বড়লেখায় আশ্রয়ন প্রকল্পে অগ্নিকান্ড ১০ বসতঘর পুড়ে ছাই : আহত ৫ অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখার সদর ইউনিয়নের জফরপুর গ্রামে ভুমিহীনদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১০টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ২২ মে রোববার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক হাস-মুরগি, ৮টি ছাগল, ধান-চাল, টাকা ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ছুটোছুটিতে তোফায়েল আহমদ নামে ২ বছরের এক শিশুপুত্রসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। আহত শিশুকে বড়লেখা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় বড়লেখা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও এর আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকান্ডে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা দাবি করছেন।
এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭নং ঘর থেকে বিদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে দ্রুত আগুন অন্য ঘরে ছড়িয়ে পড়লে রহিম উদ্দিন, সফিক উদ্দিন, মিনারা বেগম, হোছনা বেগম, আছমা বেগম, হারিছ আলী, বিলকিছ বেগম, সালেহা বেগম, রেহানা বেগম ও আমির হোসেনের বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকান্ডের সূত্রপাতের সময় সবাই শবেবরাতের নামাজ আদায় করছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্থ ও এলাকাবাসীর দেয়া তথ্য মতে, অগ্নিকান্ডে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ছুটোছুটিতে শিশুসহ ৫ ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা রহিম উদ্দিন জানান, হঠাৎ আগুনের লেলিহান শিখা দেখে ডাক-চিৎকার শুরু করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। আগুনের তীব্রতা থাকায় নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয়রা ব্যর্থ হন। আগুনে আমার আসবাবপত্র, নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ সোমবার জানান, অগ্নিকান্ডে বসতঘরসহ সবকিছু হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো একেবারেই নি:স্ব হয়ে গেছে। স্থানীয়ভাবে তাদের বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সবাইকে আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ৫০ কেজি করে চাল ও ডাল দিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ঘর নিমার্ণে দ্রুত সাহায্যের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বড়লেখা ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিমাংশু রঞ্জন সিংহ সোমবার অগ্নিকান্ডের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর, ইউএনও এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন সোমবার দুপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে পরিষদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি কষ্টদায়ক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার হীন উদ্দেশ্যে এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় আখড়ার পক্ষ থেকে মলয় দে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনাকারীকে খুঁজে বের করতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।’
মন্তব্য করুন