০)।

 ইভান পেরিসিচ যে  অভিজ্ঞতা নিলেন মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই। ২৮ মিনিটে বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ফ্রান্স রক্ষণকে ব্যবহার করে লরিসকে আড়ালে ফেলে দিলেন। দূরের পোস্টে আশ্রয় নিল বল, টানা চতুর্থ ম্যাচে প্রথমে পিছিয়ে সমতা ফিরায় ক্রোয়েশিয়া (১-১)। ৩৮ মিনিটেই সেই পেরিসিচ খলনায়ক। ডি-বক্সে অযথা হাত বাঢ়িয়ে বল নিয়ন্ত্রণ নিলেন। কিন্তু তাঁর সেই চাতুরী ধরা পড়ে গেল ভিএআরে। পেনাল্টি থেকে ফ্রান্সকে আবারও এগিয়ে দিলেন গ্রিজমান (২-১)। প্রথমার্ধে তাই হাসিমুখেই মাঠ ছেড়েছে ফ্রান্স।

দ্বিতীয়ার্ধেও খেলায় এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু বারবার যেভাবে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করছিল তারা, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল ভাগ্য আজ ফ্রান্সের পক্ষে। ৫৯ মিনিটেই সেটা প্রমাণিত হয়ে গেল। ডান প্রান্ত দিয়ে বল টেনে নিলেন এমবাপ্পে। তাঁর নিচু ক্রস থেকে গ্রিজমান কিছু করতে না পারলেও সেটা পল পগবার দিকে ঠেলে দিলেন। পগবার ডান পায়ের শট মদরিচের গায়ে লেগে ফিরে এলেও হতাশ হননি। ফিরতি বলে বাঁ পায়ের শট। এবারও পরাস্থ হলেন সুবাসিচ (৩-১)। টানা চতুর্থ মোনাকো গোলরক্ষক হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে পরাজিত দলের গোলরক্ষকের রেকর্ডটাও অক্ষত থাকবে, সেটাও তখন নিশ্চিত হওয়া  ৪ মিনিটের মধ্যে এমবাপ্পে ও মানজুকিচের দুই রেকর্ডের অংশ হওয়া কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনা ছিল। কিন্তু টুর্নামেন্টজুড়ে হিসাবি ফুটবল খেলা ফ্রান্স নিজেদের কোনো বিপাকে পড়তে দেয়নি। উল্টো গোল শোধ দিতে মরিয়া ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রতি আক্রমণে উঠে ব্যবধান বাড়ানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল। গতিময় ফ্রান্সের সঙ্গে আর পেরে ওঠা হয়নি ৯০ মিনিটে।

বিশ্বকাপের যেকোনো পরিসংখ্যান ঘাঁটতে গেলে একটি কথা যোগ করা হয় ‘১৯৬৬ বিশ্বকাপ থেকে’। কারণ, পরিসংখ্যানের হিসাব-নিকাশের দৌড় ওখানেই থামে। কিন্তু ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল আক্ষরিক অর্থেই ’৬৬-র বিশ্বকাপকে টেনে আনল। বিশ্বকাপের ফাইনালে যে ৬ গোল হতে পারে, সেটা জিওফ হার্স্টের হ্যাটট্রিকের দিনেই শেষ দেখেছিল বিশ্ব।

পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে সেই ম্যাচে তবু অনেক নাটক হয়ে ছিল। ৬ গোলের দেখা পেতে ম্যাচটার অতিরিক্ত সময় যোগ করা হয়েছিল। কিন্তু আজ ৯০ মিনিটেই সব চুকে গেছে। আর এর মধ্যেই ৬ গোল।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com