বড়লেখায় ছড়ার ওপর বসত রাড়ি নির্মাণ : রাস্তায় ভাঙ্গন
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখা পৌরশহরের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহমান ষাটমা ছড়ার তীর জবর দখল করে প্রভাবশালী মীর হোসেন পাকা বসত বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ছড়া সংকোচিত হওয়ায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ছড়ার স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সাম্প্রতিক বৃষ্ঠিপাত ও ঢলের পানির তোড়ে ছড়ার বিপরীত দিকের জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে ওই রাস্তায় চলাচলকারী পরিবারগুলো মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে অবিলম্বে ছড়ার ভুমির সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তার পার্শে গাইড ওয়াল নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বড়লেখা পৌরশহরের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল এবং সদর ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলের বৃষ্ঠি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম ছাটমা ছড়া (নদী)। এ ছড়া দিয়েই উজানের পানি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। কিন্তু ছড়ার তীরের সরকারী খাল শ্রেণীর ভুমি প্রভাবশালীরা জবর দখল করায় পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। পৌরশহরের উত্তর চৌমুহনী-জফরপুর রাস্তার উত্তর হাটবন্দ এলাকার চেরাগ আলীর দোকানের পিছনে ষাটমা ছড়ার তীরে প্রায় ১৫ বছর পূর্বে স্থানীয় বাচ্চু মিয়ার নিকট থেকে ২ শতাংশ ভুমি ক্রয় করেন জনৈক মীর হোসেন। প্রথমে ওই ২ শতাংশের ওপরই তিনি সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ছড়ার পাড় ভরাট করতে থাকেন। ২ শতাংশ ভুমি ক্রয় করলেও ছড়ার ভুমি দখল করে ইতিমধ্যে অন্তত ৪ শতাংশের ওপর তিনি পাকা বসত বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এতে ছড়ার পানি প্রবাহে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। গত সপ্তাহের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে ছড়া দখল করে নির্মিত ভবনের বিপরীত দিকের রাস্তায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভারি বৃষ্ঠিপাত হলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ রাস্তাটি ছাড়া গর্ভে বিলিন হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী নিজাম উদ্দিন, জাহাঙ্গির হোসেন, আলম হোসেন, আতাই মিয়া, শিবলু মিয়া প্রমূখ জানান, ষাটমা ছড়াটির প্রস্থ একসময় প্রায় ৮০ ফুট ছিল। প্রভাবশালীরা ভরাট করতে করতে এখন ৩০-৪০ ফুটে দাঁড়িয়েছে। মীর হোসেন নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি মাত্র ২ শতাংশ ভুমি ক্রয় করে ৪-৫ শতাংশ ভুমি জুড়ে পাকা ঘর নির্মাণ করেছে। এতে বর্ষায় পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় পশ্চিম পাড়ের জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। গত সপ্তাহের পাহাড়ি ঢলে রাস্তার ব্যাপক স্থান ভেঙ্গে ছড়া গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে আমরা ৫০ পরিবারের ৫ শতাধিক মানুষজনকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনতিবিলম্বে ছড়ার বেদখলকৃত ভুমি পুনরুদ্ধার ও রাস্তার পার্শে গার্ড ওয়াল নির্মাণ না করলে রাস্তা ও সরকারী ষাটমা ছড়া খালটি অস্থিত্ব সংকটে পড়ার আশংকা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মীর হোসেনের স্ত্রী নাজমুন নাহার জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে স্থানীয় বাচ্চু মিয়ার নিকট থেকে তার স্বামী ২ শতাংশ ভুমি ক্রয় করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ছড়ার কোন ভুমি তারা দখল করেননি।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. শরীফ উদ্দিন জানান, ষাটমা ছড়া দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণের বিষয়টি তার জানা নেই। খাল, নালা শ্রেণির ভুমিতে ঘর নির্মাণের সুযোগ নেই। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
মন্তব্য করুন