বার্মায় নিধন হচ্ছে মুলিম ॥ জেগে উঠুক ঘুমন্ত মানবতা

November 30, 2016,

মতিন বকশ: বার্মায় মুসলিম নিধন হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে নারী পুরুষ আর অবুজ শিশুকে। সম্ভ্রম হারাচ্ছেন নারীরা। নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি ঘর। সহায় সম্বল হারিয়ে আজ ওদের মাথা গুজার ঠাঁই নেই কোথায়ও।এমন বর্বর হত্যাযজ্ঞ। শিশুদের মাথা কেটে উল্লাস হচ্ছে। নারিদের বিবস্ত্র করে ধর্ষন করে হত্যা করা হচ্ছে। পুরুষদের জবাই করে শরীরের চামড়া তুলে মাংস কুকুর আর শকুনকে খাওয়াচ্ছে। আজ জাতিসংঘ মানবাধিকার কোথায়। জাতিসংঘ তাদের শিশু সনদের কথা কি ভুলে গেছে ? জঙ্গিবাদী তালাশ করেন বার্মার সরকারি বাহিনী। অহিংষু পরম ধর্ম। জীব হত্যা মহা পাপ নিরামিষভোজী বৌদ্ধ কে জঙ্গি ঘোষণা করুন।তাদের ধর্মে মুসলমান কে কি জীব মনে হয় না। না তারা বৌদ্ধ ধর্ম পরিহার করে জঙ্গি ধর্ম গ্রহণ করেছ। জমিনের মালিক হলেন আল্লাহ,আর আমরা আমাদের ভাইদের বিপদে সাহায্য তো দূরের কথা তাহাদের কে ভুখন্ডের সিমানার চিন্তা করে মাথা গুজার ঠাঁই দিচ্ছিনা। আমাদের রাসুল (সা:) মক্কার কাফেরদের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে হিজরত করেছিলেন রাতের অন্ধকারে। পালিয়ে নিজ ভুখন্ড ছেড়ে মদিনায় আশ্রয় নিলেন। তখন মদিনায় কোন মুসলমান ছিল না। আল্লাহর নবী বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত মোহাম্মদ (সা:) কে মদিনার কাফেরগন আশ্রয় দিয়ে ছিলেন। আর আমরা কি করছি। মুসলমান ছাড়াও কোন মানুষ যদি বিপদে আপদে পড়ে থাকে সাহায্য করা হল ঈমানী দায়িত্ব। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ কালিন সময় ভারত আমাদের কে সাহায্য করে ছিল। আমাদের দেশের অনেক লোককে আশ্রয় দিয়েছিল। বর্তমানে সিরিয়ার গৃহ যুদ্ধের কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইউরোপে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে সিরিয়ার প্রায় সকল মানুষই মুসলমান। উনারা তো কাউকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন না।পবিত্র কোরাআনে আল্লাহ পাক বলেন “আমি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য প্রসস্ত করে রেখিছি” আল্লাহ মানবগোষ্ঠীর জন্য সমস্ত পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী করে দিয়েছেন। তার মানে আমরা সকল স্থানে যেতে পারি বা বসবাস করতে পারি। তবে হ্যাঁ আমরা শৃংখলার জন্য ভুখন্ড বা রাষ্ট্রীয় সীমানা মেনে চলা অবশ্যকরণীয়। আজ পৃথিবীতে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্তান লক্ষ করা যাচ্ছে। আমরা যদি লক্ষ করি দেখতে পাই ইংলেন্ডে জাতীয়তাবাদি উগ্র চেতনার কঞ্জারবেটিব দল ক্ষমতায়,সদ্য নির্বাচিত আমেরিকায় ট্রাম্প নির্বাচনে তার বক্তবে কি বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন অভিবাসি নিয়ে,তিনি মুসলমানদের কে চরম আঘাত মুলক কথা বলেছিলেন ,তিনি সাম্প্রদায়িক মুলক বক্তব্য দেয়ার পর ও কিভাবে নির্বাচিত হলেন কেন তাকে নির্বিচিত করা হল আসলে পৃথিবী ব্যাপী মুসলমান বিদ্ধেষ আজ চেতনায় যেন পরিনত হচ্ছে। আমরা তার আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংস দেখেছি। বাবরি মসজিদ যখন ধ্বংস করা হয় তখন নেতা ছিলেন আজকের প্রধান মন্ত্রি বাবু নরেন্দ্র মুদী। বাবরি মসজিদ ধ্বংস হল। মুদী দা কে গুজরাটের জনগোষ্ঠী ভোট দিয়ে পুরুষকৃত করল। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলেন তারা চিন্তা করল যে মসজিদ ভাঙ্গতে পারে সে মসজিদ বানানেওয়ালাদের সায়েস্তা করতে পারবে । গুজরাট দাংঙ্গা হল মুসলমানদের বাড়িঘর ধ্বংস করা হল। বড় বড় ব্যবসায়ীদের ব্যবসা লুট করা হল। মেয়েদের ইজ্জত লুট হল। বাড়ি ঘর জালিয়ে দেয়া হল । আবারও তিনি পুরুষকৃত হলেন ভারতের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। এ ছাড়া মুক্তচিন্তার নামে প্রতিনিয়তই ইসলাম ধর্ম কে আমাদের নবী কে কুটুক্তি করে চলেছে। আমাদের মাথা গরম করলে চলবে না। আমাদের কে ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। কাউকে হত্যা করা ইসলামে জায়েজ নাই রাষ্ট্রকে আইনগত ভাবে তার কাজ করতে হবে। আমি বুজিনা মুক্ত চিন্তা ইসলাম ধর্ম,হিন্দু ধর্ম কে আগাত দেয়া নাকি? মুক্ত চিন্তার নামে অন্যের চিন্তায় আঘাত করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? আপনি নাস্তিক হবেন, হয়ে যান।

কে আপনাকে বাধা দিচ্ছে ,ইসলাম ধর্ম কাউকে আঘাত করে না আঘাত দেয়াকে সমর্থন ও করে না। তবে প্রয়োজনে প্রতিরোধ করে। আজ আমরা যদি তাকাই বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়। দেখা যাবে মুসলমানের বোরকা নিয়ে, হিজাব নিয়ে বাড়াবারি হচ্ছে। ভারতে গরু খেলে মুসলমানদেরকে পিঠিয়ে মারা হচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে মুসলমানরাতো কারো অধিকারে বাঁধা দেয় নাই। তা হলে সাম্প্রদায়িক কারা ? আমাদের দেশের এক কবি বললেন আজানের ধ্বনি শুনলে তার কানে জালাপুড়া করে। এই বক্তব্য কি সাম্প্রদায়িক নয় ? বিভিন্ন জায়গায় কোরাআন পুড়া হচ্ছে। আল্লাহর কাল্পনিক মূর্তি বানিয়ে আগুন দিয়ে মুসলমান কে উত্তেজিত করা হয় কেন? গুটা বিশ্ব জুড়ে যেন মুসলমানদের কে আজ শত্রু ভাবা হচ্ছে কিন্তু কেন? তার কারন যত দিন যাচ্ছে মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে। ইসলাম নারীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ করেছে,ইসলাম জেনা, মদ, জুয়া, সুদ প্রতারণা ও মজুতদারি বন্ধোর কথা বলে। তাই কায়েমি স্বার্থবাদীরা ইসলাম পছন্দ করে না। তাই ইসলাম যে হেতু মুসলমান