বেহুদা বকোয়াসে ওস্তাদ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাঃ আম-ছালা দুই-ই গেল- ধান ও নাই নৌকাও নাইঃ এখন কি হবে হুদা ভাই : ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা- বাংলাদেশের সম-কালীন সমাজ রাজনীতি ও রাজনীতির ইতিহাসে এক পরিচিত নাম। বহুল আলোচিত। তর্কিত। বিতর্কিত। দোহার নবাবগঞ্জ ঢাকার অভিজাত সম্ভ্রান্ত ধন্যাঢ্য ভূ-স্বামী পরিবারের কৃতি সন্তান। উচ্চ শিক্ষিত-ও। দেশের খ্যাতনামা শীর্ষ স্থানীয় আইনজীবী। সহ ধর্মিনী মিসেস সিগমা হুদাও দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা আইনজীবী। মানবাধিকার আন্দোলনের অন্যতম বলিষ্ট সংগঠক। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা- মানবাধিকার সংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থাটি শুরুতে ছিল হুদা দম্পতির চেম্বার কেন্দ্রিক- পরবর্তী কালে যা দেশব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করে। বেগম সিগমা হুদা একজন গুনবতী রমনী। বিনয়ী। ভ্রাতৃবৎসল।
রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা একজন সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি। শহীদ রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান বীর উত্তর এর আস্থা ও বিশ^াস ভাজন ছিলেন ব্যারিষ্টার নজমুল হুদা। অল্প বয়সে বি.এন.পির নীতি নির্ধারনী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ হন। মন্ত্রী সভায় ও স্থান পান ভাগ্যবান ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। একাশি সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বন্দর নগরী চট্টগ্রাম সফরকালে সফর সঙ্গী ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সরকারের মাননীয় মন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। ত্রিশে মে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় একদল বিপথগামী সেনাসদস্যদের হাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নির্মম ভাবে নিহত হন বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক বহুদলীয় গনতন্ত্রের প্রবর্তক মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান। সফর সঙ্গী ব্যারিষ্টার নজমুল হুদার গায়ে আচড় লাগেনি-রহস্যজনকভাবে তিনি ঐরাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে রাত্রি যাপন করেন নি- অন্যত্র ছিলেন। একান্নব্বই সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত সরকারে তথ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পান ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। দুই হাজার এক সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হলে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। দলে স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ ছিল তার চীর স্থায়ী। মন্ত্রীসভায়ও তার অবস্থান ছিল শক্ত ও জোরালো।
মাঝারি উচ্চতার, ডানদিকে সিতে কাটা মোটা সোটা নাদুস নুদুস চেহারার গোঁফ হীন ক্লিন শেভের সুবেশী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা সুরেলা কন্ঠের অধিকারি-তিনি একজন সৌখিন সঙ্গীত শিল্পীও। সম্ভ্রান্ত বংশীয় সুরেলা কন্ঠের অধিকারি ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা বেহুদা আবুল তাবুল বলাবলি ও বকোয়াসে ওস্তাদ। বেহুদা কথাবার্তায় ব্যারিষ্টার হুদা বাংলাদেশে কু-খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর কথাবার্তা ও সিদ্ধান্তে একটি সিদ্ধান্তহীনতা ও অস্থিরতা লক্ষনীয়।
