বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় চা শ্রমিকদের যত ক্ষোভ
নূরুল মোহাইমীন মিল্টন॥ বকেয়া মজুরি (এরিয়ার) না পাওয়ায় চা শ্রমিকদের মধ্যে আবারও ক্ষোভ জন্মাচ্ছে। ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর শ্রীমঙ্গলে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পর ১০২ টাকা থেকে ১২০ টাকা মজুরি নির্ধারিত হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় গত আগষ্ট মাসে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা শ্রমিকরা টানা ১৯ দিন আন্দোলন করেন। তাদের এই আন্দোলন দেশ-বিদেশে ব্যাপক ঝড় তুলে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে গত ২৭ আগষ্ট চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এই মজুরি নির্ধারণের তিন মাস হলেও তারা বকেয়া মজুরি পাননি। বকেয়া মজুরি পেতে তাদের ধর্না বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের কাছে বিভিন্ন বাগান পঞ্চায়েত কমিটি লিখিত আবেদনও জানিয়েছে। তবে শ্রম আইনের একটি ধারার কথা তুলে চা বাগান মালিক পক্ষ বকেয়া মজুরি প্রদান নিয়ে অনিহা দেখিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চা শ্রমিকরা বর্তমানে ১৭০ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। তবে বকেয়া মজুরি বিষয়ে এখনো কোন সুরাহা হয়নি। গত দুর্গা পূজার আগে বকেয়া মজুরি প্রদানের দাবি ছিল শ্রমিকদের। বকেয়া মজুরির দাবিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বকেয়া মজুরি প্রদানের দাবি জানান ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নৃপেন পাল। এরপরও বকেয়া প্রদানে মালিক পক্ষের সাড়া মিলেনি। সাধারণ চা শ্রমিকরা বকেয়া প্রাপ্তির অপেক্ষায় দিন গুণছেন। বিভিন্ন চা বাগান পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে ইউনিয়ন নেতারাও এবিষয়ে তেমন তৎপর হতে দেখা যাচ্ছে না।
চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকরাও বকেয়া মজুরি প্রাপ্তির বিষয়ে হিসেব নিকেশ করছেন। তাদের মতে এটি প্রাপ্য। এককালীন কিংবা দু’কিস্তিতে হলেও বড় অঙ্কের টাকাটা তাদের বেশ উপকারে আসবে। তাই বিষয়টি নিয়ে তাদের বলাবলির শেষ নেই। যে কারণে বকেয়া আদায়ে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। ক্ষোভও সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ কতটা কাজ করবে তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বাগান পঞ্চায়েতেদের লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তার মতে তারা মালিক পক্ষের কাছে বার বার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে মালিক পক্ষ কালক্ষেপন করছেন। এখন চা বাগান শ্রমিকরা বকেয়া মজুরির জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। এমনকি আবারো বকেয়া মজুরির জন্য হয়তো আন্দোলনেও নামতে পারেন এমনটিও কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন।