প্রচার করে তাদের কেই হত্যা করার মিশন নিয়ে উগ্র মানবগোষ্ঠী হত্যাযজ্ঞে নেমেছে। ইসলাম ধর্মে প্রতিবেশীর কথা বলা হয়েছে। আশেপাশের চল্লিশ ঘরের মধ্যে কেউ না খেয়ে মরে তাহলে ওই মুসলমানের ঈমান থাকবে না। ইসলাম সকল ধর্মের অবস্তান নিশ্চিত করে আমরা মদিনার সনদ দেখলেই বুজতে পারি। মদিনার সনদে রাসুল সা: সকল ধর্মের লোকদের জন্য সনদে উল্লোখ করেন। ইসলাম যুদ্ধ করে আসে নাই ইসলাম আল্লাহর একাত্ততা নিয়ে এসেছে। ইসলামের মূল শ্লোগান “এক আল্লাহর ইবাদত কর এক মাত্র ইলাহ হচ্ছেন তিনি যিনি রিজেক দেন। যিনি মৃত্যু দিবেন যিনি এ ভ্রমান্ড সৃষ্টি করেছেন। ইসলাম প্রচারের প্রাককালে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর পুত্র মক্কায় ছিলেন সকলে প্রিয় পাত্র। তিনি নবী হয়া বা ইসলাম প্রচারের পূর্বে আল আমিন মানে সত্যবাদী উপাধি লাভ করেন । তিনি মক্কার শান্তি শৃ্খংলার জন্য চারটি প্রধান গোত্রের লোক নিয়ে হিল ফুল ফজল কমিটি গঠন করেন। তখন মক্কা বা আরবের অবস্তা ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। সেই সময়কার লোকেরা কন্যা সন্তান হলে জীবন্ত কবর দিত। এক পুরুষের একাধীক স্ত্রী ছিল। গোত্র ভিত্তিক দাঙ্গা প্রতিবছরই লেগে থাকত। এক গোত্রের লোকেরা অন্য গোত্রের মালামাল লুট করত। জুয়া মদ সামাজিক অশ্লীল কাজ সুদ ছিল তাদের সমাজ ব্যবস্তার অংশ। সুদের টাকার কারনে নিজ স্ত্রী কে ও দাদন দার নিয়ে যেত। জুয়া খেলায় স্ত্রী কে দিয়ে দিত। মেলা নিয়ে গোত্রীয় হানাহানি কয়েক বছর চলত। জোরযার মুল্লুকতার নীতি ছিল সেই সমাজে। সেই জাহিলিয়াতের যুগে পুত পবিত্র এক টগবগে যুবক ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আসলেন এক আল্লাহ ছাড়া কাহারো এবাদত বন্দেগী করা যাবে না। প্রথমে পাগল তার পর যাদুকর কবি ইত্যাদি বলা শুরু হল। তার পর ঢং তামাসা আস্তে আস্তে নির্যাতন কত অত্যাচা। হত্যার পরিকল্পনা করে তার কারন হল ইসলাম ধর্ম কবুল করলে সুদ,জেনা,মদ,ইত্যাদি ছাড়তে হবে। কারন ইসলাম কোন অনৈতিক কর্মকান্ডের অনুমদন দেয় না। ইসলামের ইতিহাসে যতগুলি যুদ্ধ হয়েছে রাসুল (সা:) জামানায় সবক’টি যুদ্ধই ছিল আত্মরক্ষার জন্য। নবুয়ত প্রাপ্তির পর তিনি এমন সমাজনীতি কায়েম করে ছিলেন। যেই সমাজ ছিল সমতার, ন্যায়ের আর ইনসাফের। সেই সমাজে ধনী গরীব দূর্নীতি প্রতারণা জুয়া মদ সুদ ব্যাভিচার ছিল না। আজ মুসলমান বিধর্মীদের প্ররোচনায় আমরা আমাদের জায়গা থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। আমরা আর্দশহীন হয়ে আমাদের চারিত্রিক গুনাবলি হারিয়ে অন্যের উপর নির্ভরশীল। দুনিয়াতে দুটি শক্তি রয়েছে একটি বাতেল। অন্যটি হক। হকের সাথে বাতিলের সংঘর্ষ রয়েছে,থাকবে,ছিল। এজন্য আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন “ইন্নাল বাতিলা কানা জাহুকা” অথাৎ নিশ্চয় বাতিল চিরহীত মানে বাতিল,,নিশ্ব:প্রভ,বিতারিত। জাকারিয়া (আ:) কে ইসলামের দাওয়াতের কারনে উত্তপ্ত মরুভুমিতে অর্ধ দেহ মাটিতে পূতে করাত দিয়ে চিরে ফেলা হয়ে ছিল। ইব্রাহীম (আ:) কে অগ্নি কোন্ডে ফেলা হয়ে ছিল। আমাদের প্রিয় নবী (সা:) অনেক সাথী সাহাবী কে বুকে পাথর চাপা লোহার চিরুনি দিয়ে শরীর থেকে মাংস তুলে নেয়া হয়েছিল। অনেকের পরিবার সন্তান হত্যা কত নির্যাতন হয়েছে নবী করিম (সা:) নামাজরত অবস্তায় পশুর নাড়ীভূরি তিনির উপর দেওয়া হয়। তায়েফের ময়দানে পাথর মেরে রক্তাক্ত করা হয় ।সকলের একটিই দোষ ছিল তাঁরা এক আল্লাহর এবাদত করতেন।এক আল্লাহ কে সেজদাহ করতেন। এক আল্লাহ আনুগত্য মানলে তাহাদের কায়েমি সার্থ বিনষ্ট হবে তাই। এত কিছুর পরেও ইসলাম তার অবস্তান মর্যদা নিয়ে চলেছে তাই আশাহত হয়ার কারন নাই ইসলাম তার গতিপথ নিয়ে চলেছ চলবে। আমরা মুসলমান আমাদের চলার গাইডলাইন হল আল কুরাআন আল হাদিস। দেখি হাদিস এবং আল কোরাআন কি বলে ।
(১) এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই ।
(২)এক মুসলিম অথবা কোন লোক বিপদেআপদে পরলে তাকে সাহায্য কর। আমরা সাম্প্রদায়িক নয়। এখানে সকল জাতি কে বুজানো হয়েছে। কারন কোরাআন কেবল মুসলমানদের জন্য আসে নাই। কোরাআন বলে “হুদালিন নাছ” হুদাল্লিন নাছ মানে মানব জাতি অথাৎ সকল মানবজাতির জন্য আল কোরাআন ।
যাহারা কোরাআন চর্চা করেন বা কোরাআন কে প্রচারের কাজ করেন আপনারা কি মানবসভ্যতার নিকট,মানবজাতির নিকট পৌঁছাতে পেরেছেন। যে কোরাআন এসেছে শান্তির বাণী নিয়ে। কোরাআন অসাম্প্রদায়িক বিশ্ব মানবতার কল্যান নিয়ে।
আমরা দলাদলি ,দাড়াইয়া মিলাদ না বসে মিলাদ। কার কত মুরিদান হবে। কে সুন্নি কে ওহাবি। কে মাজাব মানে কে মাহাজাব মানে না। আর কত ফেতনা নিয়ে,আমার প্রশ্ন হল এখানে ফরজ কোনটি।যদি ফরজ না থাকে তাহলে এগুলি নিয়ে বিভেদ করে আমাদের সম্মিলিত শক্তি কে কেন বিনষ্টি করছেন ? তার জন্য আল্লাহর দরবারে কি জবাব দিবেন?
(৩) ইসলাম কাউকে আঘাত করে না । ইসলাম তার অনুগত লোকদের লোকদের কে শাসন করে তবে সকল মানুষকে সটিক রাস্তা দেখায় সহজ পথ দেখায়। তাই আমরা যারা মুসলমান আমাদের দায়িত্ব অনেক আমাদের চরিত্র আমাদের চলাফেরা কি ইসলামি গন্ডির মধ্যে আছে আমাদের নবী করিম (সা:) যে চরিত্র নিয়ে চলেছেন সাহাবায়ে কেরাম যে চরিত্র নিয়ে ইসলাম প্রচার করেছেন আমরা তার ধারে কাছে নাই। আমরা তাগুতি শক্তির নিকট হাত মিলিয়ে মডারেট মুসলমান হয়েছি। তাই অন্যরা আমাদের এত ক্ষতি করে এবং করতে পারে। আমাদের মুসলমান কে ভাই ভাই হয়ে চলতে হবে যে যার ধর্ম পালনকারী হউক তার সাথে ইসলামের সহ অবস্তান রয়েছে ইসলাম সকল মানুষ কে সম্মান করে।

 লেখক মতিন বকশ (রাজনৈতিক ও সমাজকর্মী)।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com