বড়লেখায় গ্রেফতারের পর স্বজনদের সহায়তায় পালালেন ছাত্রলীগ নেতা, গ্রেফতার ৪

আব্দুর রব : বড়লেখায় পলাতক আসামি ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসানকে গ্রেফতারের পর গাড়িতে তোলার সময় পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে গেলেন। পুলিশের অভিযোগ, স্বজনরা আক্রমণ চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে।
১২ এপ্রিল শনিবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের কলাজুরা বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। তবে, স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ পুলিশ মুল ঘটনাকারিদের গ্রেফতার করতে না পেরে কলাজুরা বাজারের একজন ফার্মাসিষ্টসহ চার ক্ষুদ্র ব্যবসায়িকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার কলাজুরা বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি তাজুল ইসলাম, জামিল আহমদ,
ফার্মাসিষ্ট গৌরধন সিংহ ও মুরাদ আহমদ। এই ঘটনায় শনিবার রাতেই বড়লেখা থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা করেছেন। থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কলাজুরা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আজির উদ্দিনের ছেলে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম আহমদ হাসান একটি মামলার (নং-০৯) পলাতক আসামি। শনিবার রাতে বড়লেখা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ কলাজুরা বাজারে অভিযান চালিয়ে মাসুমকে আটক করে গাড়িতে উঠাতে গেলে তার স্বজনরা জড়ো হয়ে পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এসময় ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসান পালিয়ে যান। খবর পেয়ে বড়লেখা থানার ওসি আবুল কাশেম সরকার অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে কলাজুরা বাজারে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেন। ইউপি সদস্য আমিনুল হক, স্থানীয় বাসিন্দা এবি সিদ্দিকী দুলাল ও কলাজুরা বাজারের ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, মুল ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পেরে বাজারের চারজন নিরীহ ব্যবসায়িকে গ্রেফতার করেছে। ছাত্রলীগ নেতাকে আটককালে পুলিশ ও তার স্বজনদের মধ্যকার বিশৃংখলার সময় শতাধিক মানুষ সেখানে জড়ো হন। এসময় ব্যবসায়িরা হয়তো তাদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা ঘটনায় জড়িত থাকলে অবশ্যই বাজারে থাকতো না। বড়লেখা থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার জানান, একটি মামলার পলাতক আসামি ছাত্রলীগ নেতা মাসুমকে গ্রেফতারকালে তার স্বজনরা সঙ্গবদ্ধভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের কবল থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে তিনি মামলা করেছেন। ওসি আবুল কাশেম সরকার বলেন, কলাজুরা বাজারের ব্যবসায়ি ও আসামি মাসুম আহমদ হাসানের স্বজনরা সঙ্গবদ্ধভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালিয়ে মাসুমকে ছিনিয়ে নিয়েছে। পরে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামি গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন