বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র জন্মদিনে হোক আমাদের দীপ্ত শপথ
মকিস মনসুর ॥ ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের এই দিনে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা ও বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিবের ঘরে যে শিশুটির জন্ম হয়েছিলো, তিনিই হাটি হাটি পা পা করে নিজের সততা নিষ্ঠা একাগ্রতা, ভিশন ও কাজের মাধমে বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে আজ বিশ্বনেত্রী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি দেশরতœ শেখহাসিনা’। আজকের লেখনীর শুরুতেই জানাচ্ছি দেশরতœ শেখ হাসিনাকে প্রবাস থেকে অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীঘায়ুর জন্য সবার প্রতি দোয়া কামনা করছি।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন যে, বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার পথে। এ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে আমাদের সবাইকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এই হোক উনার জন্মদিনে আমাদের দীপ্ত শপথ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের মাসে লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন ও এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার প্রদান করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ইউএন প্লাজায় প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘ উইমেন এবং গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম এই পুরস্কার দুটি প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মাল্টার প্রেসিডেন্ট মেরি রুইস কোলেরিও পার্সা এবং জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের স্ত্রী ও ফার্স্ট লেডি বান সুন তায়েক প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার পেয়েছেন। শেখ হাসিনার, এই স্বীকৃতির জন্য জাতি হিসাবে আমরা গর্ববোধ করছি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো মাতৃভাষা বাংলায় তাঁর গুরুত্তপূণ ভাষনে প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার স্বার্থে বিশ্ব থেকে সংঘাত দূর করে শান্তির পথে এগিয়ে যেতে অভিন্ন অবস্থানে উপনীত হতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, আসুন জাতিসংঘকে টেকসই ও প্রাসঙ্গিক একটি সংস্থা তৈরিতে আমরা নতুন করে শপথ গ্রহন করি। তিনি বলেন, ‘এক মানবতার’ জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে আমরা সকলে মতের ভিন্নতা থাকা সত্বেও আসুন ন্যূনতম বিষয়ে সকলে একমত হয়ে অভিন্ন অবস্থানে উপনীত হই এবং মানবতার স্বার্থে বিশ্ব থেকে সংঘাত দূর করে শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই। এটা করার জন্য জাতিসংঘ আমাদের একটি অনন্য প্লাটফর্ম উপহার দিয়েছে। জাতিসংঘকে টেকসই ও প্রাসঙ্গিকজবে একটি সংস্থা তৈরিতে আসুন আমরা নতুন করে শপথ গ্রহণ করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে ইউরোপ, আফ্রিকা থেকে এশিয়ায় সন্ত্রাসীরা অগণিত নিরীহ মানুষকে অহরহ হত্যা করছে। আমরা মনে করি, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম, বর্ণ বা গোত্র নেই। এদের সকল রূপে ও প্রকাশে সমূলে মূলোৎপাটন করার সংকল্পে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার মূল কারণগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। একইসঙ্গে এদের পরামর্শদাতা, মূল পরিকল্পনাকারী, পৃষ্ঠপোষক, অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নেত্রীর এই বক্তব্যকে বিশ্বনেতারা সাগত জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের বিগতদিনের কিছু খ-চিত্র তুলে ধরছি:- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে ব্যয় প্রতি বছর বৃদ্ধি। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ১৬ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা থেকে বর্তমান ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ব্যয় লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকায় উন্নীত। সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মসূচীর আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুঃস্থ ভাতা, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী ও অসহায়দেও জন্য ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, ভর্তুকি মূল্যে খোলা বাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি, ভিজিডি, ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় খাদ্য সহায়তা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়িত।বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ থেকে ২৪ ৭৫ হাজারে উন্নীত। বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত দুঃস্থ মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ৯ লক্ষ ২০ হাজারে উন্নীত। অস্বচ্ছলতা প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৮৬ হাজারে উন্নীত। দরিদ্র গর্ভবতী মা, কর্মজীবী