একান্নব্বই-ছিয়ান্নব্বই-বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বি.এন.পি র সরকারামলে ‘হেভরন হত্যাকান্ড’ ও মুসলিম নির্য্যাতনে তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামীলীগের মন্তব্যের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করেন ব্যারিষ্টার হুদা। -“আওয়ামীলীগ হঠাৎ মুসলমান হয়ে গেছে-” জাতীয় হালকা মন্তব্য করে দারুন সমালোচিত হন তিনি। পবিত্র ধর্ম ইসলাম এবং মুসলমান প্রসঙ্গেঁ মাননীয় মন্ত্রী নাজমুল হুদার এই আক্রমনাত্বক আপত্তিকর বক্তব্যে সরকারের ভাবমূর্তি ও ইমেজ প্রশ্ন বিদ্ধ হয়। সরকার ও বিরোধী দলের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। ওয়ান ইলেভেনের ডক্টর ফখরুদ্দীন আহমদ এর নেতৃত্বাধীন সেনা সমর্থিত বিগত তত্বাবধায়ক সরকারামলে ব্যারিষ্টার নাজমুলের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়। একটি আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন, দ্বিতীয়টি চাঁদা বাজি এবং তৃতীয়টি আখতার হোসেন লিমিটেড নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান থেকে দুই কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগে। প্রথম মামলায় ২০০৭ সালের ২৭শে আগষ্ট বিচারিক আদালত নাজমুল হুদাকে সাত বছর এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদন্ড দেন। রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট এ আপীল করলে মহামান্য হাইকোর্ট ২০১১ সালের ২০শে মার্চ উভয়কেই বেকসুর খালাশ প্রদান করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপীল করলে আপীল বিভাগ ২০১৪ সালের ১লা ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পূনঃ বিচারের আদেশ দেন। পূনঃ পূর্ণ শুনানী শেষে মহামান্য হাইকোর্ট গত বছর সতেরো সালের আটই নবেম্বর ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদাকে চার বছরের কারাদন্ড দেন। ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা বিচারিক আদালতে আত্ব সমর্পন না করে রায়ের বিরুদ্ধে রীট করেন। ১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর রীটটি খারিজ হলে তিনি আত্ব সমর্পন না করে আপীল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। ১৮ সালের ৭ই জানুয়ারী আপীল বিভাগ এ আবেদন খারিজ করে দেন। ফলতঃ এই মামলায় ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদাকে নি¤œ আদালতে হাজির হওয়া বাধ্যতামূলক। রায় ঘোষনার প্রায় এক বছর পরও পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত না হওয়াতে ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা এই আইনী সুবিধা প্রাপ্ত হয়ে বেচাইন ও পেরেশান হয়ে বেহুদা কথা বলছেন। ডিগবাজি খাওয়ার চেষ্টা করছেন।
ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদার মূল নির্বাচনী এলাকা দোহার-নবাবগঞ্জ-ঢাকা-এক। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ঘনিষ্ট সহচর হিসাবে বি.এন.পির প্রতিষ্টাকালীন প্রভাবশালী নেতা ও ঢাকা জেলা বি.এন.পি র প্রধান এবং দল মনোনীত প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন ও জয় লাভ করেছেন। দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প উদ্যোক্তা বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা পরস্পর নিকটাত্বীয়-চাচা-ভাতিঝা- সম্পর্কীয়। ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা ইতিপূর্বে তার রমরমা দিন গুলিতে চাচা সালমান রহমানকে কোন দিন ছাড় দেন নি। এখন যখন তার দিনকাল খারাপ যাচ্ছে, দল নাই মার্কা নাই, মামলা মোকদ্দমায় কাবু বেকাবু এখন চাচা সালমান এফ রহমানকে দোহারের নিজ আসন ছেড়ে দিয়ে ঢাকা ১৭ আসনে নির্বাচন করার পায়তারা করছেন। ইতিমধ্যে তিনি দলছুট ও মার্কা হারা হয়েছেন। স্ববিরোধী আবুল তাবুল ও বেহুদা বকোয়াছ এর জন্য দল থেকে বহিস্কৃত হন বি.এন.পি র প্রতিষ্টাকালীন প্রভাবশালী নেতা ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। বহিস্কারাদেশ না মেনে নিজেই মূল বি.এন.পি- কোন সময় তৃণমূল বিএনপি পরিচয়ে চলতে থাকেন ব্যারিষ্টার হুদা। অবশেষে ২০১২ সালে তিনি নিজে বি.এন.পি থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট ফ্রন্ট বি.এন.এফ অতপরঃ বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট পার্টি, বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি- বি.এন.এফ গঠন করে হালে পানি পান নি-বি.এন.পি তে ভাঙ্গনও ধরাতে পারেন নি। সর্বশেষে ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা পশ্চিমবঙ্গেঁর মমতা ব্যানার্জির কায়দায় তৃনমূল বি.এন.পি গঠন করেছেন। মহামান্য হাইকোর্ট সম্প্রতি দলটিকে নিবন্ধন দিতে ইলেকশন কমিশন কে নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিপূর্বেই বাংলাদেশ ন্যাশনেল ফ্রন্ট বি.এন.এফ এর নেতা আবুল কালাম আজাদ তাঁকে বহিষ্কার করে দলটিকে কব্জা করেন।
সম্প্রতি একটি টিভি স্বাক্ষাতকারে প্রকাশ করেন তিনি নাকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেঁ আলোচনা ক্রমে ঢাকা এক আসন চাচা সালমান এফ রহমানকে ছেড়ে দিয়েছেন, কথামত ঢাকা ১৭ আসনে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামীলীগ অফিস থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করিয়েছেন, এখানে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেলে ঢাকা এক-এ-স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন।
পত্রিকান্তরে খবরে প্রকাশ ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা ঢাকা ১৭ তে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামীলীগ অফিস থেকে মনোনয়ন ফর্ম আনিয়েছেন। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমদ এবং দুদকের আইনজীবী এডভোকেট খুরশেদ আলম খান একটি জাতীয় পত্রিকায় এতদসংক্রান্ত বিষয়ে আইনী অভিমত প্রদান করেন যে সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা নির্বাচনে অংশ গ্রহনের অযোগ্য। জাতীয় দৈনিক যুগান্তর সম্প্রতি প্রথম পৃষ্টায় “ নির্বাচনে অংশগ্রহনের সুযোগ নেই নাজমুল হুদার” শিরোনামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল সবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহনকারি রাজনৈতিক দল সমূহের প্রার্থী মনোনয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি দল তার দলীয় ত্যাগী পরিক্ষিত উপযুক্ত প্রার্থীকে সার্ভে, মাঠ জরিপ, যাছাই, বাছাই সাক্ষাত কার নিয়ে মনোয়ন দেয় হয়। দলীয় মনোনয়ন ফুটবল ক্লাবের দলবদলের মত নয়। দলীয় মনোনয়ন আবাহনী-মোহামেডান-রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার প্লেয়ার ট্রান্সফার এর মত নয় এখানে ন্যায় নীতি- আদর্শিক তাত্বিক ব্যাপার জড়িত। ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা বি.এন.পির প্রতিষ্টাকালীন প্রভাবশালী নেতা দল থেকে বকোয়াছ এর জন্য বহিস্কৃত। তিনি আওয়ামীলীগের প্রাথমিক সদস্য ও নহেন। তারপক্ষে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন ফর্ম কেনা, তাকে মনোনয়ন দেয়ার চিন্তা করা অরাজনৈতিক ও অনৈতিক। ঠিক তেমনি ওয়ান ইলেভেনের অন্যতম কুশিলব সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেঃ জেঃ মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী প্রথম মনোনয়ন ফর্ম কিনলেন আওয়ামীলীগের, যোগ দিলেন জাতীয় পার্টিতে, মনোনয়ন ও দলীয় পদ এক সঙ্গেঁই পেলেন। দলীয় পদ পদবী যেনো বাজারি মাল ইচ্ছা করলেই কিনতে পাওয়া যায়। জাতীয় সংসদের সদস্য পদে একজন অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা যথেষ্ট উপযুক্ত ও বিজ্ঞ ব্যাক্তি কিন্তু তাঁর মনোনয়ন পদ প্রাপ্তি পদ্ধতি মোতাবেক গনতান্ত্রিক নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় হয়নি- যা পরিচ্ছন্ন রাজনীতির পরিপন্থী।
রাজনীতিবিদ ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদার বিচিত্র ও বর্নাঢ্য কর্মজীবন এবং তাঁর দূর্বোদ্ধ জীবন দর্শনের উপর আলোকপাত-সমালোচনা- হুদানামা বয়ান করার ক্ষমতা যোগ্যতা আমাদের নাই যদিও তাঁকে দূরে থেকে কাছে থেকে দেখার কিঞ্চিত অভিজ্ঞতা আছে। একান্নব্বই-ছিয়ান্নব্বই সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বি.এন.পি-র সরকারামলে মাননীয় তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন বি.এন.পি-র কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। ঐ সময় শ্রীমঙ্গঁলের চিঠির সম্পাদক বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক ¯েœহভাজন এম.বি.এ বেলাল শ্রীমঙ্গল শহরে একটি সেমিনারনুষ্টানের আয়োজন করেন, অনুষ্টানের প্রধান অতিথি মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী ও আইনজীবী বেগম সিগমা হুদা। আমি তখন জেলা বারের সেক্রেটারি এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি কিংবা সদ্য প্রাক্তন সভাপতি। রম্য ও রাজনীতি বিষয়ক সাপ্তাহিক মৌলভীবাজার দর্পন এর প্রতিষ্টাতা ও প্রধান সম্পাদক। ষাটের দশক থেকে সক্রিয়ভাবে লেখালেখি ও বলাবলিতে আছি। একাত্তোরেও সক্রিয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। এতদসংক্রান্ত কারন ও হেতুবাদে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের গন্যমান্য নেতৃস্থানীয় নাগরিকদের সাথে পরিচয়, সম্পর্ক ও সখ্যতা আছে। বর্তমানে পরলোকে এম.বি.এ বেলাল আমাকে আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে শ্রীমঙ্গঁল যেতে ও বক্তৃতা দিতে সবিনয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। আমি তাঁর আমন্ত্রণ গ্রহন করেছিলাম। আমাদের পরম শ্রদ্ধেও নেতা বি.এন.পি-র প্রতিষ্টাকালীন প্রভাবশালী নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ট ও বিশ^স্থ সহচর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের (বর্তমানে পরলোকে। অতপরঃ তিনি দেশের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর গুরু দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বিশ^ ব্যাংক এর সভাপতি হয়েছিলেন। মহান মালিক তাঁর বেহেশত নসীব করুন) নিজ জেলা নির্বাচনী এলাকায় দলের কোন কেন্দ্রীয় নেতা কিংবা তার কোন ক্যেবিনেট কলিগ আমাদের এলাকায় সফরে এলে সৌজন্য সাক্ষাত করা, স্বাগত- শুভেচ্ছা জানানো ও সালাম দেয়া আমাদের নৈতিক-রাজনৈতিক দায়িত্ব। মৌলভীবাজার সার্কিট হাউসে- জেলা ছাত্র দলের তৎকালীন সভাপতি (বর্ত্তমানে জেলা বি.এন.পি র বলিষ্ট ও বিশিষ্ট নেতা) ¯েœহ ভাজন আশিক মোশাররফ সহ ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদার সঙ্গেঁ সাক্ষাত করি। সালাম শুভেচ্ছা জানাই, সফরের সাফল্য কামনা করি, আমার রেওয়াজ মোতাবেক মৌলভীবাজার দর্পন সহ আমার কতেক গ্রন্থ উপহার দেই। আমার চেহারা ছুরত তাঁর মত খুব ছুরত না হওয়ার কারনে কাছাকাছি প্রথম দর্শনে আমাকে তাঁর পসন্দ হয়নি। দর্পনে এম.সাইফুর রহমান সাহেবের একাধিক আলোকচিত্র দৃষ্টে নাখোস হয়ে তথ্যমন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা হালকা রশিকতা করে বল্লেন পত্রিকার নাম মৌলভীবাজার দর্পন না হয়ে সাইফুর দর্পন- দিলেই পারতেন। আমি ঈষৎ বিরক্ত হয়ে বল্লাম এলাকাটি যেহেতু তার, তিনি এই এলাকার নেতা, উন্নয়ন কর্মকান্ড এককভাবে করছেন তিনিই এম. সাইফুর রহমান সাহেব বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের এক-একক নেতা কাজেই ছবি থাকবে তাঁরই, আমার কিংবা অন্য কারো নয়। আমি মাননীয় তথ্যমন্ত্রীকে সবিনয়ে বলেছিলাম বিনীত অনুরোধ জানিয়েছিলাম জাতীয়তাবাদীদের কন্ঠস্বর ও মুখপত্র দৈনিক দিনকালকে যেনো একটি মান সম্পন্ন অত্যাধুনিক পত্রিকা করা হয়, কারন দিন কালের পাঠক-ক্রেতা-নাই। পাঠক প্রিয়তাও নাই। ছাত্র নেতা আশিক মোশাররফ এবং উপস্থিত দলীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তাই দাবী জানালেন। বিজ্ঞ ব্যারিষ্টার এবং মাননীয় মন্ত্রী নাজমুল হুদা সাহেব তাঁর মুখাবয়বে প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখে কট মটিয়ে এমন ভাবে আমার দিকে তাকালেন যেনো ভাব খানা এই আমরা মফস্বলি গ্রামের ছেলে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার আমরা কি বুঝি। আমি সবিনয়ে বলেছিলাম গ্রামে বাস করলেও ষাটের দশক থেকে সাংবাদিকতার সঙ্গেঁ জড়িত সম্পৃক্ত আছি- সাংবাদিকতায়-সম্পাদনায়-প্রকাশনায়। আমি ও তাঁকে এমন ভাব দেখালাম যে এক্ষেত্রে তিনি আমার জুনিয়র-আমি তাঁর সিনিওর। এই মর্মে আমি ছোটখাটো একটি বৈঠকী ভাষনও দিলাম। অবস্থা বেগতিক দেখে ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা আর বেহুদা বকোয়াছে এগিয়ে গেলেন না, নিরুপায় হয়েই রনভঙ্গ দিলেন। শ্রীমঙ্গলে এম.বি.এ বেলাল আয়োজিত সেমিনারে মানবাধিকার, গনতন্ত্র ও আইনের শাসনে মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ন ভূমিকার উপর গুরুত্ব আরোপ করতঃ নাতি দীর্ঘ নয় একটি দীর্ঘ ভাষনই দিলাম আমি। কারন সেমিনারে প্রধান অতিথি ছাড়া মূল বক্তা ছিলাম আমি। আমার সারগর্ভ বিনয় ভাষন শুনে সম্মতি সূচক মাথা নাড়লেন ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা। তাঁর সহধর্মিনি গুনবতী রমনী বেগম সিগমা হুদা একজন বিনয়ী ও মিষ্টভাসী মহিলা, তিনি আমাকে তাকে ম্যাডাম সম্ভোধনে আপত্তি জানিয়ে আমাকে ভাই বানালেন, তাকে আপা ডাকতে বল্লেন। ঢাকায় গিয়ে তার সঙ্গেঁ দেখা করতে বল্লেন। তিনি তখন বি.