বৃষ্টলে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাসপোর্ট সার্জারি অনুষ্ঠিত: পার্সপোর্ট আবেদন ভেরিফিকেশন এর নামে বাংলাদেশে পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবী
খায়রুল আলম লিংকন॥ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কনস্যুলার সার্ভিস জনগনের দোরগোরায় পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয়ে বৃষ্টল, বাথ ও সাঊথ ওয়েষ্ট এলাকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিদেশী নাগরিকগণকে কন্স্যুলার সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন বৃষ্টল, বাথ এবং ওয়েস্ট এর উদৌগে রবিবার বৃষ্টল বাংলাদেশ সেন্টার এ পার্সপ্র্টো সার্জারি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর দেওয়ান মাহমুদ ও হাইকমিশন এর এটাচি কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আহমেদ এর নেতৃত্বে দিনব্যাপী কনস্যুলার সেবা প্রদানে সহায়তা করেন লন্ডন হাইকমিশনের অন্যান্য কর্ম কর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ।
নিউপোর্ট, টনটন,ম্যানচেষ্টার,বৃষ্টল,বাথ,ব্রিজ ওয়াটার সহ বিভিন্ন শহরের শতাধিক নারী পুরুষ এ কনস্যুলার সার্ভিসে সেবা গ্রহন করেন।
বৃষ্টলের স্থানীয় বাংলাদেশ সেন্টারে সকাল ১০ ঘটিকা থেকে শুরু হয়ে এ পার্সপোর্ট সার্জারী চলে দুপুর ৪:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ হাঊজ পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে কনস্যুলার সেবা প্রদানে আগতদের সহায়তা করেন ট্রাষ্টি নজরুল ইসলাম মুকুল, সভাপতি ফকরুল আলী, সাধারন সম্পাদক মোর্শেদ আহমদ মতচ্ছির, সাবেক সাধারন সম্পাদক কামরুল ইসলাম, প্রেস এন্ড মিডিয়া সেক্রেটারী খায়রুল আলম লিংকন,ট্রেজারার জাবেদ রহমান ,সহ-সভাপতি চমক আলী, সহ-সাধারন সম্পাদক মতচ্চিন আলী , স্পোর্টস সেক্রেটারী সৈয়দ আখলাকুল আম্বিয়া রাবেল, সিদ্দিক আহমদ, আব্দুল ওয়াহিদ, মোবারক আলী, আব্দুস সালাম চৌধুরী,শাহনাজ বেগম প্রমুখ।
কমিউনিটির বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনফরুল ইসলাম,মৌলানা সৈয়দ মুয়াইদুল ইসলাম, মশাহিদ আহমদ, মৌলানা ইকরাম উদ্দীন, মতিউর রহমান লিটন, বেদার আহমদ চৌধুরী, মৌলানা আজিজুর রহমান প্রমুখ।
দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সার্জারীতে পাসপোর্ট রিনিউ, মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট আবেদন,পাওয়ার অব এর্টনী, ইনসট্যান্ট নো-ভিসা এবং বার্থ সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য সেবা প্রদান করা হয়।মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট আবেদন প্রসেস দ্রুত করার জন্য হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ২টি পোর্টেবল পাসপোর্ট ষ্টেশন এর মাধ্যমে আগতদের ছবি সহ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়।
সার্জারীতে আগত সেবা গ্রহীতা মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এর পার্সপোর্ট বিভাগের সেবা সমন্ধে জনমনে একটি নেতিবাচক ধারনা রয়েছে। জনগনের সেবার বদলে তারা সর্বদা সেবাগ্রহীতাদের হয়রানিতে ব্যতিব্যাস্ত থাকে, পক্ষান্তরে লন্ডন হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের বৃষ্টলে আজকের এই বন্ধুত্ব পুর্ন সেবা সত্যিই আমাদের অভিভুত করেছে। প্রত্যেক কর্মকর্তা কর্মচারীর সেবামুলক ব্যবহার এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাদের সমস্যা সমাধান করতে হাইকমিশনের সবাই ছিলেন অত্যান্ত আন্তরিক যা সত্যিই অতুলনীয় । আমরা আশাকরবো হাইকমিশনের এই সেবার মতো সেবা লন্ডনস্থ হাইকমিশন সহ দেশের সকল সরকারী অফিস আদালতে চালু হবে। সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের মনে রাখতে হবে জনগনের ট্যাক্স থেকে তাদের বেতন ভাতা দেওয়া হয়, তাই জনগনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করে দেশের উন্নয়নে তাদের অবদান রাখতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সেবা গ্রহীতা বলেন আমরা যখন নতুন পাসর্পোট এর জন্য আবেদন করি তখন পার্সপোর্ট ভেরিফিকেশন এর নামে বাংলাদেশে পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয়, এসব পুলিশ হয়রানির ভয়ে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী ও তাদের সন্তানরা বাংলাদেশী পার্সপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন, এতে দেশ হারাচ্ছে বড় রকমের রেমিটেন্স এ প্রবাসীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পার্সপোর্ট ভেরিফিকেশন পদ্ধতি সহজ করা সহ ভেরিফিকেশন এর নামে বাংলাদেশে পুলিশি হয়রানি বন্ধের জন্য হাইকমিশনের মাধ্যমে সরকারের কাছে সেবা গ্রহীতারা আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর দেওয়ান মাহমুদ জানান জনগনের দোরগোড়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সেবা পৌছে দেওয়ার জন্য আমাদের সর্বাত্তক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে,এরই অংশ হিসেবে বৃষ্টলের এই ধারাবাহিক কনস্যুলার সার্ভিস।আমরা সর্বাতœক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে কনস্যুলার সেবা সহজ ভাবে সকলের কাছে পৌঁছানো যায় ও একজন সেবা গ্রহনকারীও যেন হয়রানির শিকার না হন।
হাইকমিশনের এটাচি কাউন্সিলর মোহাম্মদ মুসাদ্দেক আহমেদ জানান, এম আর পি এর মেয়াদ ৫ বছরের পরিবর্তে ১০ বছর মেয়াদি করার জন্য পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে. আপনারা জানেন প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট দেশেই ভোটার করার জন্য একটি আলাদা বিধিমালা প্রণয়ন করেছে নির্বাচন কমিশন । এর মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটার হতে আর কোনো আইনি বাঁধা থাকলো না। আগামী নভেম্বর অথবা ডিসেম্বর মাসে মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী লন্ডন হাইকমিশনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের ন্যাশনাল আই ডি প্রদান কার্যক্রম এর উদ্ধোধন করবেন। পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ দুতাবাস এর মাধ্যমে সমগ্র বৃটেনে বসবাসরত বাংলাদেশীদেরকে ন্যাশনাল আই ডি প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এর নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দকে বৃষ্টলে কনস্যুলার সার্ভিস প্রদান করার জন্য বাংলাদেশ হাউজের পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
মন্তব্য করুন