শমশেরনগর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নিপেন্দ্র বাউরী, কানিহাটির সভাপতি প্রতাপ রিকিয়াশন, দেওছড়া বাগানের সভাপতি শংকর রবিদাস বলেন, ‘আমরা চা শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বানে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মতো ১৭০ টাকা মজুরি মেনেও নিয়েছি। তবে আমাদের বকেয়া (এরিয়ার টাকা) না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিনযাপন করছি। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের যে হারে দাম বাড়ছে তাতে পাঁচ, সাত সদস্যের শ্রমিক পরিবার সমুহ এই মজুরি দিয়ে কোন মতেই দিনযাপন করা সম্ভব নয়। চা শ্রমিক পরিবার সমুহের জীবন জীবিকার তাগিদে ও বৃহত্তর স্বার্থে ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারী থেকে আমাদের বকেয়া মজুরি প্রদানে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।’
এদিকে চা-শ্রমিকদের ১৯ দিন কর্মবিরতিকালীন সময়ের মজুরি ও রেশন থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে চা-শ্রমিক সংঘ। গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক রাজদেও কৈরী ও যুগ্ম-আহবায়ক শ্যামল অলমিক এই অভিযোগ তুলেছেন। তাদের মতে দেশের ১৬৭ টি চা-বাগানে ৫ লক্ষাধিক চা-জনগোষ্টির মধ্যে স্থায়ী শ্রমিক প্রায় এক লাখ। সে হিসেবে একজন শ্রমিকের মজুরির উপর কমপক্ষে ৫ জনকে ভরনপোষণ করতে হয়। বর্তমান দ্রব্যমূূল্যের বাজারে ৩০০ টাকা মজুরি পেলেও তো সেটা সম্ভব হয় না। এখনো শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও রেশন প্রদান করা হয়নি। ২০২১-২০২২ সাল মেয়াদের জন্য বর্ধিত ৫০ টাকা মজুরির এরিয়ার টাকা দ্রুত পরিশোধ করার দাবি তাদের।
প্রতিবার নির্ধারিত সময়ের পর শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করে প্রায় ৩০ হাজার ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের এরিয়ার (জনপ্রতি প্রায় ৩০ হাজার টাকা) থেকে বঞ্চিত করা হয়। মালিকপক্ষ ক্যাজুলায় শ্রমিকদের রেশন, আবাসন, চিকিৎসা ইত্যাদি সুবিধা থেকে তাদের বঞ্চিত করছে। ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের এরিয়ার টাকাসহ রেশন, আবাসন, চিকিৎসা সুবিধাসহ প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকার সুবিধা থেকেও তারা বঞ্ছিত রয়েছে।
বকেয়া মজুরি আদায়ে বিভিন্ন চা বাগানে পঞ্চায়েত নেতারা সভা করছেন। সুনছড়া চা বাগানে কয়েকটি বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এভাবে স্থানে স্থানে তারা সভা করে বকেয়া আদায়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সবাই বকেয়া মজুরির দাবিতে প্রয়োজনে আন্দোলনে যাওয়ার কথাও বলছেন। বাস্তবে এই বিষয়টি সুখকর নয়। ইতিমধ্যে মালিক পক্ষ ১৭০ টাকা মজুরি মেনে নিলেও চা শ্রমিকদের বকেয়া বিষয়ে কোন সুরাহা করছেন না। ফলে যেকোন সময়ে ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটতে পারে।
চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা-সংসদ (বিটিএ) গত ৩০ আগষ্ট একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। রাজধানীর প্লাজা কনকর্ড টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলনে ‘অন্য সব শিল্পের চেয়ে চা-শিল্পের শ্রমিকরা বেশি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন’ এমন বক্তব্য তারা তুলে ধরেছেন। তাদের এই বক্তব্যেরও প্রতিবাদ জানিয়েছে চা-শ্রমিক সংঘ। সংঘের মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক রাজদেও কৈরী ও যুগ্ম-আহবায়ক শ্যামল অলমিক পহেলা সেপ্টেম্বর একযুক্ত বিবৃতি প্রদান করেন। তারা চা-সংসদের বক্তব্য প্রত্যাখান করে বলেন, ‘সরকারের নিম্নতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক ঘোষিত বিভিন্ন শিল্প সেক্টর এবং মজুরি কমিশন ঘোষিত রাষ্ট্রায়াত্ব শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের মজুরির সাথে তুলনা করলে চা-শ্রমিকদের মজুরি সবচেয়ে কম। শুধু তাই নয় চা উৎপাদনকারী সকল দেশের মধ্যে চা-শ্রমিকদের মজুরি সবচেয়ে কম। এমন কি দেউলিয়া হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা এবং আফ্রিকার দুর্ভিক্ষ পীড়িত কেনিয়ার চা-শ্রমিকরাও বাংলাদেশের শ্রমিকদের থেকে বেশি মজুরি পেয়ে থাকেন।’
চা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে একজন চা-শ্রমিক কেনিয়ায় ৫৮৩ টাকা, ভিয়েতনামে ৩০৫ টাকা, নেপালে ৩২৪ টাকা, শ্রীলঙ্কায় ২৬৪ টাকা এবং ভারতের কেরালায় ৫০৩ টাকা, কর্ণাটকে ৪৯৯ টাকা, তামিল নাড়ুতে ৪০৬.৮০ টাকা, পশ্চিমবঙ্গে ২৭৭ টাকা, আসামে ২৫১ টাকা, ত্রিপুরায় ২১০ টাকা, বিহারে ২০৯ টাকা মজুরি পান। যেখানে এখনো বাংলাদেশের একজন চা-শ্রমিকের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা। মালিক পক্ষের সংবাদ সম্মেলনে চা শ্রমিকদের দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা মিলিয়ে একজন শ্রমিকের মজুরি ৫০০ টাকার ওপরে দাঁড়ায় বলে দাবি করা হয়। এছাড়া একজন চা-শ্রমিককে প্রতি সপ্তাহে ন্যূনতম ৮ কেজি রেশন (চাল/আটা) প্রদানের তথ্য তুলে ধরা হয়।
বাস্তবে একজন চা-শ্রমিককে প্রতি সপ্তাহে ন্যূনতম ৩ কেজি ২৭০ গ্রাম রেশন প্রদান করা হয়। রেশনের ক্ষেত্রেও আবার যাদের ক্ষেতের জমি আছে তাদের প্রাপ্য রেশন থেকে প্রতি বিঘায় বছরে ১১২ কেজি রেশন কর্তন করা হয়। আদতে সেই সব শ্রমিক কোন রেশনই পান না। চা-সংসদের বক্তব্য প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিককে বাসস্থান প্রদান করা হয়। অর্থাৎ ৫ লক্ষাধিক চা-জনগোষ্টির শ্রমিকদের কোম্পানি প্রদত্ত দুই কক্ষ বিশিষ্ট বাসস্থানে গড়ে ৭ জনের বেশি মানুষকে বাস করতে হয়। যেখানে কোম্পানি রান্না করার জন্য আলাদা ঘরেরও ব্যবস্থা দেয় না। প্রায় এক লাখ স্থায়ী শ্রমিককের অনেককে বাসস্থানেরও ব্যবস্থা করা হয়নি। যার কারণে কোম্পানি প্রদত্ত একটি বাসস্থানে একাধিক পরিবারকে থাকতে হয়।
চা-শ্রমিক ও তার পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের কথা বলে চা-সংসদের তুলে ধরা ২টি আধুনিক গ্রুপ হাসপাতাল এবং ৮৪টি বাগানে ৭২১ শয্যার ব্যবস্থা, ১৫৫টি ডিসপেনসারিসহ মোট ৮৯০ জনের অধিক মেডিকেল স্টাফ থাকার তথ্য দেয়া হয়। এই তথ্যের প্রেক্ষিতে ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ উল্লেখ করে চা শ্রমিক সংঘের নেতৃবৃন্দের সাফ কথা হচ্ছে, মেডিকেল স্টাফ বলতে মূলত কম্পাউন্ডার। ডাক্তার ও নার্স নাই বললেই চলে। এছাড়া গত মে মাসে চা-সংসদ প্রদত্ত হিসেবে ৪০২ টাকা মজুরির তথ্য দিয়ে চিকিৎসা বাবদ ৭.৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। সেই হিসেবে মাসিক ২২৫ টাকা দিয়ে চিকিৎসার হিসাবটি পরিস্কার হয়ে উঠে। যেখানে গ্যাস্ট্রিকের একটি ট্যাবলেটের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা।
প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যে চায়ের বাজারের জিডিপিতে চায়ের অবদান শতকরা ১ শতাংশ দাবি করে চা-সংসদ শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে দৈনিক ২০ কোটি টাকা হিসেবে মোট ৪২০ কোটি টাকা ক্ষতির কথা তুলে ধরেন। কর্মবিরতির কারণে মালিকদের দৈনিক ক্ষতি ২০ কোটি টাকা হলে শ্রমিকরা কাজে থাকলে মালিকদের লাভ কত টাকা? শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরি দাবি মেনে নিলেও তো মালিকদের মজুরি বাবদ এক লক্ষ স্থায়ী শ্রমিকের জন্য দৈনিক পরিশোধ করতে হতো ৩ কোটি টাকা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা বৃদ্ধি করলেও তো ৫ কোটি টাকার বেশি কোনভাবেই ব্যয় হতো না। তাহলে কেন মালিকরা ২০ কোটি টাকার ক্ষতি মেনে নিলেন? এমন প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক।