টি.ভি তে মানবাধিকার বিষয়ক একটি অনুষ্টান চালান, আমাকে অনুষ্টানের আলোচক নির্ধারিত করলেন। বেগম সিগমা হুদার এই বদান্যতায় আমি আবেগ আপ্লুত হয়েছিলাম, ঢাকায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার কথা দিয়েছিলাম, যদিও আমি মফস্বল প্রেমিক-রাজধানী ঢাকার চাকচিক্য, গাড়ি-ঘোড়ার আধিক্য, লালনীল বাতি আমার ভালো লাগেনা। আমার প্রিয় মাধ্যম টেলিভিশনে আমার ভাষন দেয়া-কথা বলা হলনা, কারন আমি মানষিকভাবে প্রস্তুত হতে না হতেই বেপরোওয়া- লাগামহীন ও বেহুদা কথাবার্তার কারনে তথ্য মন্ত্রনালয় থেকে তিনি বাদ পড়েন- সম্ভবতঃ মন্ত্রী সভা থেকেও।
তিনি আবুল তাবুল বেহুদা কথাবার্তার কারনে বরাবরই বিতর্কিত। সমালোচিত। নিন্দিতও। সাম্প্রতিক কালে রাজনীতি ও সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত দূঃখ দূর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয় বটে। রাজনীতিবিদ নাজমুল হুদা বি.এন.পি র মত বড় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়েছেন। একাধিক মেয়াদে সাংসদ ও মন্ত্রী হয়েছেন। পেশাজীবী হিসাবে সস্ত্রীক দেশের খ্যাত নামা আইনজীবী, বিত্ত, বেসাত, নাম, ডাক, মান সম্মান পেয়েছেন। ক্ষমতা, প্রাপ্তির শীর্ষ বিন্দুতে অবস্থান না করলেও একটি সম্মান জনক অবস্থানে ছিলেন। জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় রাজনৈতিক ভাবে তার আর কি বা চাওয়ার আছে। আজীবন জাতীয়তাবাদী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা শেষ বয়সে আওয়ামীলীগের নৌকার মাঝি হবেন, কি প্রাপ্তি যোগের প্রত্যাশায় দেশ ও জাতি জানতে চায়Ī এখনত তার দল নাই, মার্কা নাই, তাই কি নৌকা ছাড়া তার উপায় নাই।Ī
গ্রাম বাংলায় একটি লোক প্রিয় লোক সঙ্গীঁত -ভাওয়াইয়া আছে “ফান্দে পড়িয়া- বগায় কান্দেরে-” কোন হুদা বিরোধী সমালোচক যদি এই সঙ্গীঁতটি গেয়ে উঠেন তখন কি বলবেন ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা Ī
আমি কারও বিপদে আপদে দূঃ সময়ে ইল্ফি করিনা, ‘ধরম’ দেখিনা, রং তামাশাও করিনা, এটা আমাদের পবিত্র ধর্মীয় বিধানও নয়, বরং আমি দোয়া দূরুদ করি, নফল নামাজ পড়ি, বদ দোয়া দেই না। ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা বড় ঘরের, উচু দরের, উচু স্থরের মানুষ। জ্ঞানী, গুনী, বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ জন। আমি তার শিক্ষা ও জ্ঞান প্রজ্ঞা ও পান্ডিত্য, মেধা ও মননের ধারে কাছে নেই, তাকে উদ্দেশ্য করে উপদেশ মূলক কিছু বলা আমার জন্য বেআদবি। বেগম সিগমা হুদাকে আপা ডাকলেও তাকে কোনদিন দুলাভাই ডাকিনি। শালা সূলভ -কিয়াইশ- রং তামাশাত দুরের ব্যাপার। তিনি নৌকায় স্থান পান নি। চাচাকে নিজ আসন দান করেও এখন “চাচা আপন প্রাণ বাঁচা” অবস্থা। বাংলা ভাষায় বাংলাদেশে একটি কথা প্রচলিত আছে “সাজের বেলা সব পাখি নীড়ে ফিরে যায়” সঙ্গীঁত শিল্পী নাজমুল হুদা এও ভেবে দেখতে পারেন।
বাংলাদেশের মনোনয়ন প্রত্যাশীগন রাজনীতিবিদ, দেশ ও সমাজ সেবক- আবাহনী মোহামেডান- রিয়াল মাদ্রিদ- বার্সিলোনা- ক্লাব মেম্বার-নেইমার-রোনালদো- মেসি-বেনজেমা-মদরিছ নহেন। এও আমাদের সবাইকে স্মরন রাখতে হবে।
[ষাটের দশকের সাংবাদিক। একাত্তোরের মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাই কোর্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। কলামিষ্ট]
মন্তব্য করুন