বড়লেখায় বটি দা দিয়ে গৃহবধু স্মৃতির গলা কেটে আত্মহত্যার নাটক সাজায় পাষন্ডু স্বামী : আদালতে জবানবন্দি
আব্দুর রব॥ বড়লেখায় গৃহবধু স্মৃতি রাণী দাসকে (২৮) বঁটি দা দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছিল পাষন্ডু স্বামী বিধু ভূষণ দাস (৩৭)।
৩ দিনের রিমান্ডে থাকা ঘাতক স্বামী প্রথম দুইদিন মুখ খুলেনি। পুলিশও হত্যার ক্লু উদ্ধারে যখন অনেকটা নিরাশ ঠিক তখন রিমান্ডের শেষ দিন সে স্ত্রী হত্যার বর্ণনা দিতে থাকে। আদালতেও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে ঘাতক স্বামী বিধু ভূষণ দাস। সে উপজেলার তালিমপুর ইউপির হরিনবদি গ্রামের অশ্বিনি দাসের ছেলে। জবানবন্দি রেকর্ড করেন মৌলভীবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান চৌধুরী।
১৮ ফবপহসমযা সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই শরীফ উদ্দিন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে ৬ ডিসেম্বর দুপুরে গৃহবধু স্মৃতি রাণী দাসকে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যার পর বিছানায় লাশ রেখে কৌশলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে স্বামী বিধু ভূষণ দাস। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে সে প্রচারণা চালায়। ঘটনা সন্দেহ হওয়ায় এবং নিহতের ভাইয়ের মামলায় পরদিন পুলিশ স্বামী স্বামী বিধু ভূষণ দাস ও একই গ্রামের মৃত জ্যোতিন্দ্র দাসের ছেলে হরিবল দাসকে আটক করে। রহস্য উদঘাটনে পুলিশ আটককৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করে আদালতে। ১২ ডিসেম্বর আদালত আসামীদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জাবানবন্দিতে ঘাতক স্বামী বিধু ভূষণ দাস ঘটনার দিন সকালে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া ও পরবর্তীতে রান্না ঘর থেকে বঁটি দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা এবং হত্যা পরবর্তীতে গ্রেপ্তার পূর্ব পর্যন্ত ঘটনা তুলে ধরে। ঘটনার আগে একমাত্র শিশু কন্যাকে অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় বিধু। এক পর্যায়ে বিধু রান্না ঘর থেকে বঁটি দা এনে ঘরের মেঝেতে ফেলে গলায় পোচ দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে। পরে সে ঘরের পিছনের টিউবওয়েলে গোসল করে। কেউ কিছু বুঝার আগেই কাজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। পরে অন্যবাড়ির লোকজন স্মৃতির ঘরে এসে গলা কাটা দেখে বিধুকে ফোনে ঘটনাটি জানায় ও পুলিশে খবর দেয়। এ ঘটনার রাতে নিহতের ভাই অকিল কান্তি দাস বাদী হয়ে বোন জামাই বিধু ভুষণ ও হরিবল দাসকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই শরীফ উদ্দিন সোমবার ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে জানান, বিধুর সাথে স্মৃতির বিয়ের ৫ বছর হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ঘটনার দিন সকালে উভয়ের ঝগড়ার জের ধরে সে বঁটি দা দিয়ে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে। কেউ বুঝার আগেই কৌশলে সে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু বিষয়টি সন্দেহযুক্ত হওয়ায় স্বামীসহ ২ ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করে। নিহতের ভাইয়ের মামলায় তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমদিকে মুখ না খুললেও তৃতীয় দিন হত্যার আদ্যাপান্ত তুলে ধরে স্বামী বিধু ভূষণ দাস। পরে বিজ্ঞ আদালতেও হত্যার বর্ণনা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন