বাল্যবিয়ে মুক্ত উপজেলা ঘোষনার পর বিয়ের হিড়িক বড়লেখায় আবারও বাল্যবিয়ে কনে আটক : মূচলেখায় মুক্তি
আব্দুর রব॥ বড়লেখা উপজেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত উপজেলা ঘোষনার ১৫ দিনের মধ্যেই যেন বাল্যবিয়ের হিড়িক পড়েছে। দুইটি বাল্যবিয়ের অনুষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত কনের বাবাকে কারাদন্ড, মা, চাচা ও ইউপি মেম্বারকে আর্থিক দন্ড দেয়ার পর বাল্যবিয়ে থামানো যাচ্ছে না। শনিবার রাতে সীমান্তবর্তী শাহবাজপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে পুলিশ কনেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন রোববার দুপুরে মা-বাবা মূচলেখা দিয়ে থানা থেকে মেয়েকে ছাড়িয়ে নেন। বর স্থানীয় আ’লীগ নেতার ভাগ্নে হওয়ায় পুলিশ তাকে আটক করেনি। কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও নিকাহ রেজিষ্ট্রারের কারনে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন।
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ও কুমারশাইল গ্রামের বাবুল হোসেন ও হেনা বেগমের মেয়ে নিলুফার ইয়াসমিন রুবির (১৫) সাথে শনিবার রাতে একই গ্রামের কুটুচান্দের ছেলে হোসেন আহমদের বিয়ের আয়োজন চলছিল। মিডিয়াকর্মীর মাধ্যমে খবর পেয়ে থানা পুলিশ কনেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে বাল্যবিয়ের বর স্থানীয় ইউনিয়ন আ’লীগের শীর্ষ এক নেতার ভাগ্নে হওয়ায় নানামূখী তদবিরে পুলিশ বরকে আটক করেনি।
২৮ আগষ্ট রোববার দুপুরে কনের বাবা-মা মূচলেখা দিয়ে মেয়েকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেন। ২৬ আগস্ট মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেয়ার অপরাধে বড়লেখা সদর ইউনিয়নের আদিত্যের মহাল (বিছরাবাজার) এলাকার আবুল কালামকে ৭ দিনের কারাদন্ড, মা মিনারা আক্তার ও চাচা আব্দুস ছালামকে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। ২৪ আগস্ট স্থানীয় সচেতন যুবকদের সহযোগিতায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পকুয়া গ্রামে নিশ্চিত একটি বাল্যবিয়ে প- করে প্রশাসন। ইউএনওসহ প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে বরপক্ষ কনের বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেও কনের মাকে ১ হাজার টাকা ও স্থানীয় মেম্বার সিরাজ উদ্দিনকে ২০০ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। এরপরও বাল্যবিয়ে যেন থামছে না।
বড়লেখা থানার সেকেন্ড অফিসার আনোয়ার হোসেন বাল্যবিয়ের অপরাধে কনেকে আটক ও পরে বাবা-মায়ের মূচলেখায় ছেড়ে দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।
মন্তব্য করুন