বড়লেখায় এসআর অফিসে ১২ কাজীর অফিস অডিট করলেন জেলা রেজিষ্ট্রার
আবদুর রব॥ বড়লেখায় ১২ নিকাহ্ রেজিষ্ট্রারের (কাজী) অফিসে না গিয়েই বুধবার উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস অডিটকালে কাজীদেরও অফিস অডিট করলেন জেলা রেজিষ্ট্রার সফিকুর রহমান সরদার। উৎকোচ আদায়ে সিদ্ধহস্ত হওয়ায় তিনি অবসরে থাকা অফিস ক্লার্ককে সঙ্গে আনেন বলে অফিস পাড়ায় গুঞ্জন শুরু হয়।
জানা গেছে, বড়লেখার ১০ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় ১২ জন নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী রয়েছেন। ২০১৪ সালে আইন মন্ত্রণালয় প্রত্যেক কাজীকে ইউনিয়ন কমপ্লেক্স অথবা আশপাশ এলাকায় অফিস নেয়ার আদেশ জারি করেন। কিন্তু কোন কাজীই ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে অফিস নেননি। ৩-৪ জন কাজী ব্যতিত অন্যরা আইন লঙ্ঘন করে বাসা-বাড়িতে বসে নিকাহ রেজিষ্ট্রীর কাজ চালালেও কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। অনেকেই জাল কাগজে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করেন। বছরের পর বছর কাবিন নামা অসম্পুর্ণ রাখেন। গত ১৫ অক্টোবর বাল্যবিয়ের অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালত উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের কাজী রফিক উদ্দিনকে ৫ দিনের কারাদ- প্রদান করেন। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যবস্থা নিতেই সরেজমিনে প্রত্যেক কাজীর অফিস অডিট করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে জেলা রেজিষ্ট্রার উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে বসে কাজীদের অফিস অডিট করলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুত্র জানায় নানা অনিয়মে জড়িত থাকা সত্ত্বেও জেলা রেজিষ্ট্রার মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে একস্থানে বসে কাজী অফিস অডিট করেন। উৎকোচ আদায়ে সিদ্ধহস্ত হওয়ায় জেলা রেজিষ্ট্রার গত ১ জুলাই অবসর কালিন ছুটিতে থাকা অফিস ক্লার্ক নির্মল চন্দ্র ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে কাজী অফিস ও উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস অডিট করতে যান।
জেলা অফিসে ক্লার্ক থাকা স্বত্ত্বেও অবসরে থাকা ক্লার্ককে সঙ্গে আনার ব্যাপারে জেলা রেজিষ্ট্রার সফিকুর রহমান সরদার জানান, বর্তমানে কর্মরত ক্লার্ক শিক্ষানবিশ। উৎকোচ আদায়ে নয়, নির্মল চন্দ্র ঘোষ কাজে দক্ষ হওয়ায় তাকে সঙ্গে এনেছেন। শিক্ষানবিশ ক্লার্ককে সঙ্গে আনলে সে-ও কাজ শিখার সুযোগ পেতো, কেন আনেননি এমন প্রশ্নের তিনি সঠিক জাবাব দেননি। সরেজমিনে কাজীদের অফিসে না গিয়ে উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে বসে অডিট সম্পন্নের সত্যতাও তিনি স্বীকার করেন।
মন্তব্য করুন