বর্তমান প্রেক্ষাপট জামাতে নামাজ : আমাদের দায়বদ্ধতা
এম এম আতিকুর রহমান॥ নিজেদের সুরক্ষা তথা প্রানহানী থেকে রক্ষার জন্য জামাতে নামাজ ছাড়ার বিধান ইসলাম সমর্থন করে। দেশের সকল আলেমদের সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মেনে চলা বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের জন্য অপরিহার্য। ইসলামে আবেগের স্থান নেই। জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা মনে চলা আমাদের প্রধান দায়িত্ব। এখানে আবেগ দেখালে চলবে না।
চলমান প্রেক্ষাপটে উপমহাদেশের মুফতিয়ে আজম শায়খুল হাদিস মুফতী ত্বাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ মসজিদে নামাজের ইমামতি করেছেন। তিনিসহ মাত্র ৫ জন মুসল্লী। কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে চলমান-চিত্রে বাংলাদেশের বড় বড় হক্কানি উলামা মশায়েখ সমন্বয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় গতকাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশ ও জাতিকে রক্ষণশীল করতে মসজিদে নামাজের ৫ ওয়াক্তি জামাতে মাত্র ৫ জন এবং জুমার নামাজের জন্য সর্বমোট ১০ জন মিলে জামাত কায়েম রাখতে। যা যথাযথই হয়েছে বলে উলামায়ে কেরামদের অভিমত।
তবে বাসা-বাড়িতে পরিবারকে সাথে নিয়ে জামাত কায়েম করা আমাদের দায়িত্ব। মনজিদে জামাত সীমিত হলেও ঘরে ঘরে জামাত কায়েম করা আমাদের দায়িত্ব।
এ প্রেক্ষিতে কেউ কেউ অতি আবেগি, কথিত সুফিবাদী, মুত্তাকী অথবা উস্কানীমূলক বক্তব্য, আচরণ অব্যাহত রাখতে এখনো দেখা যাচ্ছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত।
ইসলামের ইতিহাস তথা ইতিহাসবিদ থেকে জানা যায় শতকে শতকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এরকমের আজাব-গজব ও সৃষ্ট মহামারিতে নামাজের জামাত সংক্ষিপ্তসহ সতর্কতামূলক বিভিন্ন জনহিতকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। যা জনহিতকরও হয়। আজকের প্রেক্ষাপটে তা মোটেই ভিন্ন নয়। আরো মনে রাখতে হবে জামাতে নামাজে যারা অভ্যস্থ তাদের আল্লাহ তায়ালা নিয়তিকে দেখছেন। মাঝে মধ্যে চক্রাকারে মসজিদে অথবা বাড়িতে সংক্ষিপ্ত জামাতে নামাজ আদায় করা দরকার। আর তা না হলেও বাড়িতে নামাজ আদায় করা হলেও চলমান-চিত্রে আল্লাহ তায়ালা মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করার সওয়াব আমলনামায় দিয়ে দিবেন ইনশাআল্লাহ তাই অতি আবেগি বা ধর্মপ্রান সেজে অসতর্ক হয়ে কেউই উস্কানি বা বিতর্ক সৃষ্টি না করে সম্মানিত উলামাদের পরামর্শ ও দেশের আইন মুতাবেক চলুন।
বর্তমানে সরকার ও প্রশাসনকে সহায়তা করুন এবং এটাই শরিয়ত সম্মত বিধান। সবাই আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তওবা ইসতেগফার দোয়া দুরুদ কান্নাকাটি ও রোনাজারি করার চেষ্টা করি। আমল আখলাককে উন্নত করে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পথে চলি।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বুঝার, যথাযথভাবে চলার এবং সবর করার তাওফাক দিন। দ্রুতই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে হেফাজত করুন। প্রবাসী মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসিকে এ-ই করোনা নামক ভাইরাস ও আজাব গজব থেকে হেফাজতে রাখুন। আসুন আমরা আমাদের দায়বদ্ধতা যথাযথভাবে পালন করি। সচেতন হই এবং সমাজকে সচেতন করি।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক সাপ্তাহিক বড়লেখা।
মন্তব্য করুন