বালুর পাইপ স্থাপন নিয়ে বিরোধে কমলগঞ্জে হামলায় আ’লীগ নেতা আহত হামলাকারীর বাড়ি ঘর ভাংচুর-লুটপাট ॥ আটক-১
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ ধলাই নদী থেকে বালি উত্তোলন কাজে ধানি জমির উপর পাইপ স্থাপনে আপত্তি দেওয়া নিয়ে বিরোধে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে বালু শ্রমিক ও জমির মালিকের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে বালু মহালদার রহিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদ (৪৫) গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে জুনেল আহমদ এর শতাধিক সমর্থকরা পাল্টা হামলা চালিয়ে হামলাকারীদের বাড়ি ঘর ভাঙ্গচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় দুই নারী লাঞ্চিত হওয়া ছাড়াও নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার ও পাসপোর্ট লুট করে নেওয়া অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার ৬ জানুয়ারি সকাল দশটায় জমির মালিকের সাথে বালু শ্রমিকদের সংঘর্ষের সময় বালি মহালদার আহত হয়েছিলেন।
৬ জানুয়ারী শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় সরেজমিন গেলে গ্রামবাসীরা জানান, রহিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদারের লোকজন ধলাই নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ধর্মপুর গ্রামের মাসুক মিয়ার ধানি জমির উপর পাইপ স্থাপন করেছিল। তাতে মাসুক মিয়া আপত্তি জানালে সকাল ১০টায় বালু শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এ এসময় বালি মহালদার জুনেল আহমদ তরফদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মাসুক মিয়ার হাতের লোহার রডের আঘাতে গুরুতর আহত হন। আহত জুনেলকে প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সন্ত্রাসী হামলায় আওয়ামীলীগ নেতা জুনেল আহত হওয়ার খবরে শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটায় তার সমর্থক আকলিছ মিয়া, মহসিন আহমদ, রাহাত মিয়া, সোহান মিয়া, মিজান মিয়া ও রুমেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি ট্রাক, কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে শতাধিক সমর্থক এসে মাসুক মিয়া, মখলিছ মিয়া ও বারিক মিয়ার বাড়িতে ব্যাপক হামলা চালায়। হামলাকালে বসত ঘরের দুইটি টিভি চুরমার, দায়ের কূপে ঘরের চাল, দেয়াল ভাঙ্গচুর ও স্টিল আলমারী ভাঙ্গচুর করে। এ সময় মখলিছ মিয়ার স্ত্রী হালিমা আক্তার (৩০) ও বারিক মিয়ার স্ত্রী সায়রা বেগম (৪৫) অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা তাদেরকে লাঞ্চিত করেছে। এমনকি আলমারিতে থাকা দুই লক্ষাধিক টাকা, পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও তিনটি পাসপোর্ট লুটে নেয়। হামলা ও লুটপাটের পর আবার হামলাকারীরা আগের মত ট্রাক ও মোটরসাইকেলে করে নিরাপদে স্থান ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর থেকে আক্রান্ত পরিবারগুলিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে জুনেল আহমদ তরফদারের বিক্ষুদ্ধ সমর্থকরা পালিয়ে যাবার সময় মাসুক মিয়া নামে মূল হামলাকারী ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখানে চার সদস্যের পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছেন। মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মো: শাহীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষই আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। এখন মামলা দিলে থানা তা গ্রহন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হকও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানার পুলিশি বিষয়টির উপর কড়া নজরদারী করছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়ে জুনেল আহমদ তরফদারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। কয়েক দফা তার মুঠোফোনে (০১৭১১ ১৫৯৭০৫) চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। বাকি অভিযুক্ত হামলাকারী কাউকে পাওয় যায়নি।
মন্তব্য করুন