সাপ্তাহিক মাত্র ১৫০ টাকা ভাতাকে মালিকপক্ষ পেনশন হিসেব প্রচার করছে। চা-শ্রমিকদের শ্রমআইন অনুযায়ী নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক, গ্র্যাচুয়েটি, কোম্পানীর লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রদান ইত্যাদি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। উৎসব ভাতার (Festival Bonus) পরিবর্তে কাজে উপস্থিতির উপর উৎসাহ ভাতা (Incentive Bonus) গ্রহণ করে যুগ যুগ ধরে শ্রমিকরা ঠকছেন।
শ্রমআইনে নৈমিত্তিক ছুটি (১০ দিন) থেকে বঞ্চিত এবং অন্য শ্রমিকরা যেখানে ১৮ দিন কাজে ১ দিন ছুটি ভোগ করেন, সেখানে চা-শ্রমিকদের জন্য প্রতি ২২ দিন কাজে ১ দিন বার্ষিক ছুটি নির্ধারণ করে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
প্রতি দু’বছর অন্তর চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি হওয়ার কথা। ২০১৯ সনের জানুয়ারীতে পূর্বের চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর শ্রীমঙ্গলে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে চা শ্রমিকদের মজুরি ১০২ টাকা থেকে ১২০ টাকায় উন্নীত করা হয়। ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সনের ডিসেম্বর মাসে। এরপর আর মজুরি বৃদ্ধির নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। অবশেষে চা শ্রমিকরা গত ৯ আগষ্ট থেকে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২৭ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে শ্রমিকরা এই মজুরি পেলেও বকেয়া কোন মজুরি না পাওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি বিষয়ে গণমাধ্যমে বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান শাহ আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ২১০ (১৭) ধারায় কি বলা আছে সেটি দেখে নেয়ার জন্য। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যেদিন থেকে চা শ্রমিকদের ১৭০ টাকা মজুরি বলেছেন সেদিন থেকে তাদের যথাযথ মজুরি প্রদান করা হচ্ছে। তবে শ্রম আইন ২০০৬ এর শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ২১০ এর ১৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে ‘মধ্যস্থতাকারী (Arbitrato) কর্তৃক নির্ধারিত অনধিক দুই বৎসর পর্যন্ত কোন রোয়েদাদ বৈধ থাকিবে।
অন্যদিকে ওই আইনের ১৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে ‘মধ্যস্থতাকারী (Arbitrato) মধ্যস্থতার অনুরোধ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে অথবা পক্ষগণ কর্তৃক লিখিতভাবে স্বীকৃত কোন বর্ধিত সময়ের মধ্যে তাহার রোয়েদাদ প্রদান করিবেন।’ মালিক পক্ষ যে ধারায় নিজেরা বকেয়া প্রদান থেকে মুক্তি পেতে চান ঠিক তেমনি শ্রমিক পক্ষের জন্য যুক্তি রয়েছে। তাই উভয়পক্ষের গ্রহণযোগ্য সমাধাই শিল্পের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
লেখক : নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, মৌলভীবাজার। ই-মেইল : : miltonpress@gmail.com
মোবাইল : ০১৭১৮০৩৪৪১৬
মন্তব্য করুন