বড়লেখায় এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণে অতিরিক্ত ফি আদায়

November 19, 2017,

আবদুর রব॥ বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণে অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। সিলেটে বন্যায় মারাত্মক ক্ষয়-ক্ষতির বিষয় বিবেচনা করে সিলেট শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত উন্নয়ন ফি ৫০ টাকা প্রত্যাহার করলেও অধিকাংশ স্কুল এ টাকা আদায় করেছে। এছাড়া শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা, ক্যারিয়ার শিক্ষাসহ কিছু বিষয়ের ফি না নেয়ার জন্য বোর্ডের নির্দেশনা থাকলেও এসব বিষয়ের ফিও আদায় করেছে কোন কোন স্কুল। ১ বিষয়ের পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা আদায় করেছে উপজেলার তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়। যদিও সারা বছরের বেতনসহ সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা আদায়ের কথা।
জানা গেছে, নির্বাচনী পরীক্ষার আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে বেতনসহ আন্যান্য ফিসাদি আদায় করে নেয়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কেবলমাত্র বোর্ড নির্ধারিত ফি আদায়ের নিয়ম রয়েছে। সে অনুযায়ী মানবিক ও ব্যবসাশিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫শ’ টাকা এবং বিজ্ঞানের পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬ শ’ টাকা আদায়ের কথা। বড়লেখায় ৩৫টি মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। কিন্তু কিছু স্কুল প্রধান মানবিকের শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১ হাজার ৮শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন। ফরম ফিলাপের সাথে বাধ্যতামুলক কোচিং ফি’র নামে আরো ৭শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। এতে গত ৭-৮ মাসের দীর্ঘ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ অভিভাবকরা আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত। অনেকে এখনও ফরম ফিলাপের টাকা জোগাড় করতে পারেননি।
তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নির্মল চন্দ্র নাথ উৎসব আমেজে এসএসসির ফরম ফিলাপের নামে গলাকাটা ফি আদায় করেছেন বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। এ স্কুলের নিয়মিত পরীক্ষার্থী ৩১জন এবং ১ থেকে ৪ বিষয়ের অনিয়মিত পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১৫ জন। ১ বিষয়ের পরীক্ষার্থী ছায়দুল আলমের বড়ভাই সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন তার ছোট ভাইয়ের ফরম ফিলাপ বাবত ২ হাজার ৫শ’ টাকা আদায় করা হয়। তিনি খোজ নিয়ে জেনেছেন ১ বিষয়ের শিক্ষার্থীর নিকট থেকে সর্বোচ্চ (১ বছরের বেতনসহ) দেড় হাজার টাকা নেয়া যেত। স্কুলের সভাপতিকে তিনি বিষয়টি অবগত করেও সুফল পাননি। প্রত্যেক অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে এভাবে গলাকাটা ফি আদায় করা হয়। তার উপর কোচিংয়ের নামে আরো টাকার বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়। এ স্কুলের পরীক্ষার্থী অভিভাবকরা জানান, নিয়মিত ও অনিয়মিত সকল পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নানা অজুহাতে ৩শ’ থেকে ১ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছেন। কোচিং হবে কি না তার ঠিক ঠিকানা না থাকলে নেয়া হয়েছে বিরাট অঙ্কের টাকা।
উপজেলার তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, শাহবাজপুর স্কুল এন্ড কলেজ, হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয়, ফকিরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক মাধ্যমিক স্কুল সিলেট শিক্ষাবোর্ডের প্রত্যাহারকৃত উন্নয়ন ফি ৫০ টাকা প্রত্যাহার করলেও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তা গোপন রেখে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে তা আদায় করেছেন।
তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নির্মল চন্দ্র নাথ জানান, বোর্ডের উন্নয়ন ফি প্রত্যাহারের বিষয় তিনি জানেন না। ফরম ফিলাপের নামে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে কোন কিছুই জানাতে রাজি হননি।
 উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাওলাদার আজিজুল ইসলাম জানান, এসএসসি পরীক্ষার বোর্ড নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ব্যাপারে খোজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয় বিবেচনা করে সিলেট শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন ফি বাবত ৫০ টাকা প্রত্যাহার করেছে। এ টাকা কোন স্কুল আদায় করলে তা অবশ্যই ফেরৎ দিতে হবে।   
 
 

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com