মহিলা ও ল্যাকটেটিং মাদার এবং কৃষিকাজে নিয়োজিত প্রান্তিক নারী কর্মীদের জন্য ভাতা প্রদান। ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবারকে পূনর্বাসন এবং সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ। ঢাকায় একটি অটিজম রিসোর্স সেন্টার ও একটি অবৈতনিক অটিস্টিক স্কুল চালু। বিসিএস ক্যাডারসহ অন্যান্য সরকারি চাকুরীতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে এতিম ও প্রতিবন্ধীদের জনব্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ।
একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৯২৩টি ইউনিয়নের ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার পরিবারকে ১৭ হাজার ৩০০ গ্রাম সংগঠনের মাধ্যমে খামারীতে উন্নীতকরণ। বিশ্বায়নের সকল সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত।
২০২১ সালের অনেক আগেই “ডিজিটাল বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা সৃষ্টি। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু। এসব তথ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সরকারি ফরম, নোটিশ, পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত তথ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন সেবা বিষয়ক তথ্য, চাকুরীর খবর, নাগরিকত্ব সনদপত্র, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, বিদেশে চাকুরী প্রাপ্তির লক্ষ্যে রেরিস্ট্রেশনসহ ২২০টি সেবা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি। মোবাইল ব্যাংকিং, জীবন বীমা, মাটি পরীক্ষা ও সারের সুপারিশ, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং জমির পর্চাসহ অন্যান্য সেবা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি। প্রায় ৪ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন।
উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোতে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা চালু। টেলিমেডিসিন সিস্টেম চালু। মোবাইল টেলিফোন সিমের সংখ্যা ১০ কোটিতে উন্নীত। থ্রি-জি প্রযুক্তি চালু। মোবাইল ফোনেই ভিডিও কল করা যাবে। টিভি দেখা যাবে। ইন্টারনেটের গতি বাড়বে। টেলি কনফারেন্স করা যাবে।
ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটিতে উন্নীত। ৫৮টি জেলার ১৭৮টি উপজেলা ও ৪২টি গ্রোথ সেন্টারে ডিজিটাল টেলিফোন প্রদান। ৩টি পার্বত্য জেলার ২০টি উপজেলায় ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ স্থাপন।
বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, আইসিটি ফেলোশিপ ও অনুদান প্রদান। রূপকল্প ২০২১, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১) ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক (২০১১-২০১৫) পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি অর্থবছর লক্ষভেদী বাজে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা, ইউরোপে মারাত্মক অর্থ সংকট, উন্ন বিশ্বেও বাজারগুলোতে চাহিদা হ্রাসসহ নানামুখী নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলাদেশ গড়ে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন। বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছওে ৬৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকায় উন্নীত। এডিপি বাস্তাবায়ন হার ৯৭ শতাংশে উন্নীত। রাজস্ব আদায় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি।
মাথাপিছু আয় ২০৮ সালে ৬৩০ ডলার থেকে ১০৪৪ ডলারে উন্নীত। ৫ কোটির বেশী মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীত। ১০ কেজি দামে চাল বিতরন করা. ১৫ ই আাগষট বঙ্গবন্ধু হতাকান্ডের বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন সহ নানা উন্নয়নে সরকার ভৃমিকা রেখে চলছে।
আজ দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী স্কুল ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাসের পত্রের জবাব দিয়ে প্রেরক আর প্রাপকের মাঝের যে দৃষ্টান্ত দেখালেন। এটা শুধু আমাদের ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলের পথের দিশারী. মমতাময়ী জননীর জন্নই সম্ভব। জননেত্রী আপনাকে অভিবাদন ও লাল সালাম।
একদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অপরদিকে জামাত বিএন পি চক্র দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এসব চক্রান্ত্র ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে হলে এবং এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে চক্রান্ত্র ও ষড়যন্ত্রকারীদেরকে মোকাবেলা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে দেশরতœ শেখ হাসিনা সরকারের ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নিতে ও বাংলাদেশের উন্নায়নের এই অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে.। এই হোক বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা জন্মদিনে আমাদের দীপ্ত শপথ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিন…….।
মন্তব্য করুন