বড়লেখায় পুত্রবধূ ফাহিমার পরকীয়ার বলি হলেন লন্ডন প্রবাসী মায়ারুন নেছা
এম মছব্বির আলী॥ বড়লেখা উপজেলায় ঈদের দিন দিবাগত রাতে মায়ারুন নেছা (৬৫) নামের এক লন্ডন প্রবাসী বৃদ্ধার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের ছেলের বউ ফাহিমা বেগমকে আটক করেছিল পুলিশ। নিজের পরকীয়র ঘটনা ফাঁস হয়ে যাবার ভয়ে তিনি বৃদ্ধা শাশুড়ীকে খুন করিয়েছেন বলে আদালতে স্বীকার করেছেন।
১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান জামানের আদালতে ফাহিমা বেগম শ্বাশুড়িকে হত্যা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিয়ানীবাজার উপজেলার দাসউরা গ্রামের আব্দুস শহিদের মেয়ে ফাহিমার সাথে বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রামের ফাতির আলীর ছেলে মকসুদুল আলম সিপনের বিয়ে হয় প্রায় দু’বছর আগে। ফাহিমা সিপনের চতুর্থ স্ত্রী। অন্য স্ত্রীদের সাথে সিপনের তালাক হয়ে যায়। সিপনদের চান্দগ্রামের ওই বাড়িতে তার প্রথম পক্ষের দুই ছেলেও ফাহিমার সাথে বসবাস করতেন। ২৭ মার্চ দেশে ফিরেন ফাহিমার শাশুড়ী মায়ারুন নেছা।
বিয়ের কয়েকদিন পর স্বামীর এক বন্ধুর সাথে ফাহিমার পরিচয় হয়। স্বামীর ওই বন্ধু তাদের বাড়িতে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন। স্বামী সিপন লন্ডনে চলে গেলে ফাহিমার সাথে জনৈক বন্ধুর মুঠোফোনে যোগাযোগ ছিলো নিয়মিত। ঘটনার রাতে ওই ব্যক্তি ফাহিমাদের বাড়িতে আসেন। পুরো বিষয়টি টের পান শ্বাশুড়ি মায়ারুন নেছা। ফলে ওই ব্যক্তি নিজ শোবার ঘরে মায়ারুন নেছাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। যাতে করে পরকীয়ার বিষয়টি জানা-জানি না হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূ ফাহিমার স্বামীর অবর্তমানে এক ব্যক্তির সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। ঘটনার রাতে ওই ব্যক্তি ফাহিমাদের বাড়িতে আসলে শ্বাশুড়ি মায়ারুন নেছা বিষয়টি টের পেয়ে যান। এতে করে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাবার ভয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।
ব্রিটিশ নাগরিক বৃদ্ধা মায়ারুন নেছা হত্যায় জড়িত জনৈক ওই ব্যক্তির নাম আদালতে ফাহিমা বেগমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উত্থাপিত হয়। তবে তদন্তের স্বার্থে গণমাধ্যমের কাছে তা গোপন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ঈদের দিন দিবাগত রাতের যে কোন এক সময় নিজ বাড়ির শোবার ঘরে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করা হয় ব্রিটিশ নাগরিক মায়ারুন নেছাকে। পুলিশ পরদিন বুধবার সকালে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের পুত্রবধু ফাহিমা বেগম (৩০)কে আটক করে।
মন্তব্য